ক্লান্তি, আমায় ক্ষমা করো

উৎসবের মরসুমে হইহুল্লোড়ের পিছু পিছু হাজির হয় ক্লান্তি। রইল তাকে বুড়ো আঙুল দেখানোর টোটকা।

Advertisement

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৯ ০০:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

পুজোয় আনন্দের পাশাপাশি পরিশ্রমও কম নয়। ঠাকুর দেখা, আড্ডা দেওয়া, খাওয়াদাওয়া... সব কিছু সামলাতে গিয়ে অতর্কিতে ক্লান্তি এসে যায়। এ সময়টায় পেটের সমস্যা, মাথা ধরা, গায়ে, হাত-পায়ে ব্যথা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু স্ট্রেস কাটিয়ে পরের দিনের জন্য আবার ফুরফুরে হয়ে উঠতেই হবে। তাই হইহুল্লোড়ের সঙ্গে রিল্যাক্সেশনও জরুরি।

Advertisement

ঠাকুর দেখা তো মাস্ট। কিন্তু তার ফলে শরীর জুড়ে যে ক্লান্তি নেমে আসে, তা তাড়াবেন কী করে? বাড়ি ফিরে হালকা গরম জলে পা ডুবিয়ে আধঘণ্টা বসে থাকুন। চাইলে জলের মধ্যে বাথ সল্ট বা এসেনশিয়াল অয়েল দিতে পারেন। পা ডুবিয়ে রাখার সময়ে হার্বাল টি, গ্রিন টি খেলে তরতাজা লাগবে। কেউ চাইলে ঠান্ডা জুসও নিতে পারেন। দেখবেন, সব স্ট্রেস নিমেষে উধাও।

পুজোয় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে সর্দি-কাশি হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। সে ক্ষেত্রেও গরম জলে পা ডুবিয়ে রাখলে ভাল লাগবে। ভেপার নিলেও আরাম পাওয়া যায়।

Advertisement

পুজোর সময়ে এক্সারসাইজ় করতে কার ভাল লাগে! কিন্তু সকালে উঠে ফ্রি হ্যান্ড করে নিলে অনেকটা ঝরঝরে লাগবে। দিনভর জমিয়ে খাওয়ার আগে একটু কসরত মন্দ নয়।

পরিশ্রান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে একটু নিজের মতো একা থাকুন। মেডিটেশন করতে পারেন। নয়তো স্রেফ বিছানায় শুয়ে পড়ুন। হালকা গান চালিয়ে দিন। একটু পরে দেখবেন শরীরের সব পেশি শিথিল হয়ে এসেছে। এ ভাবে আধঘণ্টা শুয়ে থাকলে তরতাজা লাগবে।

ঠাকুর দেখার লাইন, রেস্তরাঁর লাইন, রাস্তার যানজট সামলানো চাট্টিখানি কথা নয়। ঘাড়ে পিঠে যন্ত্রণা স্বাভাবিক। হালকা ব্যায়াম করলে আরাম পাবেন। মেরুদণ্ড সোজা করে বসে ঘাড় উপরে-নীচে করুন। কাঁধের উপরে হাতের বুড়ো আঙুল রেখে হাত দুটো ক্লকওয়াইজ়, অ্যান্টি ক্লকওয়াইজ় ঘোরান। একটু স্ট্রেচ করুন। এতে ঘাড়, কাঁধ, কোমরের আরাম হবে। পা দুটো সামনের দিকে ছড়িয়ে বসুন। এ বার হাত দিয়ে পায়ের আঙুল ধরার চেষ্টা করুন। এ ভাবে ৩০ সেকেন্ড থাকুন। আরাম পাবেন। রাতে ঘুমোনোর সময়ে পায়ের তলায় বালিশ দিয়ে রাখুন। পা উঁচু থাকলে মাসলগুলো রিল্যাক্সড হবে।

যাঁদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে, তাঁরা একটু সাবধানে থাকবেন। অতিরিক্ত আওয়াজ, শোরগোলে মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়ে। সারা দিন রোদে ঘোরাঘুরি করার ফলে সাইনাসের সমস্যাও বাড়তে পারে। তাই বাড়িতে ওষুধ রাখুন।

পুজোয় খাওয়াদাওয়া হবেই। কিন্তু সেখানেও কিছুটা নিয়ম মেনে চললে ভাল। নয়তো একদিন এত খেলেন যে বাকি পুজোটা আর কিছু খাওয়াই হল না। যে দিন সকালে ভূরিভোজ সারছেন, সে দিন রাতের দিকে হালকা খাবার খান। উল্টোটাও হতে পারে। অতিরিক্ত খাওয়াদাওয়া কিন্তু ক্লান্তি ডেকে আনে। কমবয়সিদের অতটা সমস্যা না হলেও, মধ্যবয়সি এবং বয়স্কদের একটু বিবেচনা করেই খেতে হবে। কারও হজমের সমস্যা থাকলে সকালে খালি পেটে হজমের একটি ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন।

হাইজিনের ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকা উচিত। স্যানিটাইজ়ার মাস্ট। রাখতে পারেন ওয়েট টিসুও। ঠাকুর দেখার ফাঁকে টুকটাক মুখ চালাতে হলে হাত স্যানিটাইজ় করে নেবেন।

সব কিছুর মধ্যে জরুরি হল ঘুম। রাত জেগে ঘোরাঘুরি, আড্ডার মাঝে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীর বিদ্রোহ করবেই। আনন্দ করুন, কিন্তু শরীরেরও খেয়াল রাখুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন