উত্তরাখণ্ডেপাহাড়ের খাদে ভেঙে পড়া সেই হেলিকপ্টার। ছবি: সংগৃহীত।
উত্তরাখণ্ডে চপার দুর্ঘটনায় গত মে মাসে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছিল। প্রায় আড়াই মাস পর তার তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তদন্তকারী সংস্থা এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি)। তাতে বলা হয়েছে, রাস্তার ওভারহেড তারের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিল ওই কপ্টারের ব্লেড। তার ফলে পাইলট আর ভারসাম্য রাখতে পারেননি। রাস্তার ধারের খাদে গিয়ে পড়ে ওই কপ্টার। মৃত্যু হয় ছ’জনের। এক জন গুরুতর আহত হন। কিন্তু কী ভাবে এই পরিস্থিতি তৈরি হল? ওভারহেড তারে কেন জড়াল কপ্টারের ব্লেড? কেনই বা পাইলট রাস্তায় অবতরণের চেষ্টা করেছিলেন? প্রশ্ন উঠছে।
গত ৮ মে যমুনোত্রী মন্দিরের কাছে খরসালি হেলিপ্যাড থেকে সকাল ৮টা ১১ মিনিটে রওনা দিয়েছিল যাত্রিবাহী ওই হেলিকপ্টার। উত্তরকাশীর গঙ্গনানীর কাছে রাস্তার ধরে সেটি ভেঙে পড়ে। বেল ৪০৭ কপ্টারটি ২০০৮ সালে তৈরি। ১৭ বছরের পুরনো এই কপ্টার ব্যবহার করছিল এরোট্রান্স সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড। এএআইবি-র পাঁচ পৃষ্ঠার তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, কপ্টারে পাইলট ছাড়া ছ’জন যাত্রী ছিলেন। পাঁচ যাত্রী এবং পাইলটের মৃত্যু হয়েছে। যাত্রা শুরুর পর কপ্টারটি ২০ মিনিট আকাশে ছিল। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, গঙ্গনানী গ্রামের কাছে উত্তরকাশী-গঙ্গোত্রী রোডে (৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক) হেলিকপ্টারটিকে নামাতে চেয়েছিলেন পাইলট। কিন্তু অবতরণের চেষ্টার সময়ে কপ্টারের প্রধান ব্লেড ওভারহেড তারে জড়িয়ে যায়। তারগুলি রাস্তার সমান্তরালেই ছিল।
তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ায় রাস্তার ধারের কিছু ধাতব ব্যারিকেড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কপ্টারটি রাস্তায় নামতে পারেনি। পাহাড়ি খাদে গড়িয়ে যায়। অন্তত ২৫০ মিটার গভীরতায় একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে থামে ওই কপ্টার।’’ তবে গোটা ঘটনায় কোথাও আগুন লাগেনি। কপ্টারটি দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছিল।
আমেরিকার ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফ্টি বোর্ড এবং কানাডার ট্রান্সপোর্টেশন সেফ্টি বোর্ড এই সংক্রান্ত তদন্তের জন্য প্রতিনিধি এবং প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের পাঠিয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘তদন্তকারী দল বিদেশি প্রতিনিধিদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে। ঘটনার মূল কারণ জানতে আরও বিশদে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’’ উল্লেখ্য, হেলিপ্যাড ছেড়ে কী কারণে কপ্টারটিকে পাইলট রাস্তার উপর অবতরণের চেষ্টা করেছিলেন, এখনও তা স্পষ্ট নয়। তদন্ত রিপোর্টেও তার উল্লেখ নেই। আবহাওয়াজনিত কোনও সমস্যা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। গত ১২ জুন অহমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে লন্ডন গ্যাটউইকের উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর ২৪২ জনকে নিয়ে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান। সরকারি হিসাবে তাতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৬০ জন। সেই ঘটনার তদন্তও করছে এএআইবি।