রূপাণীর সঙ্কটে কি দলেরই হাত!

এক সময়ে এই রাজকোটেরই জেলা পর্যায়ের নেতা ছিলেন রূপাণী। তাঁকে কোণঠাসা করার পিছনে রয়েছে বিজেপির অন্দরে অমিত শাহের বিরোধী গোষ্ঠীর হাত রয়েছে কি না, উঠে আসছে সেই জল্পনাও।

Advertisement

অগ্নি রায়

অমদাবাদ শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:১৪
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

যে ভাবে খামের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য থাকে ডাকটিকিট, গত দেড় মাস ধরে গুজরাতে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের জনসভায় সে ভাবেই উপস্থিত থাকছেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী।

Advertisement

বড় শিল্পী আসর জমানোর আগে স্থানীয় প্রতিভা একটি দু’টি গান পরিবেশন করেন। সে ভাবেই মোদীর বক্তৃতার আগে রুপাণী কখনও নর্মদা-কীর্তন করছেন, কখনও কেন্দ্রীয় সরকারের ভজনা।

এই ভরা ভোটের মরসুমে এ-হেন অনুগত মুখ্যমন্ত্রীর শেয়ার-দুর্নীতির বিষয়টিকে কেন্দ্রীয় সংস্থা সেবি-র সামনে নিয়ে আসা নিয়ে কিন্তু রাজনৈতিক শিবিরে জোর চাঞ্চল্য। রূপাণী এখন চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন বলে সূত্রের খবর। তাঁর শিবিরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য তথা অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সব মিলিয়ে এই ঘটনায় ভোটের মুখে কিছুটা মুখ পুড়ল বিজেপির এ কথা ঘরোয়া ভাবে স্বীকার করে নিচ্ছে রাজ্য বিজেপি।

Advertisement

গোটা বিষয়টিকে আপাতত ধামাচাপা দিতে চাওয়া হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু রাহুল গাঁধী তথা কংগ্রেস এই নিয়ে আগামী দিনে জোরালো প্রচারে যাওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছে। আজ এই নিয়ে জানতে চাওয়ায় রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র মণীশ দেসিয়া বললেন, “বিজয়ভাই তো অমিত শাহের পাদুকা রেখে রাজ্য চলাচ্ছেন। ভালই হয়েছে ওঁর দু্র্নীতি সামনে চলে এসেছে। মানুষ সব বুঝতে পারবেন। এর আগে রাজকোটে জমির প্লট কেনা নিয়েও দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়েছিলেন তিনি।”

এক সময়ে এই রাজকোটেরই জেলা পর্যায়ের নেতা ছিলেন রূপাণী। তাঁকে কোণঠাসা করার পিছনে রয়েছে বিজেপির অন্দরে অমিত শাহের বিরোধী গোষ্ঠীর হাত রয়েছে কি না, উঠে আসছে সেই জল্পনাও। নাম প্রকাশে নারাজ রাজ্য বিজেপির এক নেতার কথায়, গুজরাতে আমাদের দল হেরে যাক, মোদী-অমিতের হাত দুর্বল হোক— এমনটা চাওয়ার লোকের কিন্তু অভাবে নেই বিজেপিতে। রাজ্য ও কেন্দ্র, উভয় স্তরেই। তবে সেই ব্যক্তি কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নাকি আরএসএস-এর একটা অংশের কোনও প্রভাবে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটিও স্পষ্ট নয় এখনও।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা সমাজবিজ্ঞানী অচ্যুত ইয়াগনিক বলছেন, “এমনিতেই রূপাণীর কোনও প্রতিষ্ঠা নেই দলে। উনি জৈন বানিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত, গুজরাতে যাঁদের প্রতিনিধিত্ব ১ শতাংশেরও কম। তা ছাড়া, মোদী দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে সে ভাবে গুজরাতে পরবর্তী প্রজন্মের নেতা গড়ে ওঠেনি। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছে, কারণ কোনও বিষয়েই তিনি মোদী-অমিতের বিরুদ্ধে গলা তুলবেন না।” তাঁর বিশ্বাস, বিজেপি তথা আরএসএস-এর একটি অংশ সুপরিকল্পিত ভাবেই ঠিক এই সময়ে রূপাণীর আর্থিক দু্র্নীতিকে সামনে নিয়ে আসতে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন