শুভেচ্ছা নিয়েও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব নানা রাজ্য

দীপাবলির শুভেচ্ছা নিয়েও কেন্দ্র-রাজ্য টানাপড়েন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ গোটা দেশের সমস্ত পুলিশকর্মীকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।

Advertisement

জয়ন্ত ঘোষাল

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৫৩
Share:

দীপাবলির শুভেচ্ছা নিয়েও কেন্দ্র-রাজ্য টানাপড়েন।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ গোটা দেশের সমস্ত পুলিশকর্মীকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। এই কারণে গোটা দেশের সমস্ত পুলিশকর্মীর মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর সচিবের মাধ্যমে প্রত্যেক রাজ্য সরকারের কাছ থেকে পুলিশকর্মীদের নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর ইত্যাদি তথ্য চেয়েছেন। কেন্দ্রের এই লিখিত প্রস্তাবে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অনেক অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীই অসন্তুষ্ট। ওড়িশা এবং তামিলনাড়ুর সরকার সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই দুই রাজ্যও এই ব্যাপারে সহযোগিতার হাত বাড়াতে প্রস্তুত নয়।

কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রস্তাবটি এসেছে কালীপুজোর আগের দিন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে জানা যাচ্ছে, মমতা সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সংবিধান অনুযায়ী পুলিশ রাজ্যের বিষয়। টুইট বা সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা জানানো এক জিনিস। কিন্তু রাজ্যের প্রত্যেক কর্মচারীকে এই বার্তা পাঠানোর মধ্যে একটা নিয়ন্ত্রণের মানসিকতা আছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই অতিকেন্দ্রিকতা নিয়ে নীতীশ সরকারের সঙ্গে মমতা সরকারের কথা হয়েছে। যেমন অখিলেশ সরকারের সঙ্গেও নীতীশ সরকারের কথা হয়েছে। আপাতত ঠিক হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রীয় আদর্শের প্রতিকূল এই ধরনের আচরণের সমবেত প্রতিবাদ করা হবে পরবর্তী আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকে।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের আগেই আবার একটি আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছে কেন্দ্র। তার আলোচ্যসূচি ঠিক করার আগেই এই পরিষদের একটি নতুন ক্ষুদ্রতর স্থায়ী কমিটি তৈরি করা হয়েছে। সেই কমিটিতে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে আনা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের কাছে এই প্রশ্নেও অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁর মতে, প্রথমত বৈঠকের দিনক্ষণ নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে আগাম কথা না বলে আচমকা দিন ঠিক করে বৈঠক ডেকে দেওয়া অনুচিত। দ্বিতীয়ত, গত বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন কমিটির সদস্য কে হবেন এবং কে হবেন না তা মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য গঠন করে তবেই করা উচিত। যে রাজ্যে এখন সামনে নির্বাচন সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের দায়িত্ব দেওয়া অথবা সিপিএমের মুখ্যমন্ত্রীকে কমিটিতে ঢোকানো, এগুলি ভাল চোখে দেখছেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। ধরে নেওয়া হচ্ছে ফেব্রুয়ারি মার্চের মধ্যে নির্বাচন হয়ে যাবে। এই নির্বাচনে বিজেপি ধাক্কা খেলে মোদী-বিরোধী মঞ্চ গঠনের জন্য যেমন সচেষ্ট হবেন নীতীশ কুমার, ঠিক তেমনই সক্রিয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও। অখিলেশের সঙ্গেও মমতার যোগাযোগ হয়েছে। এই প্রেক্ষিতেই দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাতে মোদী- রাজনাথের ব্যগ্রতা নিয়েও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বিজেপি-বিরোধী বিভিন্ন রাজ্য সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন