Gina Lollobrigida

ইন্দিরা গান্ধীর ‘বন্ধু’, কাস্ত্রোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, ইটালির ‘যৌনতার প্রতীক’ এসেছিলেন ভারতেও

পাঁচ এবং ছ’য়ের দশকে ইউরোপের বিনোদন পত্রিকাগুলি জিনাকে ‘সুন্দরীশ্রেষ্ঠা’ বলে উল্লেখ করত। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি ছিলেন এক জন দক্ষ নৃত্যশিল্পী। হয়ে উঠেছিলেন গোটা ইউরোপের হৃদ্‌স্পন্দন।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
রোম শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:২৬
Share:
০১ ২০

জিনা লোলোব্রিজিদা। সোমবার প্রয়াত হয়েছেন বর্ষীয়সী এই ইটালীয় অভিনত্রী। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।

০২ ২০

এক সময় শুধু ইটালি নয়, গোটা ইউরোপের হৃদয়ের রানি হয়ে উঠেছিলেন জিনা। তাঁর অভিনয়, ক্যামেরার সামনে শরীরী আবেদন ঝড় তুলত অনুরাগীদের মনে। জিনা রেখে গিয়েছেন প্রায় সাড়ে চার কোটি ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় ৩৬৮ কোটি টাকা) সম্পত্তি।

Advertisement
০৩ ২০

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে ইটালীয় চলচ্চিত্রে জিনার আবির্ভাব যেন এক নতুন যুগের সূচনা করেছিল। তাঁকে কামনার প্রতিমূর্তি হিসাবে বর্ণনা করতে শুরু করে তৎকালীন গণমাধ্যম।

০৪ ২০

তাবড় ইউরোপীয় সংবাদপত্রে জায়গা করে নিয়েছিলেন জিনা। বিনোদনের পৃষ্ঠায় তাঁর একচেটিয়া রাজত্ব কায়েম হয়েছিল সহজেই।

০৫ ২০

পঞ্চাশ এবং ষাটের দশকে ইউরোপের বিনোদন পত্রিকাগুলি জিনাকে ‘সুন্দরীশ্রেষ্ঠা’ বলে উল্লেখ করত। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি ছিলেন এক জন দক্ষ নৃত্যশিল্পী।

০৬ ২০

১৯৫৩ সালে জন হুস্টনের পরিচালনায় প্রথম হলিউডে পা রাখেন জিনা। তাঁর প্রথম ইংরেজি ছবি ‘বিট দ্য ডেভিল’। সেখানে তিনি হামফ্রে বোগার্টের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন।

০৭ ২০

ওই বছরেই আমেরিকায় মুক্তি পায় ইটালীয়-ফ্রেঞ্চ ছবি ‘ফাফান লা টিউলিপে’। সেখানেও অভিনয় করেন জিনা। এর পর ১৯৫৪ সালে ‘টাইম ম্যাগাজিন’-এর কভার পেজে ছাপা হয় তাঁর ছবি।

০৮ ২০

একের পর এক আমেরিকান এবং ইউরোপীয় বড় বাজেটের ছবিতে কাজ করেছেন জিনা। প্রতি ক্ষেত্রেই যৌনতার মায়া ছড়িয়ে দিতেন চলচ্চিত্রের পর্দায়। তা-ই তাঁকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দেয়।

০৯ ২০

জিনা অভিনীত ছবিগুলির মধ্যে রয়েছে, ‘ট্র্যাপিজ়’ (১৯৫৬), ‘কাম সেপ্টেম্বর’ (১৯৬১), ‘বুয়োনা সেরা, মিসেস ক্যাম্পবেল’ (১৯৬৮)-এর মতো জনপ্রিয় কিছু ছবি। ‘কাম সেপ্টেম্বর’ ছবিতে তাঁর কাজ সকলকে মুগ্ধ করেছিল।

১০ ২০

ইউরোপীয় চলচ্চিত্র জগতে জিনা নয়, ‘লোলা’ নামে বেশি পরিচিত তিনি। পর পর সফল ছবিতে অভিনয়ের পরেও কিন্তু তাঁর খ্যাতি দক্ষ অভিনেত্রী হিসাবে নয়।

