পা শরীরের ভার বহন করে, তাই এই অঙ্গকে অবহেলা নয়। পায়ের যত্ন নিতে হবে সারা বছরই
বছরের এই সময়টা শুষ্ক ত্বকের সমস্যায় প্রায় সকলেই ভোগেন। মুখ ও হাতের যত্নে আমরা যতটা সময় ব্যয় করি, পায়ের দিকে সে ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। শীতকালে পা ফাটেও বেশি। তার মধ্যে যদি আবার ধুলোবালি লাগে, তা হলে আরও সমস্যা। এগজ়িমা, ডায়াবিটিস, থাইরয়েডের রোগীরা পা ফাটার সমস্যায় বেশি ভোগেন। বাড়িতেই কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে পায়ের পাতা এবং গোড়ালির যত্ন নেওয়া যায়। আর এই যত্ন বছরভরই নেওয়া উচিত।
- প্রত্যেক দিন স্নানের সময়ে পা ভাল করে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে ময়শ্চারাইজ় করা প্রয়োজন।
- রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পায়ের তলায় নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল দিয়ে মাসাজ করলে শুষ্ক ত্বক মোলায়েম হবে।
- পেট্রোলিয়াম জেলিও ব্যবহার করা যায়। এটি পায়ের শুষ্ক ত্বক বা জুতোর জন্য কড়া পড়ে যাওয়া জায়গা মেরামত করে। পায়ের ফাটা অংশ সারিয়ে তুলতে পেট্রোলিয়াম জেলি বা তা দিয়ে তৈরি ক্রিম বেশ কার্যকর।
- গোড়ালির ফাটা রোধ করতে কিংবা পা সুন্দর রাখতে গ্লিসারিন খুব ভাল কাজ করে।
- ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের স্বাস্থ্য ফেরাতে মধু কার্যকর। তাই পা ফাটার সমস্যা থাকলে, মধু এবং গোলাপ জলের মিশ্রণ লাগানো যেতে পারে। মিনিট দশেক এই মিশ্রণ লাগিয়ে রেখে মাসাজ করে ধুয়ে নিতে হবে। তার পর ভাল ফুট ক্রিম লাগিয়ে নিন।
- সপ্তাহে এক দিন পায়ে স্ক্রাব করতে হবে। এতে ত্বকের মৃত কোষ, ময়লা দূর হয়ে যাবে।
- শীতের রুক্ষতা থেকে পা-কে রক্ষা করতে মোজার চেয়ে ভাল কিছু হয় না। তবে সুতির মোজা পরাই বাঞ্ছনীয়।
ফোসকার সমস্যা
পায়ের যে সমস্যায় সকলেই কমবেশি ভোগেন তা হল, ফোসকা। নতুন জুতো থেকে ফোসকা পড়ে বা বেশি হাঁটাহাঁটি করলেও পড়ে। কিছু নিয়ম মেনে চললে এটি এড়ানো যায়। দু’পায়ের কড়ে আঙুল, গোড়ালির উপরের অংশে সাধারণত ফোসকা পড়ে। নতুন জুতোর এই অংশে নারকেল তেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগালে ফোসকার সম্ভাবনা কমবে। পায়ে ফোসকা পড়লে, সেই জায়গায় বরফ দিতে পারেন। মধু বা অ্যালোভেরা জেলও কাজ দেবে। অনেক সময়ে ফোসকা পেকে যায়। সে রকম হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম লাগান সেখানে।
পায়ের দুর্গন্ধ
অনেকেই পায়ের দুর্গন্ধ নিয়ে নাজেহাল হন। মূলত পায়ে ঘাম জমে ব্যাক্টিরিয়া বা ছত্রাক আক্রমণ ঘটে, যা থেকে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। আবার ডায়াবিটিস বা কিডনির অসুখ থাকলেও এই সমস্যা দেখা যায়। এর থেকে রেহাই পাওয়ারও উপায় আছে। অনেকের পা বেশি ঘামে, চিকিৎসার ভাষায় এটাকে হাইপারহাইড্রোসিস বলা হয়। যাঁদের পায়ে দুর্গন্ধ হয়, তাঁরা ঢাকা জুতো না পরার চেষ্টা করলে ভাল। পায়ে হাওয়া লাগে এমন জুতো পরলে, ঘাম কম হবে। প্রত্যেক দিন পরিষ্কার মোজা পরতে হবে। আর মোজা হতে হবে সুতির। স্নানের সময়ে পা ভাল করে পরিষ্কার করা প্রয়োজন। অ্যান্টিব্যাক্টিরিয়াল সাবান ব্যবহার করা যেতে পারে। সারা দিনের কাজের পর ঈষদুষ্ণ জলে এপসাম লবণ দিয়ে পা ডুবিয়ে রাখতে পারেন। এতেও দুর্গন্ধের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ছত্রাক বা ব্যক্টিরিয়ার আক্রমণ থেকে বাঁচতে মাঝেমধ্যে জুতো রোদে দেওয়া প্রয়োজন। দরকারে জীবাণুনাশক স্প্রে ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)