ছিমছাম সাজেও ঘর দেখতে ভাল লাগে। আসবাবের বাড়াবাড়ি এড়িয়ে কী ভাবে সাজাবেন আস্তানাটি? ছবি: সংগৃহীত।
বিশাল বাড়ি। বৈঠকখানা, খাবার জায়গা নিয়ে প্রকাণ্ড হল। কিন্তু সেই জায়গা দখল করেছে ঢাউস আসবাব। এক কোণে সেগুন কাঠের সূক্ষ্ম কাজ করা আরামকেদারা। কোথাও আবার বাসন রাখার শোকেস। মার্বেলের সুদৃশ্য টেবিল ঘরের মাঝখানে। আছে সবই। হয়তো একটু বেশি। আর তাতেই দেখতে লাগছে জবরজং।
বাড়িতে ঠাসা আসবাব কারও কাছে বৈভবের প্রকাশ। তবে আধুনিক অন্দরসজ্জা শিল্পীরা বলছেন, অন্দরমহলের সাজ হোক ছিমছাম, মানানসই। ঘরের সিংহভাগ জুড়ে জিনিসপত্র থাকলে, হাঁটাচলার পক্ষেও তা যেমন কষ্টকর, তেমনই তা বেমানান। সে কারণেই অনেকে ঝুঁকছেন ‘মিনিমালিজ়ম’-এর দিকে। অর্থাৎ অন্দরসাজ হবে স্বল্প, প্রয়োজনানুযায়ী। কিন্তু তাতে থাকবে দৃষ্টিনান্দনিকতা।
এমন ভাবে নতুন বাড়িটি সাজিয়ে তুলতে চান? ছোট ঘরও দেখতে লাগবে বড়, কোন কৌশলে ছিমছাম সাজে গৃহকোণ সাজাবেন?
ক্যাবিনেট
মাপ বুঝে ক্যাবিনেট এবং ওয়াড্রোব করালেও ঘরে বেশি জায়গা পাওয়া যাবে। ছবি:সংগৃহীত।
অন্দরসজ্জায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ক্যাবিনেট। রান্নাঘরে ক্যাবিনেট রাখা হয় হেঁশেলের জিনিসপত্র, বাসনকোসন গুছিয়ে রাখার জন্য। তবে বসার ঘর থেকে শোয়ার ঘর, দেওয়ালজোড়া ক্যাবিনেট শুধু জায়গা বাঁচায় না, এতে প্রচুর জিনিসপত্রও রাখা যায়। বড় একটা আলমারি কিনলে মেঝে জুড়ে থাকবে। তার বদলে একটু ভেবে ঘরের মাপ এবং প্রয়োজনমতো জায়গায় ক্যাবিনেট সেই সমস্যার সমাধান করতে পারে।
রং:
ঘিয়ে, ধূসর বা হালকা রঙের ব্যবহারে ঘর দেখায় আলোকোজ্জ্বল। ছবি: সংগৃহীত।
দেওয়ালে উজ্জ্বল হলুদ, হালকা সবুজ, লাল— এমন সব রং এখন কিছুটা সেকেলে। বরং এখন অন্দরসজ্জায় ধূসর, বাদামি, ক্রিম, সাদা রঙের ব্যবহার হচ্ছে। ধূসর বা ক্রিম রং অভিজাত ছোঁয়া আনতে পারে ঘরে। রঙের আতিশয্যে চোখ ধাঁধিয়ে যায় না। আবার ঘর দেখতেও লাগে আলোকোজ্জ্বল। বাদামি বা ধূসর রঙের বিভিন্ন পরতও সঠিক ভাবে ব্যবহার করলে চোখের পক্ষে আরামদায়ক হয় ।
জিনিস থাক স্বল্প: জিনিসপত্র এলোমেলো থাকলে সৌন্দর্য নষ্ট হবেই। নিয়মিত জিনিসপত্র গোছানোর চেয়েও ভাল হয় যদি প্রয়োজন বুঝে তা কেনা হয়। একটি টেবিল ফুলদানি আর টেবিল ল্যাম্প দিয়ে যেমন সাজানো যায়, তেমনই সেখানে বই, গাছ এমন হরেক জিনিস যোগ করা যায়। যত বেশি জিনিস ততই গোছানোর ঝক্কি, ধুলো ঝাড়ার সমস্যা।
আড়ালের দরকার: বসার জায়গা হোক বা খাট, ভিতরে স্টোরেজ বা জিনিসপত্র রাখার স্থান থাকলে সুবিধা সকলেরই। এতে চট করে যে কোনও জিনিস ভরে ফেলা যায়। বাইরে থেকেও পরিচ্ছন্ন লাগে। অথচ জরুরি সামগ্রী রাখার স্থানাভাব হয় না।
আসবাব: আসবাব যতটা সাধারণ, ঘরোয়া হবে ততই ব্যবহারের সুবিধার পাশাপাশি মানানসই হবে। ইদানীং ছোট জায়গায় ব্যবহারে উপযোগী সোফা, দেরাজ, চেয়ার-সহ অনেক কিছুই মেলে। খাবার টেবিল যেমন কাঠের হতে পারে তেমন সুদৃশ্য পাথরেরও হয়। ঘরের আবহে কোনটি মানানসই বোঝা প্রয়োজন। আবার ভাঁজ করা টেবিল, চেয়ারও জায়গা বাঁচায়।