ইরিটেবল বাওয়েল সিস্টেম আদতে লাইফস্টাইল অসুখের তালিকায় পড়ছে। ছবি: শাটারস্টক।
পরীক্ষা কেন্দ্রে গেটে দাঁড়িয়ে দরদর করে ঘামছেন। কখনও বা বাড়ি থেকে বেড়িয়ে কিছুদূর গিয়েই ফিরে এলেন। ভাবছেন, এক বার টয়লেটে যেতে পারলে ভাল হয়। ভাবছেন, পরীক্ষার উদ্বেগ আর বেরোনোর তাড়াহুড়োই মনের উপর চাপ ফেলে মামুলি পেটের অসুখ বাঁধিয়েছে বোধ হয়। বেরনোর সময় ঘন ঘন বাথরুমে ছোটা বা টেনশনের সময় পেটে মোচড় অনেকেই পেটের সমস্যা বলে দেগে দেন।
কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন গোড়ায় গলদ। পেটের অসুখ মোটেই নয়, বরং খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনের অনিয়মের কারণেই আপনি এই সমস্যায় ভুগছেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় রোগটির নাম ‘ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম’ বা আইবিএস। এই রোগে রোগীর নিয়মিত মলত্যাগের অভ্যাসটাই বদলে যায়। যখন তখন মলত্যাগের প্রবণতা তৈরি হয়। বিশেষত উদ্বেগের সময় সমস্যা বাড়ে।
আইবিএস-মানসিক চাপ সম্পর্ক
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কৃষ্ণাঞ্জন চক্রবর্তী বলছেন, উদ্বেগ, মানসিক চাপ এই ধরনের মানসিক সমস্যাগুলির সঙ্গে সরাসরি হজমের কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু এই সমস্যাগুলি আমাদের জীবনযাপনে যে বড় পরিবর্তন আনে, সেগুলিই আমাদের আইবিএস-এর দিকে ঠেলে দেয়।
আরও পড়ুন: ভাল থাকতে সিঙ্গল থাকুন, রইল একা থাকার পক্ষে সাত যুক্তি
নিয়মিত ঘুমের অভাব, জাঙ্কফুড বেশি খাওয়া আইবিএস ডেকে আনে অনেক বেশি করে। আগে মনে হত আইবিএস শুধু ব্যাকটিরিয়াল ইনফেকশন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, আরও নানা কারণে কোলনের গতি অস্বাভাবিক হয়ে গিয়ে এই রোগ হতে পারে। আগে পঞ্চাশোর্ধদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখে যেত। এখন কমবয়সিরাও অনেকে এই রোগে আক্রান্ত। এটিকে আজকাল লাইফস্টাইল ডিজিজের তালিকায় ফেলা হয়।
যখন তখন পেটে ব্যথাও ইররিটেবল বাওয়েল সিস্টেমের অন্যতম উপসর্গ।
মূল উপসর্গ
এই অসুখে মূলততলপেটে মাঝে মাঝেই মোচড় দেওয়া ব্যথা হয়। সঙ্গে যখন তখন মলত্যাগের প্রবণতা দেখা যায়। এ ছাড়াও মলদ্বার থেকে রক্তপাত, বমিভাব ও রক্তালপতাও দেখা যায় কোনও কোনও ক্ষেত্রে।
উপসর্গ অনুযায়ী আইবিএস-এর চিকিৎসা বদলায়। জীবনাচরণ বা খাদ্যাভাসের পরিবর্তনে সমস্যার অর্ধেক সমাধান সম্ভব। এর সঙ্গে অল্প কিছু ক্ষেত্রে কিছু ওষুধের প্রয়োজন হয়।
আরও পড়ুন: তরকারি থেকে চা, সবেতেই আদা দেন? তা হলে সাবধান!
কী করবেন, কী করবেন না
প্রতি দিন একসময়ে খাওয়া অভ্যেস করুন। দুপুর বা রাতের খাবার বাদ দেওয়া চলবে না কোনও মতেই। রাতের খাওয়ার সময় এগিয়ে আনুন। অতিরিক্ত চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করুন। ডাল ও ডালজাতীয় খাবার, অতিরিক্ত ফল, ফলের জুস এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। দুধ-দুধজাতীয় খাবার কম কাওয়াই ভাল, তবে কিছু ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক খানিকটা উপকারও করে। শরীরের ধরনের উপর নির্ভর করে তা। তাই এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নিন। প্রতি দিন কমবেশি ব্যায়াম করুন। খুব চাপ থাকলে হাঁটুন। তাতে পরিপাকতন্ত্র ভাল থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy