প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।—ফাইল চিত্র।
নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদীকে ‘বিভেদ গুরু’ বলে প্রচ্ছদ নিবন্ধ ছেপেছিল। কিন্তু লোকসভা ভোটের ফলাফল সামনে আসতেই তাঁকে নিয়ে অবস্থান বদলে ফেলল আন্তর্জাতিক টাইম পত্রিকা। সম্প্রতি একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে তারা। সেখানে বলা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদী ভারতকে যে ভাবে ঐক্যবদ্ধ করেছেন, গত পাঁচ দশকে আর কোনও প্রধানমন্ত্রী তা করে দেখাতে পারেননি।
গত ২৩ মে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। তাতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি। লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ৩০৩ আসনেই জয়লাভ করেছে তারা। তার পরই একটি বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করেছে টাইম ম্যাগাজিন। সেটি লিখেছেন লন্ডন নিবাসী মনোজ লাডওয়া। ইন্ডিয়া আইএনসি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এবং চিফ এগ্জিকিউটিভ তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথম দফায় বিভিন্ন নীতি নিয়ে প্রায়শই কড়া এবং অনৈতিক সমালোচনার মুখে পড়েছেন মোদী। ম্যারাথন নির্বাচন চলাকালীনও তা অব্যাহত ছিল। তা সত্ত্বেও যে ভাবে ভোটারদের তিনি ঐক্যবদ্ধ করেছেন, গত পাঁচ দশকে আর কোনও প্রধানমন্ত্রী তা করে দেখাতে পারেননি।’’
শ্রেণি বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠতে পেরেছেন বলেই, এই বিপুল জয় সম্ভব হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মনোজ লাডওয়া। তিনি বলেন, ‘‘সমাজের অনগ্রসর স্তরে জন্মগ্রহণ করেন নরেন্দ্র মোদী। সেখান থেকে দেশের শাসনব্যবস্থার শীর্ষে পৌঁছেছেন। তাই নিজেকে দেশের মেহনতি মানুষের প্রতিনিধি বলে ভাবতে পারেন। নিজেকে মেলাতে পারেন দরিদ্রতম নাগরিকের সঙ্গে, স্বাধীনতার পর এতকাল ক্ষমতায় থাকলেও নেহরু-গাঁধী রাজনৈতিক ঘরানার নেতারা যা আজও করে উঠতে পারেন না।’’
আরও পড়ুন: সাড়ে ৯ ঘণ্টা জেরা শেষে ছাড়া পেলেন অর্ণব, ফের হাজিরা কাল সকালে
দ্বিতীয় দফায় নরেন্দ্র মোদীর সামনে কী কী লক্ষ্য থাকতে পারে, তাও সবিস্তার বর্ণনা করেছেন মনোজ লাড়ওয়া। তাঁর মতে, ‘‘সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলির সংশোধন করতে হবে মোদীকে। তার জন্য কর্মতৎপর ভাবমূর্তি টিকিয়ে রাখতে হবে তাঁকে। জনমোহিনী নীতির প্রলোভন এড়িয়ে যেতে হবে।’’
দলিত নিগ্রহ-সহ একাধিক ইস্যুতে মুখে কুলুপ এঁটে থাকা নিয়ে বরাবর মোদীর সমালোচনা করে এসেছেন বিরোধীরা। তাতে একমত হয়েছেন মনোজ লাডওয়াও। তবে তাঁর দাবি, ‘‘বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে মোদী নীরব থাকলেও, তাঁর কাজ মনে ধরেছে মানুষের। তাই ব্যালট বাক্সে তার প্রভাব পড়েছে। যে নতুন ভারতের স্বপ্ন মোদী তাঁদের দেখিয়েছিলেন, আজও তা অটুট তাঁদের কাছে।’’
আরও পড়ুন: ঘরছাড়া তৃণমূল কর্মীরা, অভিযোগ তুলে নৈহাটি পুরসভার সামনে ধর্নায় বসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা
এর আগে, নির্বাচন চলাকালীন ২০ মে সংখ্যার প্রচ্ছদে নরেন্দ্র মোদীকে ‘ইন্ডিয়া’জ় ডিভাইডার ইন চিফ’ (ভারতে বিভেদের গুরু) বলে উল্লেখ করেছিল টাইম পত্রিকা। সে বার ওই নিবন্ধটি লিখেছিলেন আতিশ তাসির, ভারতীয় সাংবাদিক তভলিন সিংহ এবং প্রয়াত পাক রাজনীতিক সলমন তাসিরের ছেলে তিনি। তা নিয়ে কম সমালোচনায় পড়তে হয়নি পত্রিকা কর্তৃপক্ষকে।