COVID-19

Corona: কোভিডের পরও ক্লান্তি কাটছে না। দীর্ঘ অসুস্থতায় কি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ছেন?

কোভিড লড়াইয়ে আপনার পাশে রয়েছে আনন্দবাজার ডিজিটাল। শুরু হল শরীরচর্চা, মনের যত্ন এবং খাওয়া-দাওয়ার নতুন গাইড ‘ভাল থাকুন’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২১ ১৮:৪৯
Share:

প্রতীকী ছবি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

কোভিডের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ে ক্লান্ত পৃথিবী। যে লড়াই নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পরেও জারি থাকে বহুদিন। তবে আপনি একা নন। সেই লড়াইয়ে আপনার সঙ্গে আছে আনন্দবাজার ডিজিটাল। শরীরচর্চা, মনের যত্ন এবং খাওয়া-দাওয়ার নতুন গাইড ‘ভাল থাকুন’।

Advertisement

কোভিডের মতো কঠিন অসুখের বহুদিন রেশ থেকে যায়। রোগ সেরে যাওয়ার অনেকদিন পরও ক্লান্তি, হজমের গোলমাল, একটুতেই হাঁপিয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা থেকে যায়। এই দীর্ঘ অসুস্থতায় অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। তাঁদের মনে ভয় তৈরি হয়, আর কখনও কী সম্পূর্ণ ভাবে সুস্থ হওয়া সম্ভব নয়? বহুদিন এই ধরনের চিন্তুা যদি মনের মধ্যে থেকে যায়, তা হলে কিছু ক্ষেত্রে মানসিক জটিলতাও তৈরি হতে পারে। কী ভাবে সামাল দেওয়া যায় এই পরিস্থিতির। শরীরের পাশাপাশি মনের যত্ন নেবেন কী করে?

মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, এই সমস্যার সূত্র একটা রোগের সঙ্গে আমাদের ব্যক্তি সত্তার সংজ্ঞা জুড়ে যাওয়া। তিনি বললেন, ‘‘এখন বেশির ভাগ মানুষই হয় কোভিড রোগী নয় কোভিড-জয়ী। একটা রোগের সঙ্গে আমাদের পরিচয় জুড়ে যাওয়াটা আমি সমর্থন করতে পারি না। সেটার বাইরে বেরিয়ে নিজস্ব সত্তা ফিরিয়ে আনাটাই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে আমার মনে হয়।’’

Advertisement

যথেষ্ট জটিল অসুখ কোভিড। তাই সেরে যাওয়ার পরও নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত সকলের। এবং সেই অনুযায়ী চলা উচিত। কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় যখন, তার বাইরেও মানুষ নিজের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কোনও একটা ধারণা তৈরি করে নেন। ‘আমি কি তা হলে চিরকাল অসুস্থ হয়েই থাকব? কখনওই সম্পূর্ণ সেরে উঠব না? কোনও দিনই আগের মতো জীবন কাটাতে পারব না’ — এই জাতীয় চিন্তা তখন তাঁদের মনে বাসা বাঁধে। অনুত্তমা জানালেন, নিজেই রোগ নির্ণয় করে একটা ধারণা তৈরি করে নেওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক। ‘‘এতে কোনও রকম সমাধান হবে না। বরং নিজের শারীরিক অবস্থা নিয়ে একটা চরম ভ্রান্ত ধারণা মনের মধ্যে তৈরি হবে। তার চেয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বললে তিনি সবচেয়ে ভাল বুঝিয়ে বলতে পারবেন, কোন পরিস্থিতি সাময়িক, এবং সেটার মোকাবিলা কী ভাবে করতে হবে,’’ বললেন অনুত্তমা।

তবে শুধু একার প্রয়াসে এই মানসিক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। বহু মানুষের মনে তাঁদের কাজ নিয়ে একটা ভীতি তৈরি হয়ে গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে যে সংস্থায় তিনি কাজ করেন, সেখানকার সহকর্মীদেরও একটু সহযোগিতার প্রয়োজন। অনুত্তমার কথায়, ‘‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রভাবিত হননি এমন মানুষের সংখ্যা বোধহয় খুব কম। হয়ে নিজের হয়েছে, নয়ত প্রিয়জনের। তাই একটা সংস্থার মধ্যে একটা সহযোগিতার পরিবেশ তৈরি হওয়াটাই কাম্য। মানুষের মনে এখন একটা ভয় ঢুকে গিয়েছে, আমি যদি ঠিক মতো এই সময় কাজ না করতে পারি, তা হলে অন্য কেউ আমার জায়গাটা নিয়ে নেবে। সেই ভয়টা যেন কাজ না করে, সেটা দেখা প্রয়োজন। বাকিরা যদি অভয় দেন, যে নিজের শরীর বুঝে নিজের ক্ষমতা অনুযায়ী কাজ করুন, বাকিটা আমরা সামলে দিচ্ছি, তাহলে অনেকটাই সুবিধে হয়। যাঁরা সাহায্য করছেন, তাঁদের ভাবা উচিত, হয়ত একটা সময়ে এই একই সাহায্য তাদেরও প্রয়োজন হতে পারে। তখন বিনিময় তিনি একই রকম সাহায্য পাবেন। এই সহজ আদান প্রদানটা তৈরি হয়ে গেলে মানুষের মনের ভয়টা অনেকটাই কেটে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন