সুস্থ ও নীরোগ থাকার চেষ্টায় আমরা প্রত্যেকেই সচেষ্ট থাকি। আধুনিক জীবনযাত্রার মধ্যেও নিজের ও চারপাশের ঘনিষ্ঠ মানুষদের শরীরের প্রতি খেয়াল রাখি।
কিন্তু এমন কিছু অভ্যাস আমাদের রোজনামচায় আছে, যে সম্পর্কে আমরা মোটেও সচেতন নই। বরং অজ্ঞানতার বশে এমন কিছু কাজ আমরা প্রায়ই করে থাকি, যা আমাদের শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক তো বটেই, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
যেমন, হাঁচি চেপে রাখা। কোনও জরুরি মিটিংয়ে আছেন বা দরকারি কোনও আলোচনায়। এমন সময় হাঁচি পেলে অনেকেই তা চেপে রাখি। নানা ভাবে চেষ্টা করি, সশব্দ হাঁচি যাতে পরিবেশ নষ্ট না করে। ফলে হাঁচি এড়াতে সাময়িক শ্বাস বন্ধ থেকে শুরু করে বিচিত্র মুখভঙ্গিতে কোনওক্রমে তা ঠেকিয়ে রাখি আমরা। কেউ হাঁচি আটকাতে সক্ষম হন, কেউ হন না। কিন্তু চেষ্টায় ত্রুটি রাখেন না।
আরও পড়ুন: এ সব মানলে আপনার চোখের ইশারাও হতে পারে প্রিয়া প্রকাশের মতোই ভাইরাল!
হাঁচি চাপার বদভ্যাসে দাঁড়ি টানুন আজই। ছবি: শাটারস্টক।
আর এতেই ত্রুটি থেকে যায় সুস্থ ভাবে বাঁচার। জানেন কি, এই হাঁচি আটকানো আপনার শরীরে কত ক্ষতি করে? জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, হাঁচি আটকালে সরাসরি তা প্রভাবিত করে শরীরের রক্ত সঞ্চালনের উপর। হার্টের উপরও খুব প্রভাব ফেলে। তাঁর মতে, শ্বাসনালিতে কোনও ‘ফরেন পার্টিকল’ অর্থাৎ বাইরের কোনও কণা বা অণু চলে এলে হাঁচির মাধ্যমেই শরীর তাকে বার করে দিতে চায়। এমন অবস্থায় কেউ হাঁচি চাপলে তা শ্বাসনালির উপরও চাপ দেয় এই স্বভাব।
চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুসারে, হাঁচির সময় সাধারণত মানুষ প্রথমে শ্বাস ভিতরে প্রবেশ করায় তার পর সশব্দে সেই শ্বাস হাঁচির সঙ্গে বাইরে বেরয়। এই সময় কেউ হাঁচি আটকালে শ্বাস ভিতরে আটকে থাকে, বাইরে বেরতে পারে না। ফলে ফুসফুসে চাপ তৈরি হয়। হার্ট ও ফুসফুসের মধ্যে যে বায়ুর বিনিময় চলে সেই প্রক্রিয়াতেও বাধা আসে।
আরও পড়ুন: ত্বকের যত্নে এ সব অবহেলা করলে কিন্তু বিপদে পড়বেন
এই চাপ থেকেই মৃত্যু হানা দিতে পারে যখন তখন। কাজেই হাঁচি চাপার অভ্যাস থাকলে আজই এই স্বভাব ছাড়ুন। মনে রাখবেন, হাঁচি খুব স্বাভাবিক, শারীরবৃত্তীয় কাজ। কাজেই এর সঙ্গে অভদ্রতা বা অপেশাদারিত্বের কোনও যোগ নেই।