ক্লেয়ার লিটনের আঁকা গান্ধীর তৈলচিত্র। ছবি: সংগৃহীত।
শিল্পীদের আঁকা ছবির সংখ্যা অজস্র। কিন্তু জীবদ্দশায় একবারই মাত্র তাঁর প্রতিকৃতি আঁকার জন্য চিত্রশিল্পীকে সময় দিয়েছিলেন মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধী। ১৯৩১ সালে ব্রিটিশ-আমেরিকান মহিলা শিল্পী ক্লেয়ার লিটনের আঁকা সেই তৈলচিত্র এ বার নিলামে উঠল। বিক্রি হল ১ লক্ষ ৫২ হাজার ৮০০ পাউন্ডে (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা)।
অনলাইনে ছবিটি নিলাম করেছে ব্রিটেনের সংস্থা ‘বনহ্যামস’। তারা জানিয়েছে, প্রথমে নিলামে ছবিটির আনুমানিক বিক্রয়মূল্য ধরা হয় ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় ৫৮ লক্ষ থেকে ৮০ লক্ষ টাকা)। সূত্রের দাবি, ১৯৩১ সালে লন্ডনে থাকাকালীন সাংবাদিক হেনরি নোয়েল ব্রেলসফোর্ডের মাধ্যমে গান্ধীর সঙ্গে ক্লেয়ারের আলাপ হয়। নিলাম সংস্থার দাবি, জীবদ্দশায় এই একটি মাত্র প্রতিকৃতির জন্যই গান্ধী সময় দিয়েছিলেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘গান্ধীর সঙ্গে একাধিক বার শিল্পী দেখা করার সুযোগ পান। সেই সাক্ষাতের ভিত্তিতেই ছবিটি আঁকা হয়েছিল।’’
আরও ইতিহাস
১৯৩১ সালে লন্ডনের স্যাকভিল স্ট্রিটের অ্যালবানি প্রদর্শশালায় ছবিটি সর্বসাধারণের দেখার সুযোগ করে দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে গান্ধী উপস্থিত ছিলেন না। পরবর্তী সময়ে গান্ধীর ব্যক্তিগত সচিব মহাদেব দেশাই ক্লেয়ারকে একটি চিঠি লেখেন। সেই চিঠির প্রতিলিপিও নিলাম সংস্থা প্রামাণ্য নথি হিসেবে প্রকাশ্যে এনেছে। ক্লেয়ারের উদ্দেশে সেই চিঠিতে লেখা, ‘‘মিস্টার গান্ধীর প্রতিকৃতির জন্য একাধিক বার আপনাকে পেয়ে ভাল লেগেছে। ছবিটি কেমন হয়েছে, তা আমার দেখার সুযোগ হয়নি। তবে বন্ধুদের মধ্যে যাঁরা ছবিটি দেখেছেন, তাঁরা তাঁদের ভাল লাগার কথা জানিয়েছেন।’’
ক্লেয়ালের পরিবার জানিয়েছে, ১৯৭৪ সালে ছবিটি বস্টনে একটি প্রদর্শনীতে রাখা হয়। তখন জনৈক আরএসএস সমর্থক একটি ছুরি দিয়ে প্রতিকৃতিটিকে আঘাত করেন। যদিও এই ঘটনার কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে ওই একই বছরে ছবিটি যে একাধিক বার ‘রেস্টোর’ করা হয়েছিল, তার প্রমাণ ছবিটির ফ্রেমের পিছনের দিকে পাওয়া গিয়েছে। ১৯৮৯ ক্লেয়ারের মৃত্যুর পর ছবিটি শিল্পীর পরিবারিক সংগ্রহে রাখা ছিল।