ছোটবেলা থেকে ইচ্ছা ছিল অভিনয় করার। তবুও সলমন খানের সঙ্গে অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। রোজগারের জন্য কফি শপেও কাজ করেছেন তিনি। এই তারকা-কন্যার পরিচয় কী?
আশি থেকে নব্বইয়ের দশকের মধ্যে খলনায়কের চরিত্রের পাশাপাশি কৌতুকাভিনেতার চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকমনে জায়গা করে নিয়েছিলেন শক্তি কপূর। বলিপাড়ায় জনপ্রিয়তা কম ছিল না তাঁর। শক্তি কপূরের কন্যা শ্রদ্ধা কপূরও বর্তমানে বলিউডের খ্যাতনামী অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু তারকা-কন্যা হওয়ার সুবাদে এই জায়গা অর্জন করেননি তিনি।
অভিনয় শুরু করার পর টানা তিন বছর নিজের পরিচিতি তৈরি করতে পারেননি শ্রদ্ধা। তবুও স্বপ্নের প্রতি ভরসা রেখে এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তিন বছর পর কেরিয়ারের তৃতীয় ছবি সাফল্য এনে দেয় অভিনেত্রীকে।
১৯৮৭ সালের ৩ মার্চ মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে জন্ম শ্রদ্ধার। শৈশব থেকেই বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে অভিনয়ে নামতে চাইতেন তিনি। মুম্বই থেকেই স্কুলের পড়াশোনা শেষ করেন তিনি।
উচ্চশিক্ষার জন্য মুম্বই ছেড়ে আমেরিকার বস্টন চলে যান শ্রদ্ধা। পড়াশোনার পাশাপাশি গানবাজনার দিকেও আগ্রহ ছিল তাঁর। বস্টন ইউনিভার্সিটি গিয়ে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শুরু করেন তিনি।
অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল বলে কলেজে পড়াকালীন নাটকেও অংশগ্রহণ করতেন শ্রদ্ধা। বলিপাড়া সূত্রে খবর, শ্রদ্ধা যখন কলেজে থাকাকালীন নাটকে অভিনয় করেছিলেন তখন তাঁর পারফর্ম্যান্স দেখেছিলেন সলমন খান।
কানাঘুষো শোনা যায়, শ্রদ্ধার অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন সলমন। তাঁর সঙ্গে একটি ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন শ্রদ্ধাকে। সেই সময় শ্রদ্ধার বয়স ছিল ১৬ বছর।
কম বয়সে অভিনয়ে নামতে চাননি বলে সলমনের দেওয়া প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছিলেন শ্রদ্ধা। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন যে, রোজগারের জন্য কফি শপেও কাজ করতে হয়েছিল তাঁকে।
সাক্ষাৎকারে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন যে বস্টনে থাকাকালীন হাতখরচ জোগাড় করতে সেখানকার কফি শপে কাজ করেছিলেন তিনি।
২০১০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘তিন পাত্তি’ ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ করেন শ্রদ্ধা। অমিতাভ বচ্চন, আর মাধবন, রাইমা সেনের মতো তারকাদের সঙ্গে এই ছবিতে অভিনয় করেন শ্রদ্ধা। কিন্তু কেরিয়ারের প্রথম ছবি থেকে বিশেষ পরিচিতি পাননি তিনি। যদিও এই ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
‘তিন পাত্তি’ মুক্তির এক বছর পর ২০১১ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘লভ কা দ্য এন্ড’ ছবিটি। এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় শ্রদ্ধাকে। এই ছবিটিও বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। শক্তি-কন্যার পরিচয় বলিপাড়ায় তৈরি হয় না তখনও।
হিন্দি ফিল্মজগতে আত্মপ্রকাশের তিন বছর পর রাতারাতি জনপ্রিয়তার স্বাদ পান শ্রদ্ধা। ২০১৩ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় রোম্যান্টিক ঘরানার ছবি ‘আশিকি ২’। এই ছবিতে অভিনয় করে এক লাফে সাফল্য ছুঁয়ে ফেলেন তিনি।
‘আশিকি ২’ ছবিতে অভিনয়ের পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি শ্রদ্ধাকে। ‘এক ভিলেন’, ‘এবিসিডি ২’, ‘বাঘি’, ‘ওকে জানু’, ‘হাফ গার্লফ্রেন্ড’, ‘হাসিনা পারকার’, ‘বাত্তি গুল মিটার চালু’, ‘স্ত্রী’, ‘স্ট্রিট ডান্সার থ্রিডি’, ‘তু ঝুটি ম্যায় মক্কার’-এর মতো একের পর এক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। দক্ষিণী ফিল্মজগতের অভিনেতা প্রভাসের সঙ্গে জুটি বেঁধে ‘সাহো’ ছবিতেও অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে শ্রদ্ধাকে।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, ‘আশিকি ২’ ছবিতে সহ-অভিনেতা আদিত্য রায় কপূরের সঙ্গে নাকি সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন শ্রদ্ধা। যদিও সম্পর্কের কথা দুই তারকার কেউই স্বীকার করেননি।
আদিত্যের পর শ্রদ্ধার নাম জড়িয়ে পড়ে রোহন শ্রেষ্ঠের সঙ্গে। পেশায় আলোকচিত্রশিল্পী রোহন। কানাঘুষো শোনা যায়, রোহনের সঙ্গে বহু বছর সম্পর্কে ছিলেন অভিনেত্রী। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে নাকি তাঁদের সম্পর্কে উভয় পক্ষ থেকেই ইতি টেনে দেওয়া হয়।
২০২৩ সালের মার্চ মাসে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘তু ঝুটি ম্যায় মক্কার’। এর পর আর কোনও ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায়নি শ্রদ্ধাকে।
বলিপা়ড়ার অন্দরমহলে কানাঘুষো শোনা যায়, ‘তু ঝুটি ম্যায় মক্কার’ ছবির সহ-চিত্রনাট্যনির্মাতা রাহুল মোদীর সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন শ্রদ্ধা। ক্যামেরাশিকারিদের লেন্সে তাঁরা একসঙ্গে ধরা পড়লেও এখনও পর্যন্ত সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করেননি কেউই।