ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দিল্লি। ছবি: পিটিআই।
আগের সব রেকর্ড ভাঙার মুখে যমুনার জলস্তর! দিল্লি-এনসিআরে জারি করা হল বন্যার সতর্কতা। মঙ্গলবার সকালেই বিপদসীমা (২০৫.৩৩ মিটার) ছুঁয়ে ফেলেছিল যমুনার জল। রাতের মধ্যে তা ২০৮.৩৬ মিটারে পৌঁছে গিয়েছে। এ ভাবে জল বাড়তে থাকলে অচিরেই ২০২৩ সালের রেকর্ড (২০৮.৬৬ মিটার) ভেঙে ফেলবে যমুনা। এমনই আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
বুধবারও নয়াদিল্লিতে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে। মৌসম ভবনের বিজ্ঞানী আরকে জেনামানি জানিয়েছেন, শুধু দিল্লি-এনসিআরই নয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় হিমালয় সংলগ্ন রাজ্যগুলিতেও অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। বিশেষত উত্তরাখণ্ড এবং জম্মু-কাশ্মীরে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ভারী বৃষ্টি হবে পঞ্জাবেও।
গত দিন কয়েক ধরে ভারী বৃষ্টিতে ধুঁকছে দেশের রাজধানী। যমুনার জলে ইতিমধ্যেই দিল্লি ও সংলগ্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিপজ্জনক ভাবে বাড়ছে যমুনার জল। হরিয়ানায় হাতিকুণ্ড বাঁধ থেকে জল ছাড়ার জেরেই এই বিপত্তি। অপেক্ষাকৃত নিচু জায়গাগুলিতে বন্যার প্রবল আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঘুরছেন আতঙ্কিত বাসিন্দারা। মঙ্গলবার যমুনা বাজার এবং লোকালয়ে ঢুকে পড়ে বন্যার জল। বেশির ভাগ এলাকাতেই কোমরসমান জল। মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টিতে জনকপুরী এলাকার একটি রাস্তা ধসে গিয়েছে। নয়ডার সেক্টর ১২৮-এও বন্যার জলে ডুবেছে বহু কৃষিজমি ও ঘরবাড়ি। সোনিপতে টানা বৃষ্টির জেরে ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ ডুবে গিয়েছে। বুধবার বৃষ্টির সম্ভাবনা আগের চেয়ে খানিক কমলেও পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে পুরনো রেলওয়ে ব্রিজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সর্বতোভাবে তৈরি রয়েছে প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত আশ্বাস দিয়েছেন, যমুনা সংলগ্ন এলাকাগুলি প্লাবিত হলেও শহরে এই পরিস্থিতির আঁচ পড়বে না।
হিমাচল ও জম্মু-কাশ্মীরেও প্রবল বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন। দুই রাজ্যেই একের পর এক মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়পা বান ও ধস দেখা দিচ্ছে। জায়গায় জায়গায় রাস্তা বন্ধ। পরিস্থিতি খুব খারাপ হরিয়ানা ও পঞ্জাবেও। গুরুগ্রামে ভারী বৃষ্টিতে বহু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ভয়াবহ বন্যায় ভাসছে পঞ্জাব। সেখানে ২৩টি জেলা মিলিয়ে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত তিন দশকে এমন বন্যা দেখেনি পঞ্জাব। বুধবারও সেখানে অতি ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিচার করে স্কুলগুলিকে অনলাইনে ক্লাস করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি সংস্থাগুলিকে বাড়ি থেকে কাজের (ওয়ার্ক ফ্রম হোম) ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে।