(বাঁ দিকে) উদ্ধব ঠাকরে এবং রাজ ঠাকরে (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
দাদা উদ্ধব ঠাকরের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে মাতোশ্রীতে গেলেন ভাই রাজ ঠাকরে। এই মাতোশ্রীতেই থাকতেন অবিভক্ত শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরে। বর্তমানে তাঁর পুত্র উদ্ধব সপরিবারে ওই বাসভবনে থাকেন। কয়েক দশক ধরে মহারাষ্ট্রের রাজ্য রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই বাড়িতে মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএমএস)-র প্রধান তথা বাল ঠাকরের ভ্রাতুষ্পুত্র রাজের সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
রবিবার ছিল বালাসাহেবের পুত্র তথা শিবসেনা (ইউবিটি)-র প্রধান উদ্ধবের জন্মদিন। সেই উপলক্ষেই মাতোশ্রীতে যান রাজ। লাল গোলাপের স্তবক দিয়ে শুভেচ্ছা জানান দাদা উদ্ধবকে। মাতোশ্রীর ভিতরে প্রয়াত বালাসাহেবের ছবির সামনে হাসিমুখে দেখা যায় দুই ভাইকে। প্রসঙ্গত, ছ’বছর আগে পুত্র অমিতের বিয়েতে উদ্ধবকে আমন্ত্রণ করতে শেষ বার মাতোশ্রীতে এসেছিলেন রাজ। তার পর এই প্রথম বালাসাহেবের স্মৃতি বহনকারী ওই বাড়িতে পা রাখলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের গোড়ায় ১৮ বছরের রাজনৈতিক দূরত্ব ভুলে কাছাকাছি এসেছিলেন উদ্ধব এবং রাজ। গত ৫ জুলাই মুম্বইয়ের ওরলি পার্ক প্রেক্ষাগৃহে বিপুল জমায়েতের সামনে পারস্পরিক ঐক্যের বার্তা দেন দু’জনে। ইতিহাস বলছে, ২০০৬ সালে রাজ শিবসেনার সঙ্গ ছেড়ে নিজের দল মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) গড়েছিলেন। বালাসাহেব তখনও বেঁচে এবং রাজনীতিতে সক্রিয়। পিতৃব্যের নামে একটি অভিযোগ না করলেও প্রকাশ্যে উদ্ধবের ‘নেতৃত্বগুণ’ নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন তিনি। সুবক্তা রাজ রাজনীতিতে এসেছিলেন উদ্ধবের অনেক আগে। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতাও ছিল সুবিদিত। বস্তুত, দীর্ঘ দিন বালাসাহেবের ‘রাজনৈতিক সহযোগী’ ছিলেন রাজই। সে সময় উদ্ধব ব্যস্ত থাকতেন বন্যপ্রাণীদের ক্যামেরাবন্দি করার শখ নিয়ে। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে মরাঠি জনসমাজে ঢেউ তুললেও দীর্ঘমেয়াদি রাজনীতিতে সফল হতে পারেননি রাজ। অন্য দিকে, বালাসাহেবের মৃত্যুর পর শিবসেনার নেতৃত্বে উঠে আসেন উদ্ধব।
মরাঠা অস্মিতা হাতিয়ার করে দুই ভাইয়ের পুনর্মিলন মহারাষ্ট্রের রাজ্য রাজনীতিতে নতুন কোনও সমীকরণ গড়ে তুলবে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনাকল্পনা শুরু হয়েছে। তবে দুই সেনা একে অপরের সঙ্গে মিশে যাবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে দুই ভাইয়ের রাজনৈতিক পথ যে আপাতত আর পৃথক হবে না, তার ইঙ্গিত মিলেছে রবিবারও। জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে মাতোশ্রীর সামনে জড়ো হওয়া কর্মী-সমর্থকদের সামনে উদ্ধব বলেন, আমরা একসঙ্গে থাকব বলেই কাছাকাছি এসেছি। আমরা একসঙ্গে মুম্বই পুরনিগম এবং মহারাষ্ট্রের ক্ষমতা দখল করব।”