যৌনতার পাঠ নিয়ে মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের। —ফাইল চিত্র।
ছোটবেলা থেকেই পড়ুয়াদের যৌনতার পাঠ দেওয়া হোক। উত্তরপ্রদেশের এক ধর্ষণ মামলায় সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ওই ঘটনায় নির্যাতিতা এবং অভিযুক্ত উভয়েই নাবালক। উত্তরপ্রদেশে বর্তমানে স্কুলগুলিতে নবম শ্রেণি থেকে যৌনতার পাঠ দেওয়া হয় পড়ুয়াদের। তবে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, নবম শ্রেণি থেকে নয়, আরও আগে থেকে এই বিষয়ে পাঠ দেওয়া হোক পড়ুয়াদের।
এই মামলায় অভিযুক্ত নাবালকের বয়স ১৫ বছর। গত বছর ইলাহাবাদ হাই কোর্ট তার জামিনের আর্জি খারিজ করে দেয়। পরে সে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। গত মাসেই সুপ্রিম কোর্ট জানায়, এই মামলার ক্ষেত্রে অভিযুক্ত নাবালক। জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড যাতে প্রয়োজনীয় শর্তসাপেক্ষে নাবালককে জামিনে মুক্তি দেয়, সেই নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে বয়ঃসন্ধি এবং এই সংক্রান্ত বিষয়গুলি সম্পর্কে কিশোর-কিশোরীদের সচেতন করতে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলিতে যৌনতার পাঠ কী ভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে, তা নিয়েও একটি হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় উত্তরপ্রদেশ সরকারকে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো একটি হলফনামা জমা পড়ে আদালতে। সেখানে উত্তরপ্রদেশ সরকার জানায়, ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্ট অ্যান্ড ট্রেনিং’ (এনসিইআরটি)-এর নির্দেশিকা অনুসারে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এ বিষয়ে পড়ানো হয়। তবে নির্দেশনামায় সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে নিজেদের মতামত জানিয়েছে। বুধবারের ওই নির্দেশনামায় শীর্ষ আদালত লিখেছে, ‘‘আমাদের মতে, শিশুদের যৌনতার পাঠ নবম শ্রেণি থেকে দেওয়ার বদলে আরও ছোটবেলা থেকে দেওয়া উচিত। কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি বিবেচনা করে সংশোধনমূলক পদক্ষেপ করতে পারেন, যাতে বয়ঃসন্ধির সময়ে কী পরিবর্তন আসে এবং সেই বিষয়ে কী কী যত্ন ও সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন, সে বিষয়ে শিশুরা অবহিত থাকে।’’
যদিও এ বিষয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি আদালত। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের উপরেই ছেড়ে দিয়েছে আদালত। বস্তুত, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে যৌনতার পাঠ সংক্রান্ত বিবিধ নিয়ম চালু রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে আরজি কর-কাণ্ডের পরে জীবনশৈলীর পাঠ স্কুল স্তরে ফেরানোর জন্য তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অতীতে বাম জমানার শেষ দিকে স্কুলগুলিতে জীবনশৈলীর শিক্ষা চালু হয়েছিল। তবে তা বাধ্যতামূলক না হওয়ায় পাঠ্যক্রমে পরবর্তী কালে কার্যকর হয়নি। এ বার সেই জীবনশৈলীর পাঠ আবার স্কুলস্তরে ফেরানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে জীবনশৈলীর পাঠ দেওয়ার জন্য স্কুলস্তরে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণও হয়ে গিয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই তা কার্যকর হতে পারে।