Mian Muhammad Mansha

ভারতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ‘পাকিস্তানের অম্বানী’! ব্যবসা প্রসারের কৌশল খাটাতেই কি স্তুতি?

এ দেশের সঙ্গে মিয়াঁ মহম্মদ মন্‌শার একটি সম্পর্ক রয়েছে। তাঁর পূর্বপুরুষেরা বসবাস করতেন কলকাতায়। তবে তিরিশের দশকে কলকাতা থেকে পঞ্জাবে পাড়ি দেন তাঁরা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৩ ১৩:৩১
Share:
০১ ১৮

অর্থসঙ্কটে জর্জরিত পাকিস্তানের কাছে ভারতের উদাহরণ তুলে ধরেছেন তিনি। পড়শি দেশের সঙ্গে বন্ধন দৃঢ় করার জন্য শাহবাজ় শরিফ সরকারকে অযাচিত ভাবে পরামর্শও দিয়েছেন। কেন এ হেন মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের অধিপতি মিয়াঁ মহম্মদ মন্‌শা?

০২ ১৮

মন্‌শার অন্য পরিচিতিও হয়েছে। পাকিস্তানে তাঁর ব্যবসায়িক প্রতিপত্তির জেরে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের কর্ণধার মুকেশ অম্বানীর সঙ্গে মন‌্‌শার তুলনা টানা হয়।

Advertisement
০৩ ১৮

লোকমুখে ‘পাকিস্তানের অম্বানী’ নামে পরিচিত মন্‌শা। নিজের দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কট নিয়ে আমজনতার মতোই উদ্বিগ্ন তিনি। সম্প্রতি ভারতের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই তা শিরোনামে উঠে এসেছে।

০৪ ১৮

পাকিস্তানের ‘ডন’ পত্রিকার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মন্‌শা বলেছেন, ‘‘বিদেশি সংস্থাগুলি বিনিয়োগের ঝুলি নিয়ে ভারতের দিকে ছুটছে। কারণ, বিনিয়োগকারীদের সুবিধা করে দিতে কড়া আর্থিক সংস্কার করেছে ভারত।’’

০৫ ১৮

বিদেশি ঋণের উপর ভারতের নির্ভরশীলতা প্রায় নেই বলেও মন্তব্য করেছেন মন্‌শা। তাঁর দাবি, ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের অর্থব্যবস্থার কোনও তুলনাই হয় না। ১৯৯১ সাল থেকে পাকিস্তানের পড়শি দেশটি মাত্র এক বারই আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডারের থেকে সাহায্য নিয়েছে। তার পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি ভারতকে।

০৬ ১৮

সাম্প্রতিক কালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সঙ্কট বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার প্রায় নিঃশেষ। মুদ্রাস্ফীতