আপাতত সনিয়াই মুখ মোদীর বিরুদ্ধে

সাত মাস আগে কংগ্রেসের শেষ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুলকে সভাপতি পদে অভিষেকের সুপারিশ করা হয়েছিল। সনিয়া ছিলেন না সেই বৈঠকে। আজ দশ জনপথে সনিয়ার নেতৃত্বে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে স্থির হল সভাপতি পদে নির্বাচন হবে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে। এ দিনের বৈঠকে মোদী-বিরোধী রাজনীতির উপরেই বেশি জোর দেন সনিয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৭ ০৩:৪৯
Share:

আলোচনা: কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল গাঁধী, মনমোহন সিংহ, সনিয়া গাঁধী এবং অন্যেরা। মঙ্গলবার দিল্লির ১০ জনপথে। নিজস্ব চিত্র।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে অন্যান্য বিরোধী দলের নেতারা চাইছেন। মোদী-বিরোধী রাজনীতির রাশ আপাতত তাই নিজের হাতে নিলেন সনিয়া গাঁধী। তবে ২০১৯-এর কথা মাথায় রেখে তার আগেই রাহুল গাঁধীকে সভাপতি করার পথ আরও প্রশস্ত করলেন তিনি।

Advertisement

সাত মাস আগে কংগ্রেসের শেষ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুলকে সভাপতি পদে অভিষেকের সুপারিশ করা হয়েছিল। সনিয়া ছিলেন না সেই বৈঠকে। আজ দশ জনপথে সনিয়ার নেতৃত্বে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে স্থির হল সভাপতি পদে নির্বাচন হবে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে। এ দিনের বৈঠকে মোদী-বিরোধী রাজনীতির উপরেই বেশি জোর দেন সনিয়া। যাতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে ঘিরে যে বিরোধী মঞ্চ তৈরি হচ্ছে, তার মধ্যমণি হয়ে থাকতে পারেন তিনিই। বৈঠকে রাহুল তোপ দাগেন বিজেপি-সঙ্ঘের বিরুদ্ধে। যদিও রাহুল কী বলেছেন, তা আজ বাইরে প্রকাশ করেনি কংগ্রেস। জানানো হয়েছে শুধু সনিয়া আর নোট বাতিল নিয়ে মনমোহন সিংহের বক্তব্য।

কেন? দলের এক নেতার বক্তব্য, এমন নয় যে রাহুলের অভিষেক এতে থমকে যাচ্ছে। আসলে এই মুহূর্তে সনিয়াকে সামনে দেখেই মোদী-বিরোধিতায় একজোট হচ্ছেন বিরোধী নেতারা। এই রাজনীতির রাশ আপাতত তাই নিজের হাতে নিচ্ছেন সনিয়া। জমি তৈরি করে রাখছেন রাহুলের জন্যই।

Advertisement

লালু প্রসাদ, শরদ যাদবের মতো অনেকেই মনে করছেন মোদী-বিরোধী জোট মজবুত হবে, সনিয়া এর কেন্দ্রে থাকলে। সেই সূত্র ধরেই সনিয়া আজ তেড়েফুঁড়ে নামেন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। সরব হন মোদী-জমানায় অসহিষ্ণুতা, আর্থিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যর্থতার বিরুদ্ধে। উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের হার থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা বললেও বাকি রাজ্যে বিজেপি যে ভাবে গায়ের জোরে সরকার গড়েছে, দেশের বিভিন্ন মহলকে ভয়ে বা আতঙ্কের মধ্যে রাখার রাজনীতি করছে, তা রোখার ডাক দেন কংগ্রেস সভানেত্রী।

সনিয়ার অভিযোগ, সৌহার্দ্যের পরিবেশ এখন বিভাজনে পরিবর্তিত হয়েছে। সহিষ্ণুতা মুছে উস্কানি বেড়েছে। আঘাত আসছে মহিলা, দলিত, আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের উপরে। মানুষ কী খাবে, কী ভাবে জীবনযাপন করবে, তা-ও ঠিক করছে সরকার। বন্ধ করা হচ্ছে ভিন্ন স্বর। তা সে রাজনীতিক বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোক, কিংবা সংবাদমাধ্যম। সনিয়ার দাবি, ২০১৯-এ প্রতিশ্রুতি পূর্ণ হবে না বুঝেই সরকার এখন ২০২২-এর কথা বলছে। ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে দুর্নীতি। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকেও একহাত নেন সনিয়া। বলেন, ‘‘সরকার একে বড় সাফল্য বলে প্রচার করছে। কিন্তু এর পরিকল্পনা ও রূপায়ণে তারা পুরোপুরি ব্যর্থ। মোদীর সাধের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ও রোজগার তৈরিতে ব্যর্থ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন