Israeli Heron Drone for India

‘সিঁদুর’-এর মারকাটারি ব্যাটিংয়ে ঢাকা পড়েছে ব্যর্থতা, ২৩ বছরে ১৪টা ড্রোন হারিয়েও ইহুদি ‘হেরন’-এ ভরসা সেনার

গত ২৩ বছরে অন্তত ১৪টি ‘হেরন মার্ক টু’ ড্রোন হারিয়েছে ভারত। তার পরেও এই ইজ়রায়েলি পাইলটবিহীন যানটির চাহিদা নয়াদিল্লির কাছে কমেনি। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ চমৎকার পারফরম্যান্সের জেরে জরুরি ভিত্তিতে ইহুদিদের থেকে ফের এই ড্রোনটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রক কিনতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:১৯
Share:
০১ ১৮

‘অপারেশন সিঁদুর’-এ দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জের। জরুরি ক্রয়ের মাধ্যমে ইজ়রায়েলের থেকে আরও ‘হেরন মার্ক টু’ ড্রোন কিনছে ভারত। গত ২৩ বছরে অন্তত ১৪ বার দুর্ঘটনার মুখে পড়ে ইহুদিদের তৈরি এই পাইলটবিহীন যান। কিন্তু, তার পরেও ‘হেরন’-এর উপর এ দেশের বাহিনীর অগাধ বিশ্বাস এতটুকু টোল খায়নি। উল্টে স্থল এবং বায়ুসেনার পাশাপাশি এ বার সংশ্লিষ্ট মানববিহীন উড়ুক্কু যানটিকে বহরে শামিল করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে ভারতীয় নৌসেনা। ‘হেরন’-এর উপর এ-হেন ভরসার নেপথ্যে অবশ্য রয়েছে একাধিক কারণ।

০২ ১৮

চলতি বছরের নভেম্বরে রাজস্থানের জয়সলমীরে জরুরি অবতরণ করে ভারতীয় বায়ুসেনার একটি ‘হেরন’ ড্রোন। প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে সংশ্লিষ্ট পাইলটবিহীন যানটিকে নামিয়ে আনে বাহিনী। গত এপ্রিলে জম্মুর সাতোয়ারি বিমানঘাঁটির একটি টাওয়ারে ধাক্কা লেগে ধ্বংস হয় ওই ইজ়রায়েলি মানববিহীন যান। তাতে গুরুতর আহত হন নায়েক পদমর্যাদার সুরিন্দর পাল নামের এক সেনাকর্মী। সংশ্লিষ্ট ড্রোনটি পরিচালনা করছিল স্থলবাহিনী। এই ঘটনার তদন্তেও প্রযুক্তিগত ত্রুটির দিকটা সামনে এসেছিল।

Advertisement
০৩ ১৮

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, বাহিনীর হাতে থাকা ‘হেরন’ ড্রোনের অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যে। তবে ২০১৭ সালে ‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা’ বা এলএসি (লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল) পেরিয়ে তিব্বতের দিকে চলে যায় একটি ইজ়রায়েলি যান। গ্রাউন্ড কন্ট্রোল স্টেশনের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। ২০২৪ সাল পর্যন্ত দুর্ঘটনায় মোট ১২টি ‘হেরন’ হারায় এ দেশের ফৌজ, যার জন্য মূলত মানব-ত্রুটি এবং ইঞ্জিনের ব্যর্থতাকে দায়ী করা হয়েছে।

০৪ ১৮

সাবেক সেনাকর্তাদের দাবি, বেশ কয়েক বার দুর্ঘটনার মুখে পড়লেও ‘হেরন’-এর সাফল্যের হার ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ। কঠিন ‘অপারেশন’-এ কখনওই ব্যর্থ হয়নি এই ইজ়রায়েলি পাইলটবিহীন যান। উল্টে ওই ধরনের পরিস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অত্যাধুনিক ‘এমকিউ-৯ রিপার’ ড্রোনের মতো পারফরম্যান্স করেছে ইহুদিদের মানববিহীন উড়ুক্কু বিমান। দামের নিরিখে যা আমেরিকার তৈরি যানটির চেয়ে অনেক বেশি সস্তা। আগামী দিনে ‘হেরন’কে ঘরের মাটিতে তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে নয়াদিল্লির।

০৫ ১৮

বিশেষজ্ঞদের কথায়, ‘হেরন মার্ক টু’র ব্যাপক উৎপাদন আত্মঘাতী বা ফার্স্ট পার্সন ভিউ (এফপিভি) ড্রোনের তুলনায় অনেক বেশি। যদিও লড়াকু জেটের নিরিখে ইজ়রায়েলি পাইলটবিহীন যানটি বেশ সস্তা। ফৌজের শীর্ষকর্তারা জানিয়েছেন, ‘হেরন’-এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল একে যুদ্ধবিমানের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যায়। যে কোনও পরিবেশে এবং আবহাওয়ায় দিব্যি মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ইহুদিদের তৈরি এই সামরিক ড্রোনের। গুপ্তচরবৃত্তি এবং হামলা, দু’ধরনের অভিযানেই অংশ নিতে পারে ‘হেরন মার্ক টু’।

০৬ ১৮

গত সেপ্টেম্বরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখা ইজ়রায়েলের থেকে ‘হেরন’ ড্রোনের নতুন সংস্করণ কিনতে চলেছে বলে খবর প্রকাশ্যে আসে। এ বারের পাইলটবিহীন যানগুলি ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র ‘স্পাইক-এনএলওএস’ (নন লাইন অফ সাইট) সজ্জিত থাকবে বলে জানিয়েছে ফৌজ। ‘প্রজেক্ট চিতা’ নামের যৌথ পরিকল্পনায় এগুলিকে তৈরি করতে চাইছে নয়াদিল্লি। নতুন ‘হেরন’ ড্রোনগুলিতে আরও উন্নত গোয়েন্দা নজরদারি সরঞ্জাম থাকবে বলে জানা গিয়েছে।

০৭ ১৮

সূত্রের খবর, জরুরি ভিত্তিতে ‘হেরন মার্ক টু’ কিনতে ইজ়রায়েলের সঙ্গে ৩০০ কোটি টাকার চুক্তি করতে পারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। এতে মোট কতগুলি ড্রোন তিন বাহিনীর বহরে শামিল হবে, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে ইহুদিদের তৈরি পাইলটবিহীন যানটির নতুন যে সংস্করণ আসছে, তার টানা ৩০ ঘণ্টা ওড়ার সক্ষমতা রয়েছে। ঘাঁটি থেকে বহু দূরে গিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার ফুট উপর থেকে ভূপৃষ্ঠের বিস্তীর্ণ এলাকার স্পষ্ট ছবি পাঠাতে পারবে ওই ‘হেরন মার্ক টু’, যার নির্মাণকারী সংস্থা হল ‘ইজ়রায়েলি অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ়’।

০৮ ১৮

ইহুদিদের তৈরি এই ‘হেরন’ হল ‘মাঝারি উচ্চতার দীর্ঘ সহনশীল’ (মিডিয়াম-অল্টিচ্যুড লং ইনডুরেন্স) একটি পাইলটবিহীন যান। গোড়ার দিকে মূলত শত্রু ঘাঁটির হাঁড়ির খবর জোগাড় করতেই এই ড্রোন ব্যবহার করত ইজ়রায়েলি ফৌজ। কিন্তু, পরবর্তী কালে বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রে একে সাজিয়ে তোলে তারা। এক দশকের আগে তেল আভিভের থেকে ‘হেরন-১’ ড্রোন কেনে ভারত। ২০২১ সালে এর আধুনিক ও উন্নত সংস্করণ ‘হেরন টিপি’ এবং ‘হেরন টিপি এক্সপি’ হাতে পায় এ দেশের বাহিনী।

০৯ ১৮

উপগ্রহভিত্তিক দিকনির্দেশিকা প্রযুক্তি এবং একাধিক সেন্সর যুক্ত ‘হেরন’-এ রয়েছে ‘আকাশ থেকে ভূমি’তে হামলাকারী একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র। এতে লেজ়ার নিয়ন্ত্রিত হাতিয়ার বসানোর সুবিধাও রয়েছে। সূত্রের খবর, এর সম্পূর্ণ প্রযুক্তি ভারতকে দিতে পারে ইজ়রায়েল। এ ব্যাপারে দু’তরফে কথাবার্তা বেশ কিছু দূর এগিয়ে গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সংশ্লিষ্ট ড্রোনটির যৌথ উৎপাদনের জন্য নতুন সংস্থা গড়তে পারে দুই দেশ।

১০ ১৮

২০১৬ সালে ‘হেরন’-এর স্থানীয় উৎপাদনের জন্য ইজ়রায়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভারত। কিন্তু, ওই সময় এর প্রযুক্তি হস্তান্তরে রাজি হয়নি পশ্চিম এশিয়ার ইহুদি রাষ্ট্র। ফলে এই নিয়ে দু’তরফে থমকে যায় আলোচনা। ২০২০ সালে এলএসিতে চিনা ফৌজের সঙ্গে গালওয়ান সংঘর্ষের পর এই ইস্যুতে ফের নতুন করে তেল আভিভের সঙ্গে কথা বলা শুরু করে নয়াদিল্লি। এ বার আর খালি হাতে ফিরতে হয়নি প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে।

১১ ১৮

২০২০-তে ‘ইজ়রায়েলি অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করে যুদ্ধবিমান নির্মাণকারী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড’ বা হ্যাল। ওই চুক্তিতে যৌথ ভাবে ১০০টি ‘হেরন টিপি’ ড্রোন তৈরির কথা বলা হয়েছিল। যদিও বাস্তবে তা সম্ভব হয়নি। এর জন্য হ্যালের পরিকাঠামোগত সমস্যাকেই দায়ী করেছেন বিশ্লেষকদের একাংশ।

১২ ১৮

সাবেক সেনাকর্তারা অবশ্য মনে করেন, সংশ্লিষ্ট প্রচেষ্টায় ভারতের কোনও লোকসান হয়নি। কারণ, হ্যালের ব্যর্থতার থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী কালে ইজ়রায়েলি সংস্থা এলবিটের সঙ্গে সমঝোতা করে এ দেশের বেসরকারি প্রতিরক্ষা কোম্পানি আদানি ডিফেন্স। তাদের যৌথ উদ্যোগে তৈরি ড্রোন বর্তমানে বহুল পরিমাণে ব্যবহার করছে নয়াদিল্লির ফৌজ। একই কায়দায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘এমকিউ-৯ রিপার’কে ঘরের মাটিতে তৈরি করতে মার্কিন সংস্থা জেনারেল অ্যাটোমিক্সের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো।

১৩ ১৮

‘দ্য ইউরেশিয়ান টাইমস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘হেরন’-এর চাহিদা বৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্য। গত ৭ মে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে ঢোকে বেশ কয়েকটি ইজ়রায়েলি ড্রোন। পাইলটবিহীন যানগুলি সেখানকার জঙ্গিঘাঁটিগুলির নিখুঁত চিত্র ভারতীয় সেনাকে পাঠাতে থাকে। ফলে ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে সেগুলিকে নিশানা করতে এ দেশের বিমানবাহিনীর তেমন সমস্যা হয়নি।

১৪ ১৮

গত জুনে ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলি ধ্বংস করতে ‘অপারেশন রাইজ়িং লায়ন’ শুরু করে ইজ়রায়েলি বায়ুসেনা। ওই অভিযানে পঞ্চম প্রজন্মের ‘স্টেলথ’ শ্রেণির মার্কিন যুদ্ধবিমান ‘এফ-৩৫ লাইটনিং টু’-র সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ‘হেরন’কেও লড়তে দেখা গিয়েছিল। এর পর যে কোনও ধরনের রেডারকে ফাঁকি দিতে সংশ্লিষ্ট ড্রোনটি যে সিদ্ধহস্ত তা বুঝে নিতে কারও সমস্যা হয়নি।

১৫ ১৮

সম্প্রতি, পশ্চিম এশিয়ার ইহুদিভূমিতে বৈঠকে বসে ‘ভারত-ইজ়রায়েল জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ (জেডব্লিউজি)। সেখানে হাজির ছিলেন নয়াদিল্লির প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশকুমার সিংহ। আলোচনায় অত্যাধুনিক হাতিয়ারের যৌথ উৎপাদনে সম্মত হয় দুই দেশ। এর পরেই সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে নতুন একটি সমঝোতা স্মারক বা এমওইউতে (মেমোরেন্ডাম অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং) সই করে নয়াদিল্লি ও তেল আভিভ, যাতে অস্ত্রের পাশাপাশি কৃত্রিম মেধা বা এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) এবং সাইবার নিরাপত্তার মতো সংবেদনশীল বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে, খবর সূত্রের।

১৬ ১৮

ইজ়রায়েলি গণমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী দিনে উচ্চ প্রযুক্তির ড্রোন, অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের মতো হাতিয়ারগুলির উৎপাদন পুরোপুরি ভাবে ভারতে সরিয়ে আনবে তেল আভিভ। এ দেশের মাটিতে তৈরি হতে পারে ইহুদিদের লাইট মেশিনগান এবং অ্যাসল্ট রাইফেল। অস্ত্রনির্মাণের পাশাপাশি নয়াদিল্লির সঙ্গে যৌথ ভাবে প্রতিরক্ষা গবেষণাতেও অংশ নিতে চাইছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার।

১৭ ১৮

কিন্তু কেন হঠাৎ হাতিয়ার উৎপাদন ভারতে স্থানান্তরিত করতে চাইছে ইজ়রায়েল? প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের দাবি, এর নেপথ্যে রয়েছে একাধিক কারণ। প্রথমত, গত দু’বছর ধরে চলা গাজ়া যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ইরানের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তেল আভিভ। ফলে ইহুদিদের শহরগুলিকে ‘হাইপারসনিক’ ক্ষেপণাস্ত্রে নিশানা করে সাবেক পারস্য দেশের আধা সেনা ‘ইসলামিক রিপাবলিক অফ গার্ড কোর’ বা আইআরজিসি। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে (পড়ুন এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম) কাজে লাগিয়েও যা আটকাতে পারেনি নেতানিয়াহুর ফৌজ।

১৮ ১৮

গত জুনে ১২ দিনের যুদ্ধে তেহরানের ছোড়া ‘হাইপারসনিক’ ক্ষেপণাস্ত্রে তছনছ হয়ে যায় একাধিক ইজ়রায়েলি শহর। সংঘাতে থামলে ইহুদি গুপ্তচরবাহিনী ‘মোসাদ’-এর একাধিক এজেন্টকে ফাঁসিতে ঝোলায় পারস্য উপসাগরের কোলের ওই শিয়া মুলুক। তেল আভিভের আশঙ্কা, আগামী দিনে তাঁদের অস্ত্র কারখানাগুলিকে নিশানা করবে আইআরজিসি। সেই ছক এখন থেকেই কষতে শুরু করেছেন ইরানি সরকার। আর তাই হাতিয়ার উৎপাদন ভারতে স্থানান্তরিত করে নিশ্চিন্ত হতে চাইছে তেল আভিভ।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement