ভোট প্রচারে পথসভায় রাহুল গাঁধী। মঙ্গলবার দিল্লির কালকাজিতে। ছবি: পিটিআই
মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভারত সফর ঘিরে হইচই চরমে। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বারাক ওবামার ব্যক্তিগত সম্পর্কের কূটনীতি নিয়ে সরগরম দিল্লি। পাশাপাশি দিল্লির নির্বাচনী বিতর্কে কংগ্রেস প্রায় অপ্রাসঙ্গিক। তখনই ভোটের ১০ দিন আগে আসরে নামলেন রাহুল গাঁধী। মোদীকে তোপ দেগে দাবি করলেন, প্রধানমন্ত্রী এখন কেবল আত্মপ্রচার করে বেড়াচ্ছেন।
আজ দক্ষিণ দিল্লির কালকাজি থেকে গোবিন্দপুরী পর্যন্ত প্রায় দু’ঘণ্টা রোড-শো করেন রাহুল। তাতে ভিড় দেখে বিস্মিত কংগ্রেস নেতারাই। রাস্তার দু’পাশের উন্মাদনা দেখে উজ্জীবিত রাহুলও আজ অনেক দিন পর তাঁর বাঁধা গৎ থেকে বেরিয়ে আসেন। সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে চলতে অভ্যস্ত যিনি, তিনিই সোৎসাহে মাইক কেড়ে নিয়ে চড়া সুরে আক্রমণ শানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে।
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই সমালোচনা প্রায়ই করছে কংগ্রেস। সেটা তাদের রাজনৈতিক কৌশলের অঙ্গ। রাহুল সেই সুর বজায় রেখেই আজ বলেন,“মানুষ জানতে চাইছেন, বক্তৃতা দেওয়া বন্ধ করে কবে প্রধানমন্ত্রী কাজ শুরু করবেন! গরিবের জন্য কোনও কাজ হচ্ছে না। সরকার কিছু কর্পোরেট সংস্থার সুবিধা করে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করছে না! একমাত্র কংগ্রেসই পারে গরিবের হাত ধরতে।”
যদিও তাঁর মুখের কথা শেষ না হতেই প্রশ্ন ধেয়ে আসে, দিল্লির ভোট এখন বিজেপি বনাম আম আদমি পার্টিতে পর্যবসিত! কংগ্রেস কোথায়? জবাবে রাহুল বলেন, “তা সত্যি নয়। মূল বিতর্কের বিষয় হল দারিদ্র। এবং কারা তাঁদের জন্য কাজ করতে পারবেন সেটাই আসল কথা। দিল্লিতে ফের ক্ষমতায় আসতে চলেছে কংগ্রেস। তার পর গরিবদের কম দামে বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহ করা হবে। মাথা গোঁজার সংস্থানও করবে কংগ্রেস সরকার।”
রাহুলের এই প্রত্যয় হয়তো নিতান্তই ফাঁপা। সেটা কংগ্রেস নেতারাও ভাল করে জানেন। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ হল, দক্ষিণ দিল্লিতে রাহুলের রোড শো-কে কেন্দ্র করে যে উন্মাদনা আজ দেখা গিয়েছে তা কংগ্রেসে বহু আলোচিত বিতর্ক ফের উস্কে দিয়েছে। তা হল, রাহুলের ইতস্তত হাবভাব! লড়াইয়ের জন্য মাঠে না নেমে স্রেফ ঘরে বসে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া।
মিছিল শেষে রাজ্য নেতাদের প্রায় সকলেই ঘরোয়া আলোচনায় জানান, ভোট পর্যন্ত এ ধরনের রোড শো রাহুল চালিয়ে গেলে প্রত্যাশা ছাপিয়ে ফল মিলতে পারে। অন্তত কংগ্রেসের তিন বার বা চার বারের বিধায়কদের জেতার আশা তৈরি হবে। কিন্তু অজয় মাকেনরা এ-ও জানেন রাহুলের কাছ থেকে সেই আশা করা বৃথা।
রাহুলের আক্রমণের জবাব দিতে ছাড়েনি বিজেপি। কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু বলেন, “কংগ্রেস সব লন্ডভন্ড করে রেখে গিয়েছে। তাই এখন শুধরোতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদীকে।”