ব্লাডব্যাঙ্কে সর্বক্ষণের মেডিক্যাল অফিসারের দাবি তাঁদের বছর খানেকের। কিন্তু এত দিনেও সেই সমস্যার সুরাহা না হওয়ায় নানা সমস্যায় পড়ছেন আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কের টেকনিশিয়ানরা। তাঁদের অভিযোগ, দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিক্যাল অফিসার অনিয়মিত আসেন। এই অবস্থায় বিশেষজ্ঞ ছাড়াই টেকনিশিয়ানদের ভরসায় ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কটি ২৪ ঘন্টা চালু রাখা হয়েছে। ব্লাডব্যাঙ্কে সর্বক্ষণের মেডিক্যাল অফিসারের দাবিতে টেকনিশিয়ানদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ সত্ত্বেও পরিস্থিতির কোনও বদল হয়নি।
অশোককুমার নিয়োগী নামে ওই মেডিক্যাল অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি আসেন। নাইট ডিউটি করে শুক্রবার সকালে জরুরি বিভাগে বসেন। ফের ওই রাতে ব্লাড ব্যাঙ্কে ডিউটি করেন। শনিবার সকাল ৮টার পরে তিনি বাড়ি চলে যান। এর থেকে বেশি ডিউটি ওই চিকিৎসককে দেওয়়া সম্ভব নয় বলে জানিয়়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সারা সপ্তাহে দায়িত্ব পালনের সময়টুকু নিজের ইচ্ছামতো বেছে নেওয়া যায় কিনা সেই প্রশ্নে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জবাব, বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য দফতর দেখছে।
আরামবাগ মহকুমা এবং সংলগ্ন হাওড়া, বর্ধমান, বাঁকুড়া, ও দুই মেদিনীপুর জেলার কিছু অংশের রোগীরা এই ব্লাড ব্যাঙ্কের উপর নির্ভরশীল। এমনিতেই অধিকাংশ সময় ব্লাডব্যাঙ্কে রক্তের হাহাকার থাকে। তার উপর ২৬২ শয্যার এই মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রায় ৫০০ রোগী। বাইরের নার্সিংহোমগুলি থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪৫ থেকে ৫০ ইউনিট বিভিন্ন গ্রুপের রক্তের চাহিদা থাকে। এঁদের মধ্যে কোন রোগীকে আগে রক্ত দেওয়া জরুরি তা দেখার জন্য কেউ না থাকায় রোগীর আত্মীয়স্বজন এবং টেকনিশিয়ানদের মধ্যে অশান্তি লেগেই রয়েছে। তা ছাড়া আরও যেটা ঝুঁকির তা হল, হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোনও রোগীকে রক্ত দিতে হলে রোগীর রক্তের সঙ্গে মজুত রক্তের ‘ক্রস ম্যাচ’ করাতে হয়। একমাত্র মেডিক্যাল অফিসারের উপস্থিতিতেই ওই কাজ করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে সেই কাজ টেকনিশিয়ানদেরই করতে হচ্ছে। তা ছাড়া চিকিৎসক ছাড়াই বাইরে রক্তদান শিবিরে গিয়ে টেকনিশিয়ানদের হেনস্থা হওয়ারও নজির আছে।
ব্লাডব্যাঙ্ক ২৪ ঘন্টা চালু রাখতে ৮ জন টেকনিশিয়ান এবং ২ জন মেডিক্যাল অফিসার থাকার কথা বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। কিন্তু হাসপাতালে আছেন ৩ জন, এঁদের মধ্যে আবার ২ জন চুক্তিভিত্তিক। মেডিক্যাল অফিসারের অনুপস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে ব্লাড ব্যাঙ্ক চলার কথা স্বীকার করেছেন হাসপাতালের সুপার শান্তনু নন্দী। তিনি বলেন, “হাসপাতলের অসঙ্গতিগুলো খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর পদক্ষেপও করেছে।”
হুগলি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তনিমা মন্ডল বলেন, “ব্লাডব্যাঙ্কের জন্য মেডিক্যাল অফিসার নিয়োগ করা হচ্ছে। আশা করি আরামবাগ হাসপাতালে যে সমস্যা হচ্ছে তা মিটবে।”
তড়িঘড়ি সিসিইউ সাজিয়ে আজ উদ্বোধন
নিজস্ব সংবাদদাতা • পুরুলিয়া
পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে বুধবার বিকেলে তোলা নিজস্ব চিত্র।
আজ, বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালে ১২ শয্যার সিসিইউ-এর (ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট) উদ্বোধন করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু উদ্বোধনের আগের দিন বুধবার বিকেলে দেখা গেল, হাসপাতালের দোতলায় এই বিভাগে আলো ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র বসানোর কাজ শেষ হয়নি। কাজের তদারকি করছেন কর্তারা। কেন দেরি হল, তা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। গত মে মাসের শেষের দিকে এই ইউনিটের প্রস্তুতি দেখতে এসেছিলেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের একটি প্রতিনিধি দল পুরুলিয়ায় আসে। এই বিভাগের কাজকর্ম দেখে মোটেই খুশি হননি তাঁরা। প্রতিনিধিরা সময়সীমা বেঁধে দিয়ে যান। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই। কিন্তু তা যে হয়নি, এ দিন বিকেলেই তার প্রমাণ মিলেছে। কবে থেকে পরিষেবা বাস্তবিক চালু হবে, তা নিয়েও স্বাস্থ্যকর্তারা মুখ খোলেননি।
জায়গার অভাবে মাটিতেই শিশু-সহ থাকতে বাধ্য হচ্ছেন মায়েরা।
ময়নাগুড়ি হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ছবিটি তুলেছেন দীপঙ্কর ঘটক।