ওজন বাড়ে নিজেদের ভুলেই, কাজেই ভুল এড়ান। ছবি: শাটারস্টক।
পৃথিবীর ৯টি দেশের ১০ হাজার জন নবদম্পতির উপর স্টাডি করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে বিয়ের পর দু’–এক মাসের মধ্যে স্বামী–স্ত্রী দুইয়েরই ওজন গড়ে ২ কেজির বেশি বাড়ে৷ মধুচন্দ্রিমার পর্ব যত দিন থাকে, ওজন বাড়তেই থাকে৷ হাই ক্যালোরি খাবার খাওয়া, শুয়ে–বসে থাকা ইত্যাদি দিয়ে এর ব্যখ্যা সবসময় মেলে না৷ এবং সবচেয়ে বড় কথা, সতর্ক না হলে এর পর তাকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা খুবই কঠিন কাজ৷
পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বিজ্ঞানীদের গবেষণা থেকে এ রকম আরও বেশ কিছু কারণ পাওয়া গিয়েছে, যা ডায়েটিং ও ব্যায়ামের সুফলকে অবলীলায় হারিয়ে দিতে পারে৷ সে সবই আধুনিক জীবনের অঙ্গ, কাজেই পুরোপুরি ছেঁটে ফেলা সম্ভব নয়৷ আর তার চেয়ে বড় কথা, তাদের কারণে যে আবার ওজন বাড়তে পারে, তা বোঝাও সবসময় সম্ভব নয়৷ ফলে প্রচুর চেষ্টা সত্ত্বেও অনেক সময় ওজন কমার হার মনমতো হয় না৷
ডায়েট ও ব্যায়ামের সঙ্গে আর কী কী নিয়ম মানলে ওজন কমার পথ নিষ্কণ্টক হয় জানেন? বদ্ধ জিমে ব্যায়াম করলে যতটুকু ওজন কমে, সেই একই ব্যায়াম যদি খোলা জায়গায়, গায়ে একটু রোদ মেখে করেন, ভিটামিন ডি–র দৌলতে অনেক বেশি কাজের কাজ হবে৷
আরও পড়ুন: ক্যানসার থেকে ডায়াবিটিস, রোগ নিয়ন্ত্রণে পাতে রাখুন এই জাদু চাল!
নাইট শিফ্ট এড়িয়ে যেতে পারলে সবচেয়ে ভাল৷
কোন কোন কারণে ওজন বাড়ে
ডায়াবিটিস জার্নালে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, শরীরে রোদ লাগানোর পরিবর্তে সাপ্লিমেন্ট খেয়ে যাঁরা ভিটামিন ডি–র মাত্রা ঠিক রাখেন, হাজার ব্যায়াম সত্ত্বেও অনেক সময় তাঁদের ওজন আশানুরূপভাবে কমে না৷
এসি–তে ব্যায়াম করলে ও দিনের বেশির ভাগ সময় এসিতে কাটালে ওজন কমার পালে লাগে ভাটার টান৷ কারণ শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে শরীরকে যতটুকু খাটতে হয়, যত ক্যালোরি পোড়াতে হয়, ঠান্ডা ঘরে তার পরিমাণ কমে যায়৷
লো ক্যালোরি খাবার খাওয়া সত্ত্বেও যদি ওজন না কমে, তার মূলে প্লাস্টিকের হাত আছে কি না দেখতে হবে৷ অধিকাংশ প্লাস্টিক পাত্রে থাকে বিসফেনোল–এ বা বিপিএ নামের রাসায়নিক৷ এই সব পাত্রে খাবার রাখলে বা র্যাপারে জড়িয়ে নিলে, বিপিএ মিশে যায় খাবারে৷ তার পর শরীরে এসে ইস্ট্রোজেন হরমোনের মতো আচরণ করে৷ নিয়মিত এই খাবার খেলে চর্বি নিয়ন্ত্রণে গোলমাল হয়ে ওজন কিছুটা বাড়তে পারে৷
বাসি বা রাসায়নিকে ভরপুর খাবার খেয়ে ঘন ঘন এডি–৩৬ ভাইরাস সংক্রমণে ভুগলে ওজন কমার বদলে বাড়ে৷ এবং এই বাড়তি ওজন কমাতে ৬ মাসের উপর সময় লেগে যায়৷
সমস্যা হয় ঘন ঘন মিল স্কিপ করলে৷ একটা মিল না খেলে পরে এত খিদে পায় যে ভুলভাল খাবার খাওয়া হয়ে যায়৷ খাবারের পরিমাণও বাড়ে৷
লেট নাইট পর্যন্ত কাজ বা আনন্দ করলে শরীরের ক্যালোরি খরচের হার কমে যায় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা৷
‘আমেরিকান ফিজিওলজিকাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ছোটবেলায় যে সব মানুষ মধ্যকর্ণের এক বিশেষ ধরনের সংক্রমণে ভোগেন, পরবর্তী কালে তাঁরা মোটা হয়ে যেতে পারেন৷ কারণ এই সংক্রমণের ফলে এমন একটি নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা বেশি খেয়ে ফেলাকে নিয়ন্ত্রণ করে৷ অতএব ওজন বশে রাখতে চাইলে কানের সংক্রমণকেও গুরুত্ব দিতে হবে৷
আরও পড়ুন: রং খেলার সময় চুলের এ সব যত্ন নিচ্ছেন তো? নইলে চুল পাতলা হয়ে টাক পড়বে
ব্যায়াম বাদ নয়, যে ভাবেই হোক সময় বার করুন।
ওজন কমানোর টিপ্স
সকালের রোদে খোলা জায়গায় ৩০–৪৫ মিনিট ব্যায়াম করুন৷ দিন–রাত এসিতে থাকবেন না৷এসি এড়িয়ে চলুন দিনের বেশির ভাগ সময়। টাটকা খাবার খান৷ সম্ভব হলে অর্গানিক ফুড৷ প্লাস্টিকের পাত্রে বা র্যাপারে খাবার রাখবেন না৷ ভরপেট খাওয়ার সময় না পেলে ফল, বাদাম, স্যালাড ইত্যাদি খেয়ে নিন যাতে পরে বেশি না খাওয়া হয়ে যায়৷ নাইট শিফ্ট এড়িয়ে যেতে পারলে সবচেয়ে ভাল৷ নিতান্ত সম্ভব না হলে দুপুরে ভাল করে ঘুমোন৷ কিন্তু সকালের ব্যায়ামে দাড়ি টানবেন না৷ কানে সংক্রমণ হলে সারিয়ে ফেলুন ঝটপট৷