নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে মণিপুরে। পিটিআই।
অগস্টের গোড়ায় মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে মেইতেই নেতাদের সঙ্গে শান্তিবৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তার পর কুকি জঙ্গিদের হুমকির জেরে পার্বত্য এলাকায় যেতে পারেননি থাডু জনজাতি গোষ্ঠীর নেতা নেহকাম জ়োমহাও। শনিবার রাতে জ়োমহাওকে অসমের কার্বি আংলং জেলার মাঞ্জায় তাঁর বাড়ি থেকে টেনে বার করে খুন করছে একদল অজ্ঞাতপরিচয় ঘাতক। ঘটনার জেরে রবিবার থেকে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে মণিপুরে।
কার্বি আংলং জেলার পুলিশ সুপার সঞ্জীব কুমার জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে রবিবার পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার সকলেই অতীতে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘কুকি রেভলিউশনারি আর্মি’ (কেআরএ)-র সক্রিয় সদস্য ছিলেন। অসম এবং মণিপুরের সীমানাবর্তী জেলাগুলিতে থাডু জনজাতির বাস। কুকিদের মতোই থাডুরাও মূলত খ্রিস্টান ধর্মাবলমম্বী। কুকিদের সঙ্গে তাঁদের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ নিবিড়। গত দু’বছরের সংঘাতপর্বে থাডুরাও কয়েকটি ক্ষেত্রে মেইতেইদের হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতে ‘থাডু সাহিত্য সমিতি’র সভাপতি, ৫৯ বছর বয়সি জ়োমহাও অগস্টের গোড়ায় সংঘাতের ইতি টানতে মেইতেই গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছিলেন। গত ১৬ অগস্ট ‘থাডু কুকি ইন্টারন্যাশনাল’ এবং ‘থাডু স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, জেনারেল হেডকোয়ার্টার্স’ নামে একটি দু’টি সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে ইম্ফলে হয়েছিল শান্তিবৈঠক। এর পরেই জ়োমহাওয়ের নিন্দায় সরব হয়েছিল বিভিন্ন কুকি গোষ্ঠী এবং ‘থাডু ইনপি জেনারেল হেডকোয়ার্টার্স’ নামে একটি গোষ্ঠী।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় দু’শোর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।