রাজনৈতিক দল মহিলা কর্মীরা দলীয় ঘটনায় ‘পশ’ আইনের সুবিধা পাবেন না, স্পষ্ট করল সুপ্রিম কোর্ট। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
কর্মস্থলে যৌন হেনস্থা প্রতিরোধ (পশ) আইন রাজনৈতিক দলগুলির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। সোমবার তা জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, রাজনৈতিক দলগুলি কোনও ‘কর্মস্থল’ নয়। রাজনৈতিক দলের সদস্যদেরও ‘কর্মচারী’ বলা যায় না। আদালত জানিয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলিকে ‘পশ’ আইনের আওতায় আনা হলে ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ খুলে যেতে পারে। বস্তুত, ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ বলতে বোঝায় যেটি থেকে অন্য অনেক অনুরূপ পরিস্থিতি তৈরি হয়।
রাজনৈতিক দলের মহিলা কর্মীদের কেন (দলীয় ঘটনায়) কর্মস্থলে যৌন হেনস্থা প্রতিরোধ আইনের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। মামলাকারী পক্ষের বক্তব্য ছিল, অন্য পেশায় যুক্ত মহিলাদের জন্য যে সুবিধা রয়েছে তা থেকে রাজনীতিতে জড়িত মহিলাদের বাদ দেওয়ার কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। এ অবস্থায় কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের যৌন হেনস্থা প্রতিরোধ আইনকে রাজনীতির আঙিনাতেও কার্যকর করার আবেদন জানান মামলাকারী।
তবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি গবই, বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্র এবং বিচারপতি এনভি আঞ্জারিয়ার বেঞ্চ ওই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই ধরনের বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করলে ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ খুলে যাবে। তিন বিচারপতির বেঞ্চের বক্তব্য, “আপনি কী ভাবে একটি রাজনৈতিক দলকে কর্মক্ষেত্র বলতে পারেন? সেখানে কি কোনও কর্মসংস্থান হচ্ছে? যখন কেউ একটি রাজনৈতিক দলে যোগ দেন, তখন তিনি চাকরি পান না। তাঁর কাজের জন্য কোনও বেতনের ব্যবস্থা নেই।”
এর আগে কেরল হাই কোর্টেও এ বিষয়ে মামলা হয়েছিল। ২০২২ সালের ওই রায়েও প্রায় একই কথা জানানো হয়েছিল। ওই সময় হাই কোর্ট বলেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির জন্য ‘পশ’ আইনের আওতায় অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি গঠনের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তখন হাই কোর্টও জানিয়েছিল, প্রচলিত ধারণায় রাজনৈতিক দলের সদস্যেরা কোনও ‘কর্মচারী’ নন। এ বার সুপ্রিম কোর্টও জানিয়ে দিল, রাজনৈতিক দলের সদস্যপদ পাওয়া মানেই সে ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা এবং কর্মচারীর সম্পর্ক তৈরি হয় না। ফলে কেরল হাই কোর্টের রায়ে কোনও হস্তক্ষেপ করেনি শীর্ষ আদালত।