Inemuri naps

কর্মক্ষমতা এবং মন ভাল রাখে জাপানি দিবানিদ্রা, চর্চায় ‘ইনেমুরি’, পদ্ধতি কী? কারা করতে পারেন?

মন ভাল রাখতে এবং দৈনন্দিন কর্মক্ষমতা সচল রাখতে জাপানিরা ‘ইনেমুরি’ অভ্যাস করেন। কতটা যুক্তিযুক্ত এই অভ্যাস?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৫ ০৯:৫৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র। ছবি: সংগৃহীত।

জাপানি সংস্কৃতির মধ্যে সুস্থ জীবনযাত্রার একাধিক উপাদান উপস্থিত। তাই বর্তমানে তাদের জীবনযাত্রার একাধিক রীতিনীতি চর্চায় রয়েছে। যেমন সম্প্রতি জাপানি ‘ইনেমুরি’ সংস্কৃতি নিয়ে কৌতূহল দানা বেঁধেছে।

Advertisement

‘ইনেমুরি’ কী?

‘ইনেমুরি’ শব্দের অর্থ ‘জেগে থাকতে থাকতে ঘুমোনো’। স্লিপ এক্সপার্টদের একাংশের মতে, বিষয়টা অনেকটা ‘দিবানিদ্রা’র মতো। দিনের বেলায় ক্লান্তি কাটাতে কর্মক্ষেত্রে বা সফরের সময় অল্প সময়ের (১৫ থেকে ২০ মিনিট) জন্য ঘুমোনোর প্রচলন রয়েছে জাপানে। বিষয়টিকে শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অনুঘটক হিসেবেই দেখেন তাঁরা। এই ধরনের অভ্যাসের ফলে অনেক সময়েই কাজের প্রতি একাগ্রতা বৃদ্ধি পায় বলে দাবি করা হয়। এমনকি জাপানে আলাদা করে ‘ইনেমুরি’ কেন্দ্রও রয়েছে।

Advertisement

উপকার কোথায়

ব্যস্ত জীবনে অনেকেরই এখন পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব দেখা যায়। তার প্রভাব পড়ে কর্মক্ষেত্রে। ক্লান্তি, উদ্বেগের মতো একাধিক কারণেই বর্তমান সমাজ থেকে ঘুমের সময় কমতে শুরু করেছে। তাই অনেকেই মনে করছেন, সেখানে ‘ইনেমুরি’ আপন করে নিলে উপকার পাওয়া যেতে পারে।

কী ভাবে করা যায়

১) প্রথমে সময় এবং জায়গা (ট্রেনে, বাসে বা কর্মক্ষেত্রে) ঠিক করে নিতে হবে। ইচ্ছে না হলেও সেই সময়ে ঘুমোনোর চেষ্টা করতে হবে। চেষ্টা করতে হবে, পারিপার্শ্বিক আলোচনা বা শব্দ থেকে মনকে দূরে রাখতে।

২) মোবাইলে টাইমার সেট করে নেওয়া ভাল। কারণ ২০ মিনিটের বেশি ঘুমোনো উচিত নয়।

৩) চেয়ারে হেলান দিয়ে বা সামনে কোনও টেবিলে মাথা রেখেও এ ক্ষেত্রে ঘুমোনো যায়। তবে বিছানায় ঘুমোনো চলবে না।

৪) ঘুম থেকে ওঠার সময় খুব ধীরে ধীরে চোখ খুলতে হবে। তার পর আবার কাজে ফিরে যেতে হবে।

৫) এক দিনে বার বার ‘ইনেমুরি’ অভ্যাস করা উচিত নয়। সে ক্ষেত্রে রাতে ঘুম আসার সমস্যা হতে পারে।

—প্রতীকী চিত্র।

কী বলছে চিকিৎসা বিজ্ঞান

চিকিৎসকদের একাংশের মতে, সারা দিনের কাজের ব্যস্ততার ফাঁকে ছোট ছোট বিরতির ঘুম মনকে হালকা রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, ক্লান্তি, একঘেয়েমি এবং উদ্বেগ দূর করতে পারে। স্নায়ুরোগ চিকিৎসক অনিমেষ কর বললেন, ‘‘একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ছোট ছোট বিরতির ঘুম শরীরকে ভাল রাখে। রাতে যাঁদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম হচ্ছে, তাঁদের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই। অন্যদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি উপকারী হতে পারে।’’

এই ‘ইনেমুরি’র জন্য আদর্শ সময় হিসেবে বেলা এবং দুপুরকেই নির্দেশ করলেন অনিমেষ। তাঁর কথায়, ‘‘সন্ধ্যায় এই ধরনের ঘুম ভাল নয়। শরীরে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।’’ অন্য দিকে, দুপুরে এই ধরনের ঘুম যদি নিয়মিত এক ঘণ্টা অতিক্রম করে, সেটাও ঠিক নয় বলেই জানালেন অনিমেষ। কারণ এই ধরনের ঘুম অভ্যাস করতে গিয়ে অনেক সময়ে ‘স্লিপ ইনারশিয়া’ হতে পারে। অনিমেষের কথায়, ‘‘বেশি ক্ষণ ঘুমোলে, ঘুম থেকে ওঠার পর কিছু ক্ষণের জন্য কাজে মন বসতে না-ও পারে। সুতরাং, ‘ইনেমুরি’ অভ্যাস করার ফলে যাতে ক্ষতি না হয়, সে দিকেও খেয়াল রাখা উচিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement