প্রতীকী ছবি।
৫০ হাজার টাকা দিলেই বদলে যায় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। শুধু তা-ই নয়, টাকার বিনিময়ে খুনের রিপোর্টও বদলে যেত আত্মহত্যায় বা স্বাভাবিক মৃত্যুতে। এমনকি খুনিকে বাঁচাতেও নানা রকম পন্থা নেওয়া হত। বদলে কোনও নির্দোষ ব্যক্তিকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হত। আর সব কিছুই হত মোটা টাকার বিনিময়ে। উত্তরপ্রদেশের সম্ভলপুরে এমনই এক চক্রের হদিস পেল পুলিশ। যেটিকে ‘অটোপসি মাফিয়া’ চক্র বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই চক্রের সঙ্গে ডাক্তার, ফার্মাসিস্ট থেকে শুরু করে মর্গের কর্মীরা জড়িত। তদন্তকারী এক আধিকারিকের দাবি, অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, মৃত্যুর কারণ বদলে দেওয়া হয়েছে রিপোর্টে। কখনও আবার পুরো রিপোর্টই গায়েব হয়ে গিয়েছে। এই চক্রে জড়িত সন্দেহ ইতিমধ্যেই চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, সম্ভলপুর জেলা জুড়ে ৩১টি এমন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হদিস মিলিছে, যেগুলি এই চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে সন্দেহ। সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে সিল করে দেওয়া হয়েছে।
রামবীর সিংহ নামে এক ব্যক্তি রাজস্থান থেকে ২০২১ সালে সম্ভলপুরে এসেছিলেন। তাঁর পুত্র সত্যবীর জানিয়েছেন, রামবীরের মৃত্যুর খবর পেয়ে উত্তরপ্রদেশে আসেন। সম্ভল হাসপাতালে তাঁর পৌঁছোনোর আগেই রামবীরের দেহের ময়নাতদন্ত হয়ে যায়। শেষকৃত্যের সময় দেখা যায়, তাঁর শরীরে আঘাতে চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট চাইতে গেলে তাঁকে বলা হয়, সেটি হারিয়ে গিয়েছে। তখনই তাঁর সন্দেহ হয়। তার পরই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। আরও বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়তেই শুরু হয় তদন্ত। তখনই এই চক্রের হদিস মেলে। কারা কারা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
সম্ভলের জেলাশাসক রাজিন্দর পেনসিয়া বলেন, ‘‘এই চক্র ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। ৩১টি বেআইনি স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যাঁরা যাঁরা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের খুঁজে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’