অ্যান্টোনিও সান্টোস নামে এক ব্রাজিলীয় মৎস্যজীবী পেশার খাতিরে ২০১৬ সালের শেষের দিকে সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন ।
সেই সময় নৌকায় থাকা একটি গ্যাসের টিন ফেটে যায়। যাতে অ্যান্টোনিও’র ডান হাতটা পুরো পুড়ে গিয়েছিল।
চিকিৎসকের কাছে গেলে, তিনি তাঁকে নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করার চিন্তা-ভাবনা শুরু করেন। আর তা থেকেই এক নতুন পদ্ধতির আবিষ্কার হল।
ব্রাজিলের ফোর্টালেজ খুবই দরিদ্র এলাকা হিসেবে পরিচিত। এই স্থানের অধিকাংশ বাসিন্দাই দিন আনা, দিন খাওয়া মানুষ। অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনা মাঝে মধ্যেই ঘটে থাকে। এই কথা মাথায় রেখে চিকিৎসক এডমার ম্যাসিয়েল, মার্সেলো বোরগেস এবং তাঁর দল সান্টোসের ক্ষত স্থানে মাছের ছালের প্রলেপ দিয়ে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত নেন। আর শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সফলও হয়ে যান তাঁরা। এরপরেও এই পদ্ধতিতে অনেকের উপরেই চিকিৎসা চালিয়েছেন তাঁরা।
বিকল্প ছাল দিয়ে দগ্ধ অঙ্গ সারিয়ে তোলার প্রথা অনেক আগে থেকেই প্রচলিত। মানুষের চামড়ার পাশাপাশি এই কাজে কৃত্রিম চামড়া ও শুয়োরের ছালও ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু ব্রাজিলের মতো দেশে এই ধরনের সামগ্রীর যা যোগান তাতে দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশ রোগীর চিকিৎসা করা সম্ভব। তবে তেলেপিয়া এমন একটি প্রজাতির মাছ যা মোটামুটি সব জায়গাতেই কম-বেশি পাওয়া যায়। তাই এই মাছের ছাল অতি সহজপ্রাপ্ত।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, দেখা গিয়েছে তেলাপিয়া মাছের ছাল দগ্ধ অংশে ব্যান্ডেজের মতো লাগিয়ে রাখলে ক্ষত খুব তাড়াতাড়ি সেরে ওঠে। যন্ত্রণাও অনেক কম হয়।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তেলাপিয়া মাছের ছালে কোলাজেন প্রোটিনের টাইপ ‘১’ ও টাইপ ‘৩’ রয়েছে। যা থার্ড ডিগ্রি বার্ন কেসও খুব সহজে সারিয়ে তুলতে পারে। ইতিমধ্যেই এই চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছে।