diseases

মারাত্মক শ্রম ছাড়াই মেদ এড়িয়ে ফিট থাকুন এ সব উপায়ে

Advertisement

সুজাতা মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৯ ১৫:৫৩
Share:

শুধু স্লিম নয়, লক্ষ্য থাকুক ফিট থাকাতেও। ছবি: শাটারস্টক।

পেশাগত ভাবে প্রয়োজন না থাকলে উচ্চতা অনুযায়ী যা ওজন হওয়া উচিত তার চেয়ে ৫–৭ কেজি, এমনকী ৮–৯ কেজিও যদি বেশি থাকে মুষড়ে পড়ার কিছু নেই ৷ ওইটুকু বেশি ওজন কমানোর জন্য জীবনপণ করারও দরকার নেই ৷ কারণ তেমন কোনও রোগবালাই না থাকলে ও মন ও শরীর যদি ফিট থাকে, এটুকুতে কোনও ক্ষতি হয় না ৷ উল্টে লাভ হয় বিস্তর ৷ কিন্তু ওজনকে নিক্তির মাপে নিয়ে আসতে গিয়ে যদি ভুলভাল রাস্তায় চলে যান, তবে কিন্তু বিপদের আশঙ্কা প্রতি পদে ৷

Advertisement

রোগা নয়, স্লিম

স্লিম শব্দটির সঙ্গে সুস্বাস্থ্যের যোগ আছে ৷ লো ক্যালোরির সুষম খাবার পেটভরে খেয়ে, সঠিক ভাবে জীবনযাপন করে, ভাল করে ঘুমিয়ে ও দিনে ৪০–৪৫ মিনিট মাঝারি ব্যায়াম করে যাঁরা ওজন বশে রাখেন, তাঁরা হলেন স্লিম ৷ কিন্তু এতখানি নিয়ম–নিষ্ঠা অনেকেরই থাকে না ৷ ফলে ওজন কমাতে গিয়ে তাঁরা ভুল পথে চলে যান ৷ ওজন কমে, কিন্তু ফিট হওয়ার সৌভাগ্য জোটে না ৷

Advertisement

ধরা যাক, ভোজন রসিক বলে খাওয়ায় রাশ না টেনে প্রচুর ব্যায়াম করে অতিরিক্ত ক্যালোরি পোড়ানোর চেষ্টা করেন। বা বহু সময় ধরে লো ইনটেনসিটি ব্যায়াম করে যান ৷ কিম্বা কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট জাতীয় খাবার একেবারে কমিয়ে দিয়ে অতিরিক্ত প্রোটিন খেয়ে ডায়েটিং করেন ৷ অথবা সারা দিন ফল, টক দই ইত্যাদি খেয়ে থাকেন কি মিল সাপলিমেন্ট খান ৷ সব ক্ষেত্রেই ওজন হয়তো কমে, কিন্তু তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কারও দেখা দেয় ক্লান্তি, অপুষ্টি, অ্যানিমিয়া তো কারও কিডনির বা অন্য কোনও অসুখ ৷

আরও পড়ুন: অতিরিক্ত জল খান? মস্ত বিপদ অপেক্ষা করছে কিন্তু!

ফিট হওয়ার তালিকায় প্রথম প্রাধান্য হোক স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন।

খুব রোগা হলে হাড়ের স্বাস্থ্য এমনিই খারাপ থাকে ৷ তার উপর ভাল করে না খেলে ও বেশি ব্যায়াম করলে তা আরও খারাপ হয় ৷ খারাপ হয় ত্বক, চুল, দাঁত, মেজাজ ৷ কমে প্রজনন ক্ষমতা ৷

অনেক সময় আবার অতিরিক্ত ডায়েটিং করার পর প্রচণ্ড খাওয়ার ইচ্ছে জাগে ৷ এবং সে সবই ভুল খাবার৷ কয়েক দিন প্রচুর খাওয়ার পর অপরাধবোধ থেকে শুরু হয় প্রায় না খাওয়া ৷ এই জিনিস বার বার হলে ওজন তো কমেই না, স্বাস্থ্যও খারাপ হতে শুরু করে ৷ বয়স বাড়লে তা টের পাওয়া যায় ৷ কাজেই ফ্যাট নিয়ে অতিরিক্ত মাথা ঘামাবেন না ৷ ফ্যাট মানেই অস্বাস্থ্য নয় ৷

চর্বির ভালমন্দ

চর্বি একটু থাকা ভাল ৷ ত্বকের চাকচিক্য থাকে, হাড় থাকে নিরাপদ, শরীর সুস্থ থাকে, আয়ু ও স্মৃতিশক্তি বাড়ে ৷ একটু মোটা মানুষেরা সচরাচর বেশি হাসিখুশি ও সদালাপি হন ৷ তবে বেজায়গায় প্রচুর মেদ থাকা ভাল নয় ৷ সারা শরীর ছিপছিপে অথচ পেটে–কোমরে প্রচুর চর্বি থাকলে প্রেশার, সুগার, কোলেস্টেরল বাড়ার আশঙ্কা বেশি ৷ অস্টিওআর্থ্রাইটিস, ইস্কিমিক হৃদরোগের আশঙ্কাও বাড়ে ৷ কাজেই বিএমআই ২৫–এ রাখার তাগিদে দিন–রাত খাটাখাটি না করে, পেট–কোমরের দিকেও নজর দিন ৷ মাপ মতো জগিং, সাঁতার ইত্যাদির পাশাপাশি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো পেট–কোমরের পেশী শক্তপোক্ত করার ব্যায়াম করুন৷ তাতে যদি বিএমআই ৩০–এর কাছাকাছি চলে যায়, এমন ক্ষতি কিছু নেই, যদি না আপনি খুব বেশি অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করেছেন।

আরও পড়ুন: টেনশন হলেই পেট গুড়গুড়? অবহেলা করলে বিপদ ডেকে আনছেন কিন্তু!

অল্পবিস্তর ব্যায়াম করুন, তাতে ফিট থাকার পথে এগিয়ে থাকবেন।

ফিট থাকার রেসিপি

সব সময় ওজনের কথা না ভেবে শরীর সুস্থ রাখার চেষ্টা করুন ৷ লো ক্যালোরির সুষম খাবার মোটামুটি পেট ভরে খান ৷ ৩০–৪৫ মিনিট জোর পায়ে হাঁটা, সাঁতার বা সাইক্লিং ও ২৫–৩০ মিনিট যোগা করুন ৷ সঙ্গে মন শান্ত রাখতে মেডিটেশন ও ব্রিদিং এক্সারসাইজ করলে তো কথাই নেই ৷ মর্নিং ওয়াকের অভ্যাস থাকলে, খুব ভাল কথা। তবে সে ক্ষেত্রে রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যেতে হবে বা ব্যবস্থা করতে হবে হালকা একটু দিবানিদ্রার ৷ না হলে ক্লান্তির চোটে বরবাদ হবেন ৷ পেট–কোমর ভারী হলে, সে দিকে আলাদা করে নজর দিন ৷ কোমরে ব্যথা থাকলে বা ৪০–এর উপর বয়স হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো চলুন ৷ সপ্তাহে এক দিন ব্যায়াম থেকে ছুটি নিন ৷ সে সময় ভাল করে ঘুমোন ৷ রিল্যাক্স করুন ৷ অল্পবিস্তর অনিয়ম করতে পারেন ৷ ওইটুকু অনিয়ম পুষিয়ে নিতে পরের কয়েক দিন এক মুঠো ভাত কম খাওয়া বা ৫–১০ মিনিট এক্সট্রা হাঁটাই যথেষ্ট ৷ টেনশন বাড়লে খুব তাড়াতাড়ি তা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করুন ৷ কারণ টেনশনের হাত ধরেই অস্বাস্থ্যকর জীবনের সূত্রপাত হয় অনেক সময় ৷ লাইপোসাকশন করে পেট–কোমর কমালে কোনও ক্ষতি নেই ৷ কিন্তু তারপরও ব্যায়ামে ঢ়িলে দিলে হবে না ৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন