গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
প্রেমের সম্পর্কে ইতি পড়ার পর প্রেমিকা থাকছিলেন তাঁর এক বান্ধবীর বাড়িতে। প্রেমিকাকে খুন করতে ঘরে ঢুকেছিলেন যুবক। পাশে একটানা কেঁদে চলেছিল প্রেমিকার বান্ধবীর ছ’মাসের সন্তান। মুখে টেপ লাগিয়েও থামানো যাচ্ছিল না কান্না। শেষমেশ প্রেমিকাকে খুনের পর গলা কেটে শিশুটিকেও খুন করলেন যুবক। চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার দিল্লির মজনু কা টিলা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। বুধবার ভিন্রাজ্য থেকে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম নিখিল। ২৪ বছর বয়সি ওই যুবক উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা। বুধবার একাধিক রাজ্যে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে হলদোয়ানি থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। প্রেমিকা সোনাল (২২) এবং তাঁর বান্ধবীর ছ’মাসের শিশুকন্যাকে খুনের অভিযোগ রয়েছে নিখিলের বিরুদ্ধে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালে হলদোয়ানিতে একটি অনুষ্ঠানে নিখিল এবং সোনালের দেখা হয়েছিল। ক্রমে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছু দিন পর একসঙ্গে থাকতেও শুরু করেন তাঁরা। সেই বছরের শেষের দিকে সোনাল অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু অবিবাহিত ওই যুগল সে সময়ে সন্তানপালনের দায়িত্ব নিতে চাননি। তাই শিশুটির জন্মের পর পরই ২০২৪ সালের গোড়ায় তাকে আলমোড়ার এক ব্যক্তির কাছে ২ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেন সোনালেরা। এর পর দিল্লিতে গিয়ে সেখানে নতুন করে সংসার পাতেন দু’জনে।
দিল্লিতে থাকাকালীন দু’জনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। তখনই স্থানীয় বাসিন্দা রশ্মির সঙ্গে পরিচয় হয় সোনালের। প্রায়ই রশ্মির বাড়িতে যেতেন ওই তরুণী। একসময় নিখিলের সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টেনে রশ্মির বাড়িতেই পাকাপাকি ভাবে থাকতে শুরু করে দেন সোনাল। নিখিলের দাবি, এই সময় আবারও অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন সোনাল। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় নিখিল জানিয়েছেন, তাঁর সন্দেহ হয়েছিল যে রশ্মির স্বামী দুর্গেশের সঙ্গে সোনালের সম্পর্ক রয়েছে। কয়েক বার প্রাক্তন প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করে তাঁকে বোঝানোরও চেষ্ট করেন যুবক। কিন্তু লাভ হয়নি। শেষমেশ বুধবার, দুপুর ১টা নাগাদ রশ্মিদের বাড়িতে গিয়ে হাজির হন নিখিল। রশ্মি ও তাঁর স্বামী সে সময় বড় মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে গিয়েছিলেন। দম্পতির ছ’মাসের মেয়েকে নিয়ে বাড়িতেই ছিলেন সোনাল। সে সময় নিখিল ঘরে ঢুকে পড়েন। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর কাছে একটি অস্ত্রোপচারের ব্লেড ছিল। সেটা দিয়েই প্রাক্তন প্রেমিকার গলা কেটে ফেলেন নিখিল। সোনালকে খুনের পর ছ’মাসের শিশুটিকেও খুন করেন তিনি।
ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ (উত্তর) রাজা বান্থিয়া জানিয়েছেন, ‘‘শিশুটির কান্না থামাতে তার মুখে টেপ লাগিয়ে দিয়েছিলেন নিখিল। তার পর গলা কেটে খুন করেন তাকেও। এর পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান তিনি। বরেলী, দিল্লি ইত্যাদি বিভিন্ন শহর ঘুরে হলদোয়ানিতে পৌঁছোনোর পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।’’