সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলার জন্য অসমের নাগরিক পঞ্জির কোঅর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলা এবং কেন্দ্রের রেজিস্ট্রার জেনারেল শৈলেশকে এ ভাবেই তোপ দাগল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও বিচারপতি রোহিনটন নরিম্যানের বেঞ্চের তোপ, ‘‘আপনাদের জেলে পোরা উচিত। কিন্তু এনআরসি চূড়ান্ত করার কাজ বাকি রয়েছে বলে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ বিচারপতিদের বক্তব্য, ‘‘আপনাদের কাজ আদালতের নির্দেশ পালন করা। সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দেওয়া নয়।’’
খসড়া এনআরসি প্রকাশ করে প্রতীক হাজেলা ও শৈলেশ ঘোষণা করেছিলেন, নাগরিক পঞ্জি থেকে ৪০ লক্ষেরও বেশি নাম বাদ গিয়েছে। যাঁদের নাম গিয়েছে, তাঁরা কী ভাবে দাবি জানাবেন, বা আপত্তি জানাতে চাইলে, তা কী ভাবে জানাবেন, তা নিয়েও মুখ খুলেছিলেন তাঁরা।
সেই সব সংবাদপত্র আজ সঙ্গে করেই নিয়ে এসেছিলেন বিচারপতিরা। দৃশ্যতই ক্রুদ্ধ বিচারপতি গগৈ বলেন, ‘‘আপনাদের দু’জনকেই আদালতের অবমাননার অপরাধে জেলে পোরা উচিত।’’ বিচারপতি নরিম্যান বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমে গিয়ে এ সব কথা বলার আপনারা কে? ফ্যান্টাস্টিক!’’
আরও পড়ুন: ধর্ষণে কড়া ব্যবস্থা চায় সুপ্রিম কোর্ট
সুপ্রিম কোর্ট এর আগেই নির্দেশ দিয়েছে, যাঁদের নাম খসড়া এনআরসি-তে নেই তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও দমনমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। নাম বাদ পড়া মানুষের দাবি কী ভাবে খতিয়ে দেখা হবে তার পদ্ধতি তৈরি করার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট। তা নিয়ে আগেভাগেই হাজেলারা মুখ খোলায় বিচারপতি নরিম্যান বলেন, ‘‘ভুলবেন না, আপনারা কোর্টের অফিসার। আপনাদের কাজ, কোর্টের নির্দেশ পালন করা। আর আপনারা বলে দিলেন, দাবি ও আপত্তির সময়ে নতুন নথিও বিবেচনা করা হবে?’’
বিচারপতিরা প্রশ্ন করেন, ‘‘কোন অধিকারে এই সব বিবৃতি দিয়েছেন? কীসে বাধ্য হয়েছিলেন আপনারা?’’
এহেন ভর্ৎসনার মুখে হাজেলা জানান, তিনি শৈলেশের সঙ্গে আলোচনা করে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন। যাতে কোনও ভুল ধারণা তৈরি না হয়। এই যুক্তি দিলেও দু’জনেই নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে নেন আদালতের কাছে।
দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।