গবেষণা অনেক হয়েছে। আরও হোক। কিন্তু তার আগে যে-ভাবেই হোক, দ্রুত বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের কার্যকর ব্যবস্থা করতে হবে। এবং সেই জল হতে হবে আর্সেনিকের বিষ-মুক্ত। কেন্দ্রীয় ভূ-জল পর্ষদ-সহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে এটা জানিয়ে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। মঙ্গলবার কলকাতায় কেন্দ্রীয় ভূ-জল পর্ষদের আঞ্চলিক দফতর আয়োজিত এক সভায় তা জানান ফরিদাবাদের কেন্দ্রীয় ভূ-জল পর্ষদের কর্তারা। আর্সেনিক-বিষ নিরাময়ের বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা হয় সভায়।
১৯৭৬ সালে চণ্ডীগড়ে পানীয় জলে আর্সেনিকের উপস্থিতি ধরা পড়ার পর থেকে এই বিষ দূরীকরণে আজ পর্যন্ত কোনও দীর্ঘকালীন কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। ১০টি রাজ্যের ৮৬টি জেলার ৩২৪ ব্লকে এই বিষ ছড়িয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের হাল সব চেয়ে খারাপ। উত্তরপ্রদেশের ২০, বিহারের ১৫, অসমের ১৮, হরিয়ানা ১৩ জেলার পাশাপাশি এ রাজ্যের আটটি জেলা আর্সেনিকে আক্রান্ত। জেলার সংখ্যা কম হলেও ওই রাজ্যগুলিতে দূষণের মাত্রা বাংলায় ওই বিষের তীব্রতা অন্যান্য রাজের চেয়ে অনেক বেশি। তাই কেন্দ্র নতুন করে আর্সেনিক দূরীকরণের যে-প্রকল্প তৈরি করছে, তাতে পশ্চিমবঙ্গের উপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পে শুধু জল শোধনের বিষয়টি তো গুরুত্ব পাচ্ছেই। সেই সঙ্গে খাদ্যশৃঙ্খলে যে-ভাবে আর্সেনিক ছড়িয়েছে, তারও মোকাবিলা করার বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে।
এ দিনের সভায় জানানো হয়, ভূগর্ভ থেকে জল তুলে তা শোধনের পরে সরবরাহ করার চেয়ে ভূস্তরের উপরের জল শোধন করে সরবরাহ করা অনেক সহজ এবং তাতে খরচ অনেক কম। কিন্তু কোনও কোনও জেলায় ভূস্তরের জলেও যে আর্সেনিকের প্রকোপ ছড়াচ্ছে, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা উদ্বিগ্ন। সভায় যোগ দেন ভূ-জল পর্ষদের আঞ্চলিক প্রধান এস কে সামন্ত, আর্সেনিক টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান কুমারজ্যোতি নাথ, ফ্লুওরাইড টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান এস পি সিংহরায়, জলবিজ্ঞানী অরুণাভ মজুমদার, বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কল্যাণ ভট্টাচার্য, ফরিদাবাদে কেন্দ্রীয় ভূ-জল পর্ষদের অন্যতম আধিকারিক অম্নানজ্যোতি কর প্রমুখ।