প্রতীকী চিত্র। ছবি: সংগৃহীত।
চলতি মাসেই চর্চায় উঠে আসে দুবাইয়ের ‘গোল্ডেন ভিসা’। কম খরচায় (১ লক্ষ দিরহাম, ভারতীয় মুদ্রায় ২৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা) ভারতীয়দের জন্য এই ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানার পরেই পর্যটকদের কৌতূহল দানা বাঁধে। অবশ্য পরে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সরকার বিবিৃতি দিয়ে জানিয়ে দেয় যে, খবরটি ভুয়ো। দুবাই না হলেও পশ্চিম এশিয়ার আরও একটি দেশ কিন্তু গোল্ডেন ভিসা প্রদান করে।
দেশটির নাম বাহরাইন। সৌদি আরব এবং কাতারের মধ্যে অবস্থিত দ্বীপরাষ্ট্রটি গত ১০ বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতি করেছে। আল ফতেহ্ মসজিদ এবং ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কালাত আল বাহরাইন (বাহরাইন দুর্গ) থেকে শুরু করে আধুনিক গ্রাঁ প্রি সার্কিট— সময়ের সঙ্গে বাহরাইন পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
২০২২ সাল থেকে সে দেশের সরকার বিশেষ শর্তে বিদেশিদের গোল্ডেন ভিসা দেওয়া শুরু করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির অন্তর্গত দুবাইয়ের ক্ষেত্রে যে নিয়মাবলি, তার তুলনায় বাহরাইনের গোল্ডেন ভিসা পাওয়া কিছুটা সহজ। ২০৩০ সালের মধ্যে বাহরাইন উন্নয়নের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তার অন্যতম অংশ হিসেবেই তারা ১০ বছরের জন্য গোল্ডেন ভিসা দেওয়া শুরু করে।
কী কী সুবিধা
১) এই ভিসায় কাজের সুবিধা সবথেকে বেশি। পশ্চিম এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো বাহরাইনে কাজের ক্ষেত্রে ‘স্পনসরশিপ’-এর জটিলতা নেই।
২) বাহরাইনে থাকার খরচ সংযুক্ত আরব আমিরশাহি বা সৌদি আরবের তুলনায় অনেকটাই কম। তাই সপরিবারে যাঁরা সে দেশে থাকতে চান, তাঁদের ক্ষেত্রে সুবিধা বেশি। উল্লেখ্য, গোল্ডেন ভিসায় পরিবারের সদস্যদেরও অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
৩) সাধারণত গোল্ডেন ভিসার অধিকারীদের সে দেশে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় থাকতে হয়। কিন্তু বাহরাইনের ক্ষেত্রে সে রকম কোনও নিয়ম নেই। ভিসার পুনর্নবীকরণ কাজ চাকরি বা সম্পত্তির বর্তমান মালিকানার উপর নির্ভরশীল নয়।
গত ১০ বছরে বাহরাইন বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতি করেছে। ছবি: সংগৃহীত।
কারা আবেদন করতে পারেন
সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ‘গোল্ডেন ভিসা’ শর্তসাপেক্ষ এবং তা পাওয়া খুব একটা সহজ নয়। তাই ২৩ লক্ষ টাকায় সেই ভিসা পাওয়ার ভুয়ো খবরে শোরগোল পড়ে যায়। কারণ এখন মধ্যবিত্ত ভারতীয়ের কাছে ঘোষিত অর্থমূল্য জোগাড় করা খুব একটা কঠিন নয়। সেখানে বাহরাইনের ‘গোল্ডেন ভিসা’ পাওয়ার ক্ষেত্রেও কয়েকটি নিয়মাবলী রয়েছে—
১) যাঁরা বাহরাইনে অন্তত ৫ বছর কাজ করেছেন এবং যাঁদের মাসিক বেতন ২ হাজার বাহরাইনের দিনার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা)।
২) যাঁদের বাহরাইনে সম্পত্তি রয়েছে, (যার মূল্য ২ লক্ষ বাহরাইনের দিনার, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা) তাঁরা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
৩) বাহরাইনে মাসিক ২ হাজার বাহরাইনের দিনার (ভারতীয় মুদ্রায় ৪ লক্ষ ৫৫ হাজার) পেনশন পাচ্ছেন, এ রকম যে কোনও ব্যক্তি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। বাহরাইন সরকারের তরফে মাসিক পেনশন (৪ হাজার বাহরাইনের দিনার, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯ লক্ষ ১১ হাজার টাকা) পান, কিন্তু দেশের বাইরে বসবাস করেন, এ রকম ব্যক্তিও এই ভিসার জন্য যোগ্য।
৪) এছাড়াও শিল্প , সাহিত্য, ক্রীড়া এবং সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রে কৃতীরাও এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন বলে জানিয়েছে বাহরাইন সরকার।