Colonel Sofiya Qureshi Controversy

‘এমন কুমিরের কান্না অনেকেই কাঁদেন’! কর্নেল সোফিয়াকে নিয়ে কুমন্তব্য করা মন্ত্রী ক্ষমা চেয়েও ভর্ৎসিত সুপ্রিম কোর্টে

কর্নেল সোফিয়াকে উদ্দেশ করে কুমন্তব্য করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি তাঁকে ক্ষমা চাইতে বলেছিলেন। কিন্তু ক্ষমা চাওয়ার পরেও আদালত তাঁকে ভর্ৎসনা করল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৫ ১৩:৫৭
Share:

(বাঁ দিকে) ভারতীয় সেনা অফিসার কর্নেল সোফিয়া কুরেশি। মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

ভারতীয় সেনার অফিসার কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে উদ্দেশ করে কুমন্তব্যের জন্য মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ আবার ভর্ৎসিত সুপ্রিম কোর্টে। আদালত তাঁকে বলেছে, ‘কুমিরের কান্না কাঁদবেন না’। মন্ত্রী ওই মন্তব্যের পর ক্ষমা চেয়েছিলেন। আদালত তা গ্রহণ করেনি। বিচারপতি সূর্য কান্ত জানিয়েছেন, অনেকেই আইনের হাত থেকে বাঁচতে ‘কুমিরের কান্না’ কেঁদে থাকেন। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রী যে ভাবে ক্ষমা চেয়েছেন, তা ‘আন্তরিক’ বলে মনে হচ্ছে না। বরং মনে হচ্ছে, আদালতের নির্দেশ মেনে ক্ষমা চাওয়া হয়েছে।

Advertisement

সোফিয়াকে ‘সন্ত্রাসবাদীদের বোন’ বলেছিলেন বিজয়। তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে, ক্ষমাও চেয়েছেন অভিযুক্ত। সোমবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংহের বেঞ্চে। বিচারপতি ওই মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘এটা কী ধরনের ক্ষমা আপনি চেয়েছেন? ক্ষমা চাওয়ার তো একটা ধরন থাকে। মাঝে মাঝে মানুষ আইনি প্রক্রিয়া এড়াতে বিনয়ী ভাষা ব্যবহার করেন। কুমিরের কান্না কাঁদেন। আপনার এই ক্ষমা চাওয়া কী ধরনের? আপনি দেখাতে চাইছেন, আদালত আপনাকে ক্ষমা চাইতে বলেছে। নিজের মন্তব্যের জন্য এখনও পর্যন্ত আন্তরিক ভাবে ক্ষমা চাইতে পারলেন না কেন?’’

সোফিয়াকে উদ্দেশ করে ওই মন্তব্যের জন্য মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, মধ্যপ্রদেশ সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে আদালত। পুলিশের কাছেও তদন্তের অবস্থা জানতে চাওয়া হয়েছে। পুলিশকে ২০ মার্চের মধ্যে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করতে বলা হয়েছে। ওই দলে এক মহিলা অফিসার-সহ তিন জন আইপিএস পদমর্যাদার পুলিশ থাকবেন। সিটকে তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে হবে ২৮ মে-র মধ্যে।

Advertisement

ভারতীয় সেনার সামরিক যোগাযোগ ও ইলেকট্রনিক্স অভিযান সহায়ক শাখা সিগন্যাল কোরের অন্যতম শীর্ষ আধিকারিক ৩৫ বছরের সোফিয়া। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে পর পর কয়েক দিন ভারতীয় সেনা ও বিদেশ মন্ত্রক যৌথ ভাবে সাংবাদিক বৈঠক করেছিল। প্রত্যেক বৈঠকেই বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রীর পাশে উপস্থিত ছিলেন কর্নেল সোফিয়া এবং বায়ুসেনার উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ। সাংবাদিক বৈঠকে ভারতীয় সেনার প্রতিনিধিত্ব করেন তাঁরা। সীমান্তে সংঘর্ষ চলাকালীন কোন দিন কী কী হচ্ছে, ভারত কী পদক্ষেপ করছে, পাকিস্তানই বা কী ভাবে আক্রমণের চেষ্টা চালাচ্ছে, তার বিস্তারিত বর্ণনা দিতেন এই দু’জন। সোফিয়া প্রথমে হিন্দিতে বলতেন, পরে ব্যোমিকা ইংরেজিতে ওই একই কথা বলতেন। পরে বিদেশসচিব নিজের বক্তব্য জানাতেন। এই যৌথ সাংবাদিক বৈঠকগুলি সাড়া ফেলে দিয়েছিল সারা দেশে। সোফিয়াকে উদ্দেশ করে কুমন্তব্যের পর মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ দেয় মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টও এর আগে মন্ত্রীকে ভর্ৎসনা করেছিল। বিজয়কে ধমক দিয়ে প্রধান বিচারপতি বিআর গবই বলেছিলেন, ‘‘কী ধরনের মন্তব্য করছেন? আপনার অন্তত একটু সংবেদনশীলতা দেখানো উচিত। যান, গিয়ে হাই কোর্টে ক্ষমা চান।’’ এর পর বিজয় ক্ষমা চান। কিন্তু শীর্ষ আদালত আবার তাঁকে ভর্ৎসনা করল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement