Noble prize in literature 2025

সাহিত্যে নোবেল পেলেন যুগপৎ প্রলয় আর সৌন্দর্যের রূপকার হাঙ্গেরীয় লেখক লাজ়লো ক্রাসনাহোরকাই

অ্যাকডেমির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাহিত্যে তাঁর সামগ্রিক অবদান মহাপ্রলয়ের আশঙ্কার মাঝেও যেন শিল্পের শক্তিকে তুলে ধরে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:০১
Share:

হাঙ্গেরীয় লেখক লাজ়লো ক্রাসনাহোরকাই। ছবি: সংগৃহীত।

২০২৫-এর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হাঙ্গেরীয় লেখক লাজ়লো ক্রাসনাহোরকাই। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ সুইডিশ অ্যাকাডেমির তরফে নোবেল প্রাপক হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়। অ্যাকডেমির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাহিত্যে তাঁর সামগ্রিক অবদান মহাপ্রলয়ের আশঙ্কার মাঝেও যেন শিল্পের শক্তিকে তুলে ধরে।

Advertisement

৭১ বছর বয়সি ক্রাসনাহোরকাই পেশায় লেখক এবং চিত্রনাট্যকার। তাঁর লেখা উপন্যাস ‘সাতানতাঙ্গো’ এবং ‘মেলাঙ্কলি অফ রেজ়িস্ট্যান্স’-কে চলচ্চিত্রে রূপদান করেছেন তাঁর দেশেরই বরেণ্য পরিচালক বেলা তার। চলতি বছরে সাহিত্যে নোবেল পেতে পারেন বলে যাঁদের নাম বার বার আলোচনায় উঠে এসছে, ক্রাসনাহোরকাই তাঁদের মধ্যে অন্যতম।

ক্রাসনাহোরকাইয়ের জন্ম ১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির গিউলা শহরে। ক্রাসনাহোরকাইয়ের কৈশোর কাটে হাঙ্গেরির কমিউনিস্ট শাসনের ঘেরাটোপে। আইনের ছাত্র ক্রাসনাহোরকাই স্বাধীন লেখক জীবন বেছে নেন ১৯৮৫ সালে ‘সাতানতাঙ্গো’ উপন্যাসের প্রকাশের সময় থেকেই। তাঁর রচনাকে অনেকেই ‘দুর্বোধ্য’ তকমা দিলেও ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখালেখি পোস্ট-মডার্ন সাহিত্যকর্মের অন্যতম উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হতে শুরু করে। প্রথম উপন্যাস থেকেই তাঁর লেখায় উঠে আসতে শুরু করে ভগ্নস্বপ্নের রাজ্য, আশাহত মানুষের কথা। তাঁর উপন্যাসের লিখন-কাঠামো জটিল। কখনও কখনও একটি মাত্র অনুচ্ছেদকে তিনি পাতার পর পাতায় বিস্তৃত করেন কোনও রকম যতিচিহ্ন ছাড়াই। এই বিন্দু থেকেই তাঁর লেখাকে ‘দুরূহ’ হিসেবে চিহ্নিত করার প্রবণতা অনেকের মধ্যে লক্ষ করা গেলেও তাঁর পাঠক ও গুণমুগ্ধের সংখ্যাও বিপুল।

Advertisement

‘মেলাঙ্কলি অফ রেজ়িস্ট্যান্স’ উপন্যাসটিকে মহাপ্রলয়ের ধারণার প্রতি এক তির্যক দৃষ্টিপাত হিসেবে দেখেছেন আলোচকেরা। ঠান্ডা লড়াইয়ের অন্তিম পর্বে রচিত এই আখ্যানগুলিতে ছায়া পড়েছে সমসময়ের। বিশেষ করে সেই সময়ে গণচিত্তের হতাশাবোধকে তাঁর লিখনে রূপদান করতে চেয়েছিলেন ক্রাসনাহোরকাই। ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত উপন্যাস ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়্যার’ রচনার কালে তিনি ইউরোপের বিভন্ন দেশ পরিভ্রমণ করেন। এই গ্রন্থ রচনায় তাঁকে সহায়তা করেছিলেন আমেরিকান কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ। ২০০৯ সালে ‘সেইওবো দেয়ার বিলো’ উপন্যাসের জন্য ক্রাসনাহোরকাই ম্যান বুকার পুরস্কার লাভ করেন।

ক্রাসনাহোরকাইয়ের রচনায় সমসময়ের বিশ্বরাজনীতি জাত হতাশাবোধ বিশেষ ভাবে লক্ষণীয়। তাঁর আখ্যানকাঠামোগুলিকে শুধুমাত্র পশ্চিমী ধাঁচার মধ্যে আবদ্ধ না রেখে তিনি পূর্ব এশিয়ার আখ্যান কাঠামোকেও মাঝেমধ্যে গ্রহণ করেছেন। কখনও কখনও তাঁর রচনায় ছায়া পড়েছে নৈরাজ্যেরও। কখনও তাঁর রচনায় দমচাপা ভয়াবহতার সঙ্গে সমান্তরালে হেঁটে গিয়েছে সৌন্দর্যবোধ। এখানেই তাঁর লিখনের অনন্যতা নিহিত, মত আলোচকদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement