Mesopotamian Meal

৩ হাজার ৭০০ বছর পুরনো রেসিপি রেঁধে তাক লাগিয়ে দিলেন এই শিক্ষাবিদ

খাবারের ছবি দেওয়া টুইটটি ৫৬ হাজারের বেশি মানুষ লাইক করেছেন। সেটি রিটুইট করেছেন সাড়ে ১৭ হাজার মানুষ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২০ ১৮:২৪
Share:

ডান দিকের এই ফলক থেকেই রেসিপি পেয়েছেন বিল। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

লকডাউনে একটানা ঘরবন্দি থেকে সকলে যখন হাঁসফাঁস করছেন, সেই সময় ইতিহাস খুঁড়ে এনে থালায় সাজিয়ে দিলেন এক ব্যক্তি। আজ থেকে প্রায় চার হাজার বছর আগে মেসোপটেমিয়া সভ্যতায় ব্যাবিলনে যে রান্নার প্রচলন ছিল, সেই রেসিপি দেখে খাবার বানিয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিলেন তিনি। তা নিয়ে এই মুহূর্তে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। করোনা সঙ্কটে চারিদিকে যখন আতঙ্কের পরিবেশ, সেই সময় তাঁর এই উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে।

Advertisement

ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের অধ্যাপক বিল সাদারল্যান্ড। লকডাউনের জেরে সমস্ত গবেষণায় এখন ছেদ পড়েছে। তাই রান্নাঘরেই হাত পাকানোর সিদ্ধান্ত নেন বিল। তবে ইটালিয়ান বা চাইনিজের দিকে না গিয়ে ব্যাবিলনীয় খাবার রাঁধবেন বলে ঠিক করেন তিনি। সেই মতো ৩ হাজার ৭৭০ বছর পুরনো রেসিপি নিয়ে কাজে লেগে পড়েন।

তবে পরিশ্রম বিফলে যায়নি। বরং ঐতিহাসিক রেসিপি দেখে বানানো খাবার এত সুস্বাদু হয় যে, বিল নিজেই অবাক হয়ে যান। তাই খ্রিস্টপূর্ব ১৭৫০ সালের একটি ফলক, যা থেকে এই রেসিপি উদ্ধার হয়েছে, তার সঙ্গে নিজের বানানো খাবারের ছবি রবিবার টুইটারে পোস্ট করেন তিনি। তাতে লেখেন, ‘‘আমার ব্যাবিলনীয় রান্নায় হাত পাকানোর সিদ্ধান্তের জন্য দায়ী লকডাউন। ডান দিকে যে ফলকে রেসিপি খোদাই করা রয়েছে, সেটি খ্রিস্টপূর্ব ১৭৫০ সালের। এটি প্রাচীনতম রেসিপি। রান্না ভালই হয়েছে। আজ পর্যন্ত যত মেসোপটেমীয় খাবার খেয়েছি, তার মধ্যে এটাই সেরা।’’

Advertisement

বিল সাদারল্যান্ডের পোস্ট।

আরও পড়ুন: কার্গিল যুদ্ধের ফাঁকে প্যাংগংয়ে রাস্তা বানিয়েছে চিন, বলছেন প্রাক্তন সেনাকর্তা

তবে শুধুমাত্র একটি মাত্র পদেই থামেননি বিল। মোট পাঁচ রকমের খাবার তৈরি করেন তিনি, যার মধ্য ছিল ল্যাম্ব স্টু, টুহু নামে বিটের তৈরি একটি পদ, সাওয়ার ডো রুটি, এবং মাংসের চর্বি দিয়ে তৈরি একরকমের ব্রথ। ধাপে ধাপে কী ভাবে ওই পদগুলি তিনি বানিয়েছেন, আলাদা করে তাও সবিস্তারে ব্যাখ্যা করেন বিল। তাঁর সেই খাবারের ছবি দেওয়া টুইটটি ৫৬ হাজারের বেশি মানুষ লাইক করেছেন। সেটি রিটুইট করেছেন সাড়ে ১৭ হাজার মানুষ।

তাঁর রান্না করা পদ যে এ ভাবে ভাইরাল হয়ে যাবে, তা তিনি বিন্দুমাত্র আঁচ করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন বিল। জানলে আরও ভাল করে সাজিয়ে-গুছিয়ে ছবি পোস্ট করতেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর পোস্ট করা ছবির প্রশংসাই করেছেন সকলে। প্রশংসা করেছেন তাঁর রান্নারও। প্রাচীন রান্নাবান্নার কোনও রেস্তরাঁ থাকলে ভাল হত বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ। কেউ কেউ আবার বলেন, ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে, খাবারগুলি সুস্বাদু।

বিলকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন নেটাগরিকরা।

আরও পড়ুন: বোনের ধর্ষকের নাগাল পেতে খুন করে জেলে দাদা, ছ’বছর পর প্রতিশোধ তিহাড়ে​

তবে মেসোপটেমীয় সভ্যতার মতো প্রাচীন ভারতের রান্নাবান্না নিয়েও যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে মানুষের মধ্যে। বেদ ঘাঁটলে জানা যায়, মুনি-ঋষিদের মধ্যে একসময় পুরোডাশ রান্নার প্রচলন ছিল, আটা দিয়ে তৈরি করা হত এই পিঠে জাতীয় খাবার। দেবতাদের নিবেদনের পাশাপাশি অজের মাংস দিয়ে তা খাওয়ারও প্রচলন ছিল। সাহিত্যিক শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর একাধিক ইতিহাসাশ্রয়ী কাহিনিতে শূলপক্ব মাংস সহ পুরোডাশ ভক্ষণের কথা লিখেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন