প্রতিরক্ষায় ১০০ শতাংশ বিদেশি লগ্নির প্রস্তাব

ক্ষমতায় আসার পরে এ বার দেশে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের উৎপাদনে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির সীমা ২৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়ে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের তরফে একটি ‘নোট’ ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মন্ত্রকের মতামতের জন্য পাঠানো হয়েছে। এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আলোচনায় বসবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। সবুজ সঙ্কেত মিললে নিঃসন্দেহে তা হবে দেশের আর্থিক নীতির ক্ষেত্রে একটা বড়সড় সিদ্ধান্ত।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৪ ০৩:০৬
Share:

ক্ষমতায় আসার পরে এ বার দেশে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের উৎপাদনে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির সীমা ২৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়ে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের তরফে একটি ‘নোট’ ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মন্ত্রকের মতামতের জন্য পাঠানো হয়েছে। এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আলোচনায় বসবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। সবুজ সঙ্কেত মিললে নিঃসন্দেহে তা হবে দেশের আর্থিক নীতির ক্ষেত্রে একটা বড়সড় সিদ্ধান্ত।

২০০১ সালের মে মাসেই প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনে বিদেশি লগ্নির ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্পর্শকাতর এই ক্ষেত্রে এর সর্বোচ্চ সীমা ২৬ শতাংশেই বেধে দেওয়া হয়। এ বার মোদী জমানায় তা শুধু বাড়িয়ে দেওয়াই নয়, ১০০ শতাংশ করার প্রস্তাব নিয়ে আসা হয়েছে। প্রতিরক্ষা খাতে খরচের হিসেবে বিশ্বের দেশগুলির ভিতরে প্রথম সারিতে রয়েছে ভারত। কিন্তু প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের একটা বড় অংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এই পরিস্থিতি বদলে দিয়ে উৎপাদন ও কর্মসংস্থানের পরিবেশ সৃষ্টি করতেই সরকার নতুন পথে হাঁটতে চলেছে বলে সরকারি সূত্রে যুক্তি হাজির করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এর ফলে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের বিল অনেক কমে যেতে পারে।

Advertisement

যদিও নতুন সরকারের তরফে এই ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের কর্মচারীদের ৩টি সংগঠনই আপত্তি জানাবে বলে দাবি করেছেন শ্রমিক সংগঠন সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপন সেন। তাঁর মতে, গোটা বিষয়টি যেহেতু দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িয়ে, তাই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার মাধ্যমেই প্রতিরক্ষা উৎপাদন বাড়ানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে সঙ্ঘ পরিবারের শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘও এই ধরনের প্রস্তাবের বিরোধিতায় তাঁদের পাশেই রয়েছে বলে তপনবাবু দাবি করেছেন। তবে এই বিতর্কের ভিতরেই বাণিজ্য মন্ত্রকের প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে আরএসএস। নাগপুরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ গোপালের যুক্তি,“ যুদ্ধবিমান থেকে সাবমেরিন যাই হোক না কেন, বিদেশ থেকে আমদানির জন্য দেশকে নির্ভর করে থাকতে হবে কেন? এ সব তো আমরা দেশেই উৎপাদন করতে পারি।” কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও সঙ্ঘের ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভড়েকর প্রস্তাবের সমর্থনে মুখ খুলেছেন। বলেছেন, “ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী সমিতির সদস্য থাকার সুযোগ হয়েছে আমার। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ১০০ শতাংশ আমদানি করার থেকে দেশে এর উৎপাদনের পরিস্থিতির সৃষ্টি করাটাই শ্রেয়। এর ফলে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সূযোগ বাড়বে।”

যুক্তি ও পাল্টা বক্তব্য স্পষ্ট করে দিচ্ছে, নতুন সরকারের এই উদ্যোগ আগামী দিনে বড় বিতর্কের সৃষ্টি করতে চলেছে। এর ভিতরেই মোদী সরকার রেল ও পরিকাঠামো ক্ষেত্রেও বিদেশি লগ্নির দরজা খুলে দিতে চলেছে বলে সরকারি সূত্রে ইঙ্গিত মিলছে। মোদী সরকারের প্রথম সাধারণ বাজেট ও রেল বাজেটে এই সংক্রান্ত ঘোষনা থাকতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন