eye problem

Cataract: ৪০ বছরের আগেই চোখে ছানি পড়তে পারে। কী করবেন, জানাচ্ছেন চিকিৎসক

চোখে ছানি পুষে রাখলে ভবিষ্যতে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে। খুব দেরি হয়ে গেলে অস্ত্রোপচারেও অসুবিধা হয়।

Advertisement

সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২১ ০৯:৪৯
Share:

প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত

বয়স বাড়লে যেমন চুলে পাক ধরে, ত্বক শিথিল হয়ে যায় তেমনই চোখের স্বচ্ছ্ব লেন্স ঝাপসা হয়ে আসে। ফলে দৃষ্টি শক্তি কমতে শুরু করে। অনেকেই স্বল্প দৃষ্টির সঙ্গে সমঝোতা করেই দিন কাটান। কিন্তু এর সুদুরপ্রসারী ফল হতে পারে মারাত্মক। দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী আমাদের দেশে শুধু ছানির কারণে প্রতি বছর ৩.৮ মিলিয়ন মানুষ দৃষ্টিহীন হয়ে যান। তাই ছানি হলে চিকিৎসা করানো জরুরি, পরামর্শ দিলেন চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ বিবেক দত্ত। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ষাট ঊত্তীর্ণদের মধ্যে ছানির সমস্যা দেখা যায়। কিন্তু ইদানীং ৩৫ – ৪০ বছরের তরুণদের চোখ ছানির পর্দায় ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

কম বয়সে ছানি পড়ার কারণ কী?

ডায়বিটিস থাকলে কম বয়সে ছানি পড়ার ঝুঁকি বাড়ে। আবার সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে চোখের লেন্স ঝাপসা হয়ে যেতে পারে, আবার বংশগত কারণেও অল্প বয়সে ছানি পড়ার সম্ভাবনা থাকে। অল্প বয়সে ছানি পড়ার আর একটা বড় কারণ অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস অর্থাৎ অ্যালার্জি। আবার মায়োটনিক ডিস্ট্রফি নামে পেশির কর্ম ক্ষমতা কমে যাওয়ার অসুখ থাকলেও বৃদ্ধ হবার আগেই ছানি পড়ে দৃষ্টিশক্তি কমতে শুরু করে। যাঁদের হাই মাইনাস পাওয়ার অর্থাৎ হাই মাইওপিয়া, চোখের ক্রনিক সংক্রমণ, রাতকানা রোগ থাকলেও কম বয়সে ছানি পড়ার ঝুঁকি বেশি।

Advertisement

তা হলে কি এই সব অসুখ থাকলে ছানি প্রতিরোধ করার জন্যে ব্যবস্থা নিতে হবে?

ছানি আটকে দেওয়া বা প্রতিরোধ করা মুশকিল। তবে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানো উচিত, বিশেষ করে যাঁদের উপরিউক্ত সমস্যা আছে তাঁদের কোনও রুটিন আই চেক আপ করান দরকার, এ ছাড়া ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, রোদ্দুরে বেরোলে ইউভি প্রতিরোধী রোদ চশমার সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। অন্যান্য অসুখ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ছানির উপসর্গ দেখলে অবশ্যই চোখ পরীক্ষা করান জরুরি।

প্রতীকী ছবি।

কী কী উপসর্গ দেখলে ডাক্তার দেখানো উচিত?

ছানি পড়ার শুরুতে খুব যে উল্লেখযোগ্য কোনও উপসর্গ থাকে তা নয়। চারদিকের সব কিছু নিষ্প্রভ লাগে অর্থাৎ আলোর উজ্জ্বলতা কমে যায়। কন্ট্রাস্ট ভিশন কমে যায়, সাদা জিনিস ধূসর লাগে। অল্প আলোয় দেখতে খুব অসুবিধে হয়। ক্রমশ কাছের জিনিস দেখতে ও লেখা পড়তে অসুবিধে হয়, চশমার পাওয়ার বদলেও কোনও লাভ হয় না। রাত্তিরে গাড়ির জোরালো আলো চোখে পড়লে খুব কষ্ট হয়। ছানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখার সমস্যা আরও বেড়ে যায়।

ছানি সম্পর্কে নিশ্চিত হবার জন্যে কী কী পরীক্ষা করানো দরকার?

অভিজ্ঞ চিকিৎসক উপসর্গ দেখেই বুঝতে পারেন। এরপর স্লিট ল্যাম্প পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায়। এ ছাড়া কম্প্রিহেন্সিভ চোখ পরীক্ষা করা দরকার।

ছানি পাকলে তবেই কি অস্ত্রোপচার করা হয়?

ছানি ধরা পড়লে যখন দৈনন্দিন কাজকর্মে অসুবিধে হবে তখনই অস্ত্রোপচার করা উচিত। পাকার জন্য অপেক্ষা করার কোনও দরকার নেই, বরং দেরি হলে নানান জটিলতা দেখা দিতে পারে। দেরি করলে ছানি শক্ত হয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচার করতে অসুবিধে হবার ঝুঁকি থাকে। ফেকো সার্জারির সাহায্যে ২ মিলিমিটার ছোট্ট ছিদ্র করে অকেজো লেন্স বের করে নতুন লেন্স বসিয়ে দিলে সমস্যা চলে যায়। ৩ – ৪ দিনের মধ্যেই সব স্বাভাবিক হয়ে যায়। তবে সার্জারির পর চোখে কোনও রকম সংক্রমণ না হয় সেই দিকে খেয়াল রাখা দরকার। ছানি পুষে রেখে বিপদ বাড়াবেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন