—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ছোটবেলায় বাবা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন মা-ও। শিশুকালে স্টেশনে স্টেশনে জঞ্জাল কুড়িয়ে দিন গুজরান হত তার। বয়স যখন আট, তখন স্টেশন থেকেই তাকে উদ্ধার করা হয়েছিল। রাখা হয়েছিল হোমে। সেই থেকে হোমেই তার বেড়ে ওঠা। কিন্তু এখন উনিশে পা দিলেও, ভোটাধিকার মিলছে না! কারণ, মা-বাবার হদিস দিতে পারছেন না বিহারের সেই তরুণী খুশবু খাতুন। তাঁর কাতর প্রশ্ন, ‘‘ওঁদের প্রমাণ দেব কী করে?’’
সম্প্রতি বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (এসআইআর) করেছে নির্বাচন কমিশন। নিয়ম অনুযায়ী, যাঁরা ২০০৪ সালের পর জন্মেছেন, ভোটার তালিকায় নাম তুলতে তাঁদের জন্মের শংসাপত্র এবং ঠিকানার প্রমাণ দিতে হবে। জমা দিতে হবে মা-বাবার পরিচয়পত্রও। এতেই বিপাকে পড়েছেন খুশবুর মতো হোমের তরুণ-তরুণীরা।
বিহারে এসআইআর শুরু হওয়ার আগেই নতুন ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন পটনার ২২ বছরের তরুণী কাজল কুমারী। সেই সময় বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) তাঁর মা-বাবার পরিচয়পত্র দেখতে চান, যা তিনি দেখাতে পারেননি। কাজল বলেন, ‘‘আমি ছোট থেকেই হোমে মানুষ। আমি সে কথা বিএলও-কে জানাই। কিন্তু উনি জানান, মা-বাবার পরিচয়পত্র লাগবেই।’’
এ বিষয়ে বিহারের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও)-কে অবগত করা হয়েছিল। গত ১৩ অক্টোবর ‘বিহার কেয়ার লিভার্স অ্যালায়েন্স’ নামে একটি সংগঠন সিইও-কে এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার জন্যও বলেছিল। সমাজকল্যাণ দফতরেরও দ্বারস্থ হয়েছিল তারা। তাদের দাবি ছিল, যাঁরা ছোট থেকে হোমে মানুষ হয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকে যাতে মা-বাবার পরিচয়পত্র না-চাওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে হোম কর্তৃপক্ষ যে শংসাপত্র দেবেন, তা-ই গ্রাহ্য হবে।