হিমাচল প্রদেশের রাস্তায় ধস। বুধবার সকালে। ছবি: পিটিআই।
শুধু উত্তরাখণ্ড নয়। মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং হড়পা বানে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশও। মঙ্গলবার থেকে পর পর ভূমিধসের খবর পাওয়া যাচ্ছে। ধসের কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছে চণ্ডীগড়-মনালী জাতীয় সড়ক। রাস্তায় বহু মানুষ আটকে পড়েছেন। তাঁদের অধিকাংশই পর্যটক। বিপর্যয়ের কারণে রাত কাটাতে হয়েছে গাড়িতেই। ধসকবলিত এলাকা থেকে পর্যটক, পুণ্যার্থীদের উদ্ধার করার কাজ চলছে। ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ। এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। বুধবার কিন্নৌর-কৈলাস ট্রেকিংয়ের রাস্তা থেকে অন্তত ৪০০ পুণ্যার্থীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাঁরা কুল্লু এবং মনালীর দিকে যাচ্ছিলেন, তাঁরা আটকে পড়েছেন। না পারছেন এগোতে, না পারছেন ফিরতে। ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে রাস্তায় পর্যটকদের গাড়ি আটকে রয়েছে। উত্তরপ্রদেশের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমরা অপেক্ষা করছি। কী করব, পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে। রাস্তা পরিষ্কার হলে আর না গিয়ে ফিরেও যেতে পারি। জীবনের চেয়ে বড় তো কিছু নেই।’’ অম্বালার এক ব্যবসায়ী কাজের সূত্রে ট্রাক নিয়ে নিয়মিত কুল্লু যান। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে আটকে পড়েছে তাঁর ট্রাক। বলছেন, ‘‘জুন মাসের ২০ তারিখ থেকে বর্ষা শুরু হয়েছে। প্রতি দিন কিছু না কিছু সমস্যা হচ্ছে যাতায়াতে। পেটের দায়ে আমাদের যেতেই হবে। এখন অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।’’
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, রাস্তা খালি করতে আপাতত একটি বিকল্প একমুখী পথ খুলে দেওয়ার ভাবনাচিন্তা চলছে। তাতে কেবল হালকা গাড়ি যেতে পারবে।
বুধবার সকালে কিন্নৌরে মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছে। হড়পা বানে ধুয়ে গিয়েছে দু’টি অস্থায়ী সেতু। ফলে মাঝপথে আটকে পড়েছিলেন কিন্নৌর-কৈলাস ট্রেকের বহু পুণ্যার্থী। তাঁদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, বর্ষার শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত হিমাচল প্রদেশে মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়়পা বান এবং ভারী বর্ষণের কারণে ১৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ১.৮৫ লক্ষ টাকার।
মঙ্গলবার উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর ধরালী গ্রামে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে নেমে আসে বিধ্বংসী হড়পা বান। জলের তোড়ে ভেসে যায় বিস্তীর্ণ লোকালয়। বুধবার সকাল থেকেও ভারী বৃষ্টি চলছে দুই রাজ্যেই। উত্তরকাশীর জেলাশাসক প্রশান্ত আর্য জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত চার জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। কিন্তু হড়পা বানে ঠিক কত জন ভেসে গিয়েছেন, সেই পরিসংখ্যান মেলেনি। মেঘভাঙা বৃষ্টির পর হর্ষিল সেনাছাউনি থেকে ১১ জন সেনাকর্মী নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন। উত্তরকাশী জুড়ে আপাতত লাল সতর্কতা জারি রয়েছে।