Himachal Pradesh Flash Flood

‘হাত দিয়ে কাদামাটি সরিয়েছি, শুধু জানতাম, বেঁচে ফিরতে হবে’! হিমাচলে ধসের নীচে পাঁচ ঘণ্টা আটকে থাকার পর উদ্ধার তরুণী

গভীর রাতে মেঘভাঙা বৃষ্টির পর হড়পা বান আসে মন্ডীর শরন গ্রামে। গ্রামের এক পর এক বাড়িতে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে বন্যার জল। সঙ্গে ভূমিধস। প্রাণভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোটাছুটি করতে শুরু করে দেন গ্রামবাসীরা। গভীর রাতে ঘরে জল ঢুকতে শুরু করায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছিলেন তুনেজাও।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫ ১০:৪৬
Share:

বেঁচে ফিরলেন তুনেজা ঠাকুর! ছবি: সংগৃহীত।

পাঁচ ঘণ্টা আটকে ছিলেন ধ্বংসস্তূপের নীচে! তত ক্ষণে মন্ডীর শরন গ্রামের বেশির ভাগ ঘরবাড়ি কাদামাটি, পাথরের ঢিপিতে পরিণত হয়েছে। সেই ধ্বংসস্তূপের নীচে প্রাণের স্পন্দন শুনতে পেলেন উদ্ধারকারীরা! শুরু হল কাদামাটি সরানোর কাজ। অবশেষে পাঁচ ঘণ্টা পর ধ্বংসস্তূপের নীচে জীবন্ত অবস্থায় পাওয়া গেল ২০ বছরের তরুণীকে।

Advertisement

ঘটনাটি ঘটেছে হিমাচল প্রদেশের মন্ডী জেলায়। তরুণীর নাম তুনেজা ঠাকুর। গত ৩০ জুন গভীর রাতে মেঘভাঙা বৃষ্টির পর হড়পা বান আসে মন্ডীর সেরাজ উপত্যকার শরন গ্রামে। গ্রামের একের পর এক বাড়িতে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে বন্যার জল। সঙ্গে ভূমিধস। প্রাণভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোটাছুটি করতে শুরু করে দেন গ্রামবাসীরা। গভীর রাতে ঘরে জল ঢুকতে শুরু করায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছিলেন তুনেজাও। কিন্তু তার আগেই ধসের নীচে চাপা পড়ে যান। তরুণীর কথায়, ‘‘প্রত্যেকটা সেকেন্ড দীর্ঘ মনে হচ্ছিল। কাদা, পাথরের স্তূপের নীচে নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল। কিন্তু বুঝতে পারছিলাম, কিছু না করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মারা যাব। তখন দু’হাত দিয়ে প্রাণপণে কাদামাটি সরাতে শুরু করি, যাতে অন্তত শ্বাসটুকু নিতে পারি।’’

বেশ কিছু ক্ষণ পরে তুনেজার খোঁজ শুরু হয়। অবশেষে পাঁচ ঘন্টা পর ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধার করা হয় বছর কুড়ির তরুণীকে। পাঁচ ঘণ্টা ধরে খালি হাতেই মাটি খুঁড়েছিলেন তিনি, দাবি তুনেজার। তাঁর কথায়, ‘‘নিজেকে বার বার একটাই কথা বলছিলাম, আমাকে বেঁচে ফিরতেই হবে!’’ ‘অলৌকিক’ ভাবে বেঁচে ফেরা তরুণীর সঙ্গে গত সপ্তাহেই দেখা করেছেন হিমাচলের উপ-মুখ্যমন্ত্রী মুকেশ অগ্নিহোত্রী এবং বিরোধী দলের নেতা জয়রাম ঠাকুর। তরুণীর সাহসের প্রশংসাও করেছেন তাঁরা।

Advertisement

প্রসঙ্গত, হিমাচল প্রদেশে হড়পা বান ও ধসে মৃতের সংখ্যা আরও বেড়েছে। গত ২০ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত সে রাজ্যে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সারা রাজ্যে অন্তত ৩৫ জন এখনও নিখোঁজ। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি মন্ডীতে। সেখানে অন্তত ৩০ জনের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁদের খোঁজে শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। গত দুই সপ্তাহে হিমাচলে মোট ২৩টি হড়পা বান, ১৯ বার মেঘ ভাঙা বৃষ্টি এবং ১৬টি ভূমিধসের খবর পাওয়া গিয়েছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মৃতের সংখ্যাও। ৫২ জন মারা গিয়েছেন বৃষ্টিজনিত কারণে, আর ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায়। হড়পা বানে ভেসে গিয়েছেন ১৪ জন। জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে আট জনের। ভূমিধস, বজ্রপাত, সাপের কামড় এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েও অনেকের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যাও শতাধিক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement