ওড়িশায় রং বদলের ‘খেলা’। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
রাজ্যের সমস্ত সরকারি ভবনের রং গেরুয়া হতে হবে। ওড়িশা সরকারের এমন নির্দেশ ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। পুরনো হোক বা নতুন, সমস্ত সরকারি ভবনই হবে গেরুয়া রঙের। পূর্ত দফতরের তরফে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে, ‘‘এ বার থেকে সমস্ত সরকারি ভবনের রং গেরুয়া হবে। রাজ্য সরকার এই রঙে সিলমোহর দিচ্ছে।’’ সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
এই প্রথম নয়, গত বছরের অক্টোবরেও ঠিক একই রকম নির্দেশিকা জারি করেছিল সরকার। সেই সময় সমস্ত ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের প্রধানদের ডেকে বলা হয়েছিল, সরকারি ভবনগুলির রং গেরুয়া করতে হবে। আবার এ বছরের মার্চেও রাজ্যের সমস্ত সরকারি স্কুলকে নির্দেশ দেওয়া হয় ভবনগুলির রং বদলে গেরুয়া করা জরুরি। সেই সময়েও কম বিতর্ক হয়নি। আবারও সেই ‘রং বিতর্ক’ মাথাচাড়া দিয়েছে ওড়িশা সরকারের নয়া বিজ্ঞপ্তি ঘিরে। ইতিমধ্যেই বিরোধী দল বিজু জনতা দল (বিজেডি) এই ‘রঙের খেলা’ নিয়ে ময়দানে নেমে পড়েছে। সরকারের সমালোচনা করে তাদের অভিযোগ, গৈরিকীকরণের পথে হাঁটছে রাজ্যের বিজেপি সরকার।
বিজেডি মুখপাত্র লেনিন মোহান্তি বলেন, ‘‘রাজ্যে যখন মহিলাদের উপর অত্যাচার চলছে, তখন সেই ঘটনা থেকে নজর ঘোরাতেই এ সব রঙের খেলা খেলছে বিজেপি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপির সরকারের ১৩ মাসের শাসনকালে রাজ্যের অবস্থা খারাপ হয়েছে। মহিলারা অসুরক্ষিত। উন্নয়ন থমকে। প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে। এ সবের দিকে নজর না দিয়ে রং বদলের খেলায় মেতেছে বিজেপি।’’ অন্য দিকে, কংগ্রেস নেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি জয়দেব জেনা বলেন, ‘‘ভবনের রং বদল, স্কুলপড়ুয়াদের পোশাকের রং বদল আসলে বিজেপির দুর্বল মানসিকতার পরিচয়।’’
তবে রং বদলের ‘খেলা’ শুধু ওড়িশাতেই প্রথম নয়। পশ্চিমবঙ্গেও সরকারি ভবনগুলির রং বদল হয়েছে। তৃণমূল সরকার রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর রাস্তাঘাটের রেলিং থেকে শুরু করে সরকারি ভবন, সবই নীল-সাদা রং করার সিদ্ধান্ত নেয়। রাজ্যের মুখ্য সচিবালয় নবান্নের রংও হয়েছে নীল-সাদা। এ ছাড়া, জয়পুর শহরের প্রায় সব ভবনই গোলাপী রঙের। এর পিছনে অবশ্য সরকারি বা রাজনৈতিক কোনও নির্দেশকা নেই। শহরের ঐতিহ্যের সঙ্গে খাপ খাইয়ে এই রং করা হয়।