১১ ২০

ইউরোপ, বিশেষত আমেরিকার বিনোদন জগতে ‘যৌনতার প্রতীক’, ‘যৌন উদ্দীপক নায়িকা’ হিসাবেই প্রচার করা হত জিনার নাম। রূপ আর আবেদনের ঝলকানিতে তাঁর অভিনয় প্রতিভা চাপা পড়ে গিয়েছিল।

১২ ২০

১৯৫৫ সালে ‘লা দোনা পিউ বেলা দেল মন্দো’ (পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী মহিলা) ছবির জন্য জীবনের প্রথম অভিনয় সংক্রান্ত পুরস্কারটি পান জিনা। তাঁকে দেওয়া হয় ‘দাভিদ দে দোনাতেল্লো’, ইটালিতে যা অস্কারের সমান। একই পুরস্কার এর পর আরও দু’বার পান জিনা। এ ছাড়া, বাফতা পুরস্কারের জন্যেও মনোনীত হয়েছিলেন জিনা। ১৯৬১ সালে পেয়েছিলেন ‘গোল্ডেন গ্লোব’।

১৩ ২০

চিত্রগ্রাহক হিসাবেও দক্ষতা ছিল জিনার। অভিনেত্রী এবং নৃত্যশিল্পী হিসাবে কেরিয়ার যখন মধ্যগগনে, তিনি চিত্রসাংবাদিক হিসাবে কাজ শুরু করেন। খ্যাতি আসে তাতেও।

১৪ ২০

কিউবার বামপন্থী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর সাক্ষাৎকার নিয়ে চার দিকে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন জিনা। তার উপর ভিত্তি করে বানিয়েছিলেন ‘রিট্রাটো ডি ফিদেল’ নামের তথ্যচিত্র। ১৯৭৫ সালে বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে তা প্রদর্শিত হয়।

১৫ ২০

জিনার সঙ্গে ভারতের যোগও রয়েছে। সাতের দশকে মুম্বইতে এসেছিলেন তিনি। ‘শালিমার’ ছবির প্রচারের জন্য ভারতে তাঁকে আনা হয়েছিল। ধর্মেন্দ্র, জিনাত আমনদের মতো ভারতীয় তারকাদের কাজ করার কথা ছিল তাঁর। তবে শেষ পর্যন্ত কোনও এক অজ্ঞাত কারণে ছবিটিতে জিনা কাজ করেননি।

১৬ ২০

ভারতীয় অভিনেতা কবির বেদীকে নিজের রোমের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন জিনা। ‘সান্দোকন’ ধারাবাহিকে তাঁর কাজ দেখে মুগ্ধ হন ইউরোপের ‘সুন্দরীশ্রেষ্ঠা’। কবিরের আত্মজীবনীতে সেই সাক্ষাতের বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। কবিরের সঙ্গে গিয়েছিলেন তাঁর প্রেমিকা পরভীন বাবিও।

১৭ ২০

কিন্তু জিনার বাড়ি থেকে না খেয়েই ফিরতে হয় কবিরকে। অভিযোগ, প্রেমিকা পরভীনকে অপমান করেছিলেন জিনা। রাগ করে সেখান থেকে চলে যান পরভীন। বেরিয়ে আসতে হয় কবিরকেও।

১৮ ২০

রাজনীতিতেও এসেছিলেন জিনা। ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ডেমোক্রাট প্রার্থী হিসাবে লডে়ছিলেন ১৯৯৯ সালে। কিন্তু জিততে পারেননি। এর পর ২০২২ সালে ৯৫ বছর বয়সে ইটালির সাধারণ নির্বাচনে নতুন একটি দলের হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। জিততে পারেননি তাতেও।

১৯ ২০

ইটালির সংবাদপত্র ‘কোরিয়ার দেলা সেরা’য় একটি সাক্ষাৎকারে জিনা জানিয়েছিলেন, মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ এবং কর্মপদ্ধতির দ্বারা তিনি অনুপ্রাণিত। ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে দাবি করেন কেউ কেউ।

২০ ২০

১৯৪৯ সালে নিজের চিকিৎসককে বিয়ে করেন জিনা। ১৯৭১ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এর পর ২০০৬ সালে ৭৯ বছর বয়সে তিনি ঘোষণা করেছিলেন স্পেনের এক ৪৫ বছর বয়সি ব্যবসায়ীকে তিনি বিয়ে করতে চলেছেন। পরে অজ্ঞাত কারণে সেই বিয়ে বাতিল করেন।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement