Coronavirus in India

COVID Vaccine: টিকাকরণের গতি বাড়ছে: কেন্দ্র

আগামী দিনে ফি দিন টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা যাতে এক কোটি ছোঁয়া সম্ভব হয় সেই উদ্দেশ্যে আরও বেশি প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৩৭
Share:

মোট ৭০ কোটি টিকাকরণ হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। ফাইল চিত্র।

সরকারের দাবি, অবশেষে গতি পেতে শুরু করেছে কোভিড টিকাকরণ প্রক্রিয়া। গত দু’সপ্তাহের মধ্যে তিন দিন দৈনিক টিকাকরণের সংখ্যা এক কোটি ছাপিয়ে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও দেশের গ্রামীণ এলাকা, সংখ্যালঘু মহল্লা এমনকি শিক্ষিত সমাজের একাংশের টিকা নেওয়ার প্রশ্নে অনীহা লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে দিচ্ছে না বলে মনে করছে কেন্দ্র। আগামী দিনে ফি দিন টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা যাতে এক কোটি ছোঁয়া সম্ভব হয় সেই উদ্দেশ্যে আরও বেশি প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।

Advertisement

চলতি বছরের মধ্যে দেশের সব প্রাপ্তবয়স্ককে টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। আজ পর্যন্ত দেশে মোট ৭০ কোটি টিকাকরণ হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। এ বছরের শেষের মধ্যে বাকি ২৪ কোটি দেশবাসীকে অন্তত একটি ডোজ় দিতে তৎপর হয়েছে কেন্দ্র। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মতে, টিকাকরণের গতি বাড়লেও বেশ কিছু এলাকায় এখনও মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার প্রশ্নে দ্বিধা কাজ করছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া যাচ্ছে না। মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, শহরের বস্তি এলাকা যেখানে মানুষের মধ্যে সচেতনতা কম সেখানে টিকাকরণের হার বেশ কম। সেটা স্বাভাবিক ধরে নিয়ে ওই এলাকাগুলিতে আরও বেশি করে প্রচারের উপরে জোর দিয়েছে কেন্দ্র। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘কেবল অল্প শিক্ষিতরাই যে টিকা নেওয়ার প্রশ্নে পিছিয়ে রয়েছেন এমন নয়। বহু শিক্ষিত শহুরে মানুষ এখনও টিকা নেননি। তাঁদের একটি বড় অংশ এখনও টিকার কার্যকারিতায় ভরসা করে উঠতে পারছে না। এ ছাড়া টিকা নিলে রক্ত জমাট বাঁধা, মৃত্যু হওয়ার মতো ভুল ধারণা থাকায় বহু শিক্ষিত মানুষ টিকা নিতে চাইছেন না।’’ এমসের মেডিসিনের চিকিৎসক নীরজ নিশ্চলের কথায়, ‘‘ওই ভয় অমূলক। বরং টিকা নিলে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা এক ধাক্কায় কমে যায়।’’

দেশে আজ পর্যন্ত যে ৭০ কোটি টিকাকরণ হয়েছে তার গোটাটাই প্রায় হয়েছে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিনের মতো দেশীয় দুই প্রতিষেধকের মাধ্যমে। তা সত্ত্বেও স্বাস্থ্য মন্ত্রক দেখেছে শিক্ষিত তথা স্বচ্ছল সমাজের একাংশ এখনও দেশীয় প্রতিষেধকে ভরসা রাখতে পারছেন না। তাঁরা এখনও বিদেশি ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় রয়েছেন। জনসন অ্যান্ড জনসন, ফাইজ়ারের মতো তথাকথিত নামী সংস্থাগুলির প্রতিষেধক বাজারে এলে তখন তাঁরা প্রতিষেধক নেওয়ার পক্ষপাতী। দেশীয় প্রতিষেধক যে বিদেশি প্রতিষেধক থেকে কোনও অংশে কম নয়, বরং কার্যকারিতার দিক থেকে কিছু ক্ষেত্রে বেশি সফল আগামী দিনে সেই প্রচারের উপরের জোর দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে।

Advertisement

পোলিও টিকাকরণের সময়ে সংখ্যালঘু সমাজের একাংশ ওই টিকাকরণের বিরোধিতা করেছিল। করোনা টিকাকরণের ক্ষেত্রে গ্রামীণ সংখ্যালঘু এলাকায় সেই একই ধরনের সমস্যা সামনে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, অসম, তেলঙ্গানার মতো রাজ্যগুলিতে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় টিকাকরণের হার দেশের অন্যান্য এলাকার থেকে বেশ কম। ওই সমস্যা দূর করতে অতীতে মসজিদের ইমাম ও ধর্মগুরুদের সাহায্য নেওয়া হয়েছিল। এ বারও তাঁদের টিকাকরণ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মহারাষ্ট্রের সংখ্যালঘু সমাজের মধ্যে টিকাকরণের হার বাড়াতে বিভিন্ন সংখ্যালঘু সংস্থা, সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। কেন্দ্র চাইছে আগামী দিনে অন্য রাজ্যগুলিও টিকাকরণের হার বাড়াতে সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়ে মানুষের মনে এ নিয়ে ভীতি রয়েছে তা দূর করার জন্য প্রচারে নামুক।

গোড়ায় প্রতিষেধকের স্বল্পতার সমস্যা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে কেন্দ্র। কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় রাজ্যগুলিকে অনেক বেশি সংখ্যায় টিকা জোগানোও সম্ভব হচ্ছে। যার ফলে গত ১৩ দিনে ১০ কোটি টিকাকরণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কথায়, ‘‘রেকর্ড গতিতে টিকাকরণ চলছে দেশে।’’ যদিও ওই গতি যথেষ্ট নয় বলেই মন্তব্য করেছেন সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি। তাঁর কথায়, ‘‘সংক্রমণের তৃতীয় ধাক্কার মারণ আঘাত আসার আগে টিকাকরণের গতি আরও বাড়াতে হবে। কারণ এখন পর্যন্ত দেশের ১১ শতাংশ বাসিন্দা করোনা টিকার দুটি ডোজ় পেয়েছেন।’’ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, এ মাস থেকে ফি দিন এক কোটির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। তা রোজ ছোঁয়া হয়তো যাচ্ছে না। কিন্তু যে ভাবে টিকাকরণের গতি বেড়েছে তা যথেষ্ট আশাব্যাঞ্জক। আগামী দিনে টিকার জোগান আরও বাড়লে ও মানুষের মনে টিকা প্রশ্নে যে দ্বিধা রয়েছে তা কেটে গেলে ফি দিন এক কোটির লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া সম্ভব হবে। বাড়বে দ্বিতীয় ডোজ় প্রাপকদের সংখ্যাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন