Reliance

চুক্তি-চাষে নেই, জানাল রিলায়্যান্স

কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে কৃষক নেতারা অম্বানী-আদানি সংস্থার পণ্য ও পরিষেবা বয়কট করারও ডাক দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৪২
Share:

প্রতীকী ছবি।

অম্বানী-আদানিদের ফায়দা দিতেই মোদী সরকার তিন কৃষি আইন জারি করেছে, এই অভিযোগের মুখে আজ রিলায়্যান্স গোষ্ঠী জানাল, চুক্তি-চাষের ব্যবসায় পা রাখার পরিকল্পনা তাদের নেই। মুকেশ অম্বানীর সংস্থার বক্তব্য, রিলায়্যান্স রিটেল, রিলায়্যান্স জিয়ো ইনফোকম বা রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর কোনও সংস্থা অতীতেও চুক্তি-চাষের ব্যবসা করেনি। দেশের কোথাও রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর কোনও সংস্থা কৃষি জমি কেনেনি। এমন পরিকল্পনাও নেই।

Advertisement

কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে কৃষক নেতারা অম্বানী-আদানি সংস্থার পণ্য ও পরিষেবা বয়কট করারও ডাক দিয়েছেন। রিলায়্যান্সের পেট্রল পাম্প, রিলায়্যান্সের সুপারমার্কেটের সামনে অবরোধ, জিয়ো-র পরিষেবা ছেড়ে অন্য মোবাইল পরিষেবা নেওয়া শুরু হয়েছিল। এর পর পঞ্জাবে জিয়োর মোবাইল টাওয়ারে হামলা শুরু হয়।

রিলায়্যান্স জিয়ো ইনফোকম পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে আজ আর্জি জানিয়েছে, হামলা পুরোপুরি বন্ধ করতে প্রশাসন জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ করুক। অম্বানীর সংস্থার অভিযোগ, ‘ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বী’ ও ‘কায়েমি স্বার্থান্বেষী’-রা এই গুন্ডামিতে মদত ও উসকানি দিচ্ছেন। কৃষক আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে রিলায়্যান্সের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

Advertisement

আজ দুপুরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে কৃষক নেতাদের বৈঠকের ঠিক আগে রিলায়্যান্সের এই বিবৃতি জারি হয়। একই কথা হাইকোর্টেও জানায় রিলায়্যান্স। কৃষক সভার নেতা কে কৃষ্ণপ্রসাদ এতে ‘কৃষক আন্দোলনের জয়’ দেখছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কৃষকরা অম্বানী-আদানিদের পণ্য, পরিষেবা বয়কটের ডাক দেওয়ায় রিলায়্যান্স জানাতে বাধ্য হল যে তারা চুক্তি-চাষের ব্যবসায় ঢুকবে না।’’

তিন কৃষি আইনে কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে চুক্তি-চাষ করিয়ে কৃষকদের থেকে সরাসরি ফসল কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যত ইচ্ছে খাদ্যশস্য, শাকসবজি মজুতেরও ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে আইনে। কৃষকদের আশঙ্কা ছিল, অম্বানী-আদানির মতো সংস্থা কৃষকদের কম দামে ফসল বেচতে বাধ্য করবেন। নিজেরা বেশি দামে তা বেচে মুনাফা করবেন। যত ইচ্ছে খাদ্যশস্য মজুত করে বাজারে খাদ্যপণ্যের কৃত্রিম অভাব তৈরি করা হবে। দাম বাড়লে তার পর তারা বাজারে ছাড়বেন। কৃষক নেতাদের যুক্তি ছিল, আদানি গোষ্ঠী ইতিমধ্যেই বিরাট বিরাট গুদাম-হিমঘর তৈরি করে ফেলেছে। অম্বানী গোষ্ঠীও খুচরো ব্যবসায় রয়েছে। কৃষকদের আন্দোলনের মুখে আদানিরা আগেই জানিয়েছিলেন, তাঁরা শুধুমাত্র সরকারি খাদ্য নিগম বা এফসিআই-কে চাল-গম মজুত করার জন্য গুদাম-হিমঘর ভাড়া দিচ্ছেন। রিলায়্যান্স আজ জানিয়েছে, দেশে খুচরো ব্যবসায় রিলায়্যান্স রিটেলের সঙ্গে তুলনায় কেউ আসে না। সেখানে খাদ্যশস্য, শাকসবজিও বেচা হয়। কিন্তু চাষিদের থেকে সরাসরি সে সব কেনা হয় না। রিলায়্যান্সের বক্তব্য, তারা চাষিদের থেকে ব্যবসায়িক সুবিধা তুলতে কখনও দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে যাননি। সরবরাহকারী সংস্থাগুলি চাষিদের থেকে কম দামে ফসল কিনুক, এমনও তারা চাননি। এমন করাও হবে না।

পঞ্জাব প্রশাসন সূত্রের বক্তব্য, হাজার দেড়েক জিয়োর টাওয়ারে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও অধিকাংশ টাওয়ারে বিদ্যুৎ ফেরানো হয়েছে। চুরি হওয়া জেনারেটর উদ্ধার হয়েছে। রিলায়্যান্স এ জন্য পঞ্জাব ও হরিয়ানা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানালেও হাইকোর্টে আর্জি জানিয়েছে, দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা হোক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন