ভোটকেন্দ্রে বুথের বাইরে ভোটারদের লাইন। —ফাইল চিত্র।
নির্বাচন কমিশন নিজের দায়িত্ব ভাল ভাবেই বোঝে। বিহারের চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় ভুল-ত্রুটি সংশোধনের প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার এমনটাই জানাল সুপ্রিম কোর্ট। চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় কাদের নাম যুক্ত হয়েছে, কাদের নাম বাদ গিয়েছে— সেই সংক্রান্ত পৃথক তালিকা প্রকাশের জন্য সওয়াল করা হয় আদালতে। কমিশন সুপ্রিম কোর্টে জানায়, তারা ইতিমধ্যে এই তালিকা প্রকাশের কাজ শুরু করেছে। কমিশনের বক্তব্য শোনার পরে আদালত বলে, “কমিশন যে নিজের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করবে, তা নিয়ে আমাদের কোনও সন্দেহ নেই। তারা ওই তালিকা প্রকাশ করতে বাধ্য।”
আগামী ৬ নভেম্বর বিহারে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ রয়েছে। তার ঠিক দু’দিন আগে ফের বিহারের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) সংক্রান্ত মামলা শুনানির জন্য উঠবে সুপ্রিম কোর্টে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই অনুসারে, আগামী ৪ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ধার্য করেছে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ। বিহারের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা আগেই প্রকাশ করে দিয়েছে কমিশন। তবে মামলাকারী সংগঠন ‘এডিআর’-এর আইনজীবীর দাবি, খসড়া তালিকায় ছিল কিন্তু চূড়ান্ত তালিকায় নেই— এমন নামগুলির তালিকা প্রকাশ করা হোক।
মামলাকারী ওই সংগঠনের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ সওয়াল করেন, “খসড়া তালিকায় ছিল অথচ চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে, এমন ভোটারদের সম্পূর্ণ তালিকা তারা (কমিশন) দেয়নি। নতুন করে কোন কোন নাম বাদ গেল, তা প্রকাশ করা হয়নি। আগামিকাল (১৭ অক্টোবর) এবং ২০ অক্টোবর তারা চূড়ান্ত তালিকা ‘ফ্রিজ়’ করে দেবে। দুর্ভাগ্যবশত, কমিশন এখনও তাদের ওয়েবসাইটে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করছে না। অবিলম্বে এটি করা প্রয়োজন।”
অন্য দিকে কমিশনের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী জানান, ওই তালিকা প্রকাশের কাজ চলছে। প্রথম দফার নির্বাচনের জন্য ১৭ অক্টোবর এবং দ্বিতীয় দফার জন্য ২০ অক্টোবর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ‘ফ্রিজ়’ হবে, সে কথাও আদালতে জানান তিনি। কমিশনের আইনজীবীর বক্তব্য, এটি প্রকাশের জন্য হাতে এখনও সময় রয়েছে। তা ছাড়া কমিশন এই কাজ শুরুও করে দিয়েছে। তার পরেও কেন মামলাকারী সংগঠনের আইনজীবী আদালতের থেকে এ বিষয়ে আলাদা করে নির্দেশ চাইছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন কমিশনের।
এর আগে গত ৭ অক্টোবরের শুনানিতে কমিশনকে এই তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। যে ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার ভোটারের নাম খসড়া তালিকায় ছিল, কিন্তু চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, সেই তালিকা প্রকাশের জন্য বলা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারপতি কান্ত বলেন, “দেখা যাক তারা কী প্রকাশ করে। আশা করছি চূড়ান্ত তালিকায় কারা যুক্ত হয়েছেন, কার বাদ পড়েছেন তার আভাস পাওয়া যাবে। কিছু ‘টাইপোগ্রাফিক’ ভুলও আছে। আমরা আশা করি তারা (কমিশন) দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ হিসাবে এই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখবেন এবং সমাধানের ব্যবস্থা করবেন।”