— প্রতীকী চিত্র।
সময়ের সঙ্গে ‘চ্যাটজিপিটি’ বা ‘জেমিনাই’-এর মতো এ আই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) চ্যাটবট জনপ্রিয় হলেও এখনও ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে বা তথ্য অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে বড় অংশের মানুষ ওয়েব ব্রাউজ়ারই ব্যবহার করেন। সেখানে এখনও নিজের কর্তৃত্ব বজায় রেখেছে ‘গুগ্ল ক্রোম’।
ক্রোম নিজেকে ব্যবহারকারীদের কাছে প্রাসঙ্গিক রাখতে নানা ‘অনৈতিক’ পদক্ষেপ করে বলে অভিযোগ। গত বছরই আমেরিকায় এই প্রসঙ্গে গুগ্লের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ব্যবহারকারীরা যাতে অন্য কোনও ওয়েব ব্রাউজ়ার ব্যবহার না করেন, তার জন্য প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ করে গুগ্ল। পাশাপাশি, ক্রোমের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর অজান্তেই নানা তথ্য অ্যাকসেস করতে পারে গুগ্ল। তার উপর নির্ভর করে ব্যবহারকারীর পর্দায় বিজ্ঞাপন চালিয়ে মোটা টাকা উপার্জন করে গুগ্ল। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে, অনলাইনে একটি জুতো দেখছেন। তার পর থেকেই আপনার পর্দায় শুধুই নানা ধরনের জুতোর বিজ্ঞাপন ভরে ওঠে। সমান্তরালে, সার্চের ধরনের ভিত্তিতে গুগ্ল ব্যবহারকারীর পছন্দ-অপছন্দের প্রোফাইল তৈরি করে তা ব্যবহার করে। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই বিতর্ক চলছে। এমতাবস্থায় ডেটা এবং ইন্টারনেটে নিজের পরিচয় সুরক্ষিত রাখতে গত কয়েক বছরে কয়েকটি ব্রাউজ়ার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রইল ৩টি উদাহরণ।
১) মোজ়িলা ফায়ারফক্স: মোজ়িলা এখন অনেকেই ব্যবহার করেন। এই ব্রাউজ়ারে এক দিকে যেমন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত থাকে, তেমনই এটি ওপেন সোর্স। অর্থাৎ পদ্ধতি জানা থাকলে নিজের মতো করে কাস্টমাইজ় করার সুবিধা পাওয়া যায়। মোজ়িলা ব্যবহারকারীকে ট্র্যাক করে না। পাশাপাশি, ব্যবহারকারীর কোনও তথ্য নিজের সার্ভারে জমাও রাখে না।
‘গুগ্ল ক্রোম’-এর বিকল্প হিসেবে ‘ফায়ারফক্স’, ‘ব্রেভ’ বা ‘ডাক ডাক গো’ ওয়েব ব্রাইজ়ার ব্যবহার করা যায়। ছবি: সংগৃহীত।
২) ব্রেভ: সময়ের সঙ্গে ব্রেভ ব্রাউজ়ার জনপ্রিয় হচ্ছে। এই ব্রাউজ়ারে কোনও ‘পেড অ্যাড’ দেখানো হয় না। পাশাপাশি যে কোনও ওয়েবসাইটের ট্র্যাকার ব্লক করা হয় বলে, ওয়েবসাইট দ্রুত খোলে। ব্রেভ ব্যবহারকারীর কার্যকলাপ ট্র্যাক করে না। নিয়মিত যত ট্র্যাকার, বিজ্ঞাপন ব্লক করা হচ্ছে, তা জানানোর পাশাপাশি ব্যান্ডউইথ এবং সার্ফিংয়ের সময় কতটা বাঁচছে, তা-ও দেখিয়ে দেয় ব্রেভ। একই সঙ্গে এই ব্রাউজ়ারে ব্যবহারকারীর জন্য ‘রিওয়ার্ড সিস্টেম’ও (ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর নির্ভরশীল) রয়েছে।
৩) ডাক ডাক গো: এই ওয়েব ব্রাউজ়ারটি ব্যবহারকারীর কোনও তথ্য তাদের নিজস্ব সার্ভারে জমা করে না এবং তা তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে ভাগ করে না। বিজ্ঞাপন থাকলেও তার নেপথ্যে থাকে ব্যবহারকারীর সার্চ। কিন্তু তার মাধ্যমে কোনও ভাবেই ব্যবহারকারীকে ‘লক্ষ্যবস্তু’তে পরিণত করা হয় না। ব্রাইজ়ারে রয়েচে বিল্ট-ইন ট্র্যাকার ব্লকিং সিস্টেম। সার্চ রেজ়াল্টের ক্ষেত্রেও এই ব্রাউজ়ার পক্ষপাতিত্বহীন উত্তর প্রদান করে, যা গুগ্ল করে না। ‘ফায়ার’ বোতামের সাহায্যে একটি ক্লিকে যাবতীয় ট্যাব, ব্রাউজ়িং হিস্ট্রি মুছে ফেলা সম্ভব। ‘ডাক ডাক গো’-এর সহজ ইউজ়ার ইন্টারফেস অনেকের কাছেই আকর্ষণীয়।