পোষ্যদের সঙ্গে নিয়ে ঘুমোনো কি ভাল? ছবি: সংগৃহীত।
সময়ের সঙ্গে আদর এবং ভালবাসায় আপনার প্রিয় পোষ্যটিও বাড়ির সদস্য হয়ে ওঠে। ফলে অনেক সময়েই তাদের সঙ্গে নিজের আলাদা করে পার্থক্য চোখে পড়ে না। পোষ্য রয়েছে, এমন বহু পরিবারে রাতে পোষ্যকে নিয়ে একই বিছানায় ঘুমোনোর চল রয়েছে। এখন গ্রীষ্মকাল। ফলে রাতে এসি চালিয়েও অনেকে পোষ্যকে সঙ্গে নিয়েই ঘুমোন। কিন্তু এই অভ্যাস কি ভাল?
পোষ্যেরা মানুষের দৈনিক ক্লান্তি এমনকি পরিবারের সদস্যদের পারস্পরিক সম্পর্কেও উন্নতি সাধন করতে পারে। কিন্তু একাধিক সমীক্ষা এবং পশুরোগ চিকিৎসকদের বক্তব্য, রাতে শোয়ার ঘরে পোষ্যের উপস্থিতি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
কুকুর বনাম বিড়াল
ভারতের মতো দেশে বাড়িতে পোষ্য হিসেবে কুকুর এবং বিড়ালের আধিক্য বেশি। গবেষণা বলছে, তাদের ঘুমের ধরন (স্লিপ সাইকল) মানুষের থেকে আলাদা। কুকুরেরা সাধারণত ছোট ছোট বিরতি নিয়ে ঘুমোয়। তারা সদা সজাগ থাকতে পছন্দ করে। রাতে একাধিক বার তাদের ঘুম ভাঙে। ফলে ঘরের মধ্যে তাদের নড়াচড়া বা শব্দ মানুষের ‘ডিপ স্লিপ’-এ ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
অন্য দিকে, বিড়াল সারা দিনে তার ক্লান্তি দূর করতে ঘুমিয়ে থাকে। তাদের ইন্দ্রিয় মূলত রাতে বেশি সক্রিয় হয়। কম আলো বিড়ালেরা বেশি পছন্দ করে। অর্থাৎ, দিনের তুলনায় বিড়ালেরা রাতে বেশি স্বচ্ছন্দ।
পোষ্যকে নিয়ে ঘুমোলে না না সমস্যা হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।
সমস্যা কোথায়?
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, পোষ্যদের সঙ্গেই বাড়িতে প্রবেশ করে নানাবিধ অ্যালার্জেন। রাতে তারা বিছানায় থাকলে অনেক সময় ব্যক্তির শ্বাসকষ্ট হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে অ্যাজ়মা মাথাচাড়া দিতে পারে। ট্রিনিটি কলেজের সোশ্যাল অ্যান্ড হেল্থ সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ব্রিয়ান চিন তাঁর গবেষণালব্ধ ফলের উপরে নির্ভর করে জানিয়েছেন, পোষ্যকে পাশে নিয়ে ঘুমোলে ঘুমের ধরনে ব্যাঘাত ঘটে। পাশাপাশি সময়ের সঙ্গে অনিদ্রা দেখা দেয়। অবশ্য, বিপরীতে একাধিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে পোষ্যের মনিবেরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কোনও অভিযোগ করেন না। কারণ, অনিদ্রার কারণ যে পোষ্য— এই বক্তব্য তাঁরা বিশ্বাস করেন না।
সম্ভাব্য বিপদ এড়াতে কী করণীয়?
১) পোষ্যকে পাশে নিয়ে ঘুমোনোর ফলে যদি বার বার রাতে ঘুম ভাঙে, তা হলে তাকে শোয়ার ঘরের বাইরে রাখার অভ্যাস তৈরি করতে হবে।
২) অনেক সময় এই পরিবর্তন পোষ্যেরা মেনে নিতে রাজি হয় না। সে ক্ষেত্রে নিয়মিত বিছানার চাদর পরিবর্তন করা উচিত। তাতে ঘরে এলার্জেনের উপস্থিতি কমবে।
৩) সম্ভব হলে পোষ্যের ঘুমের ধরনের সঙ্গে নিজের সময় মানিয়ে নেওয়া যেতে পারে। তাতে ঘুমে কম ব্যঘাত ঘটবে।
৪) সম্ভব হলে পোষ্যকে বিছানা থেকে দূরে মাটিতে শোয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া যায়।
৫) পোষ্যকে নিয়মিত ব্যবধানে স্নান করানো উচিত। পাশাপাশি লোমের দৈর্ঘ্য বেশি হলে, নিয়মিত তা আঁচড়ে দেওয়া উচিত।
৬) ঘরের মধ্যে কোনও এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করলে পোষ্যের উপস্থিতি সত্ত্বেও বিভিন্ন অ্যালার্জেনকে দূরে রাখা সম্ভব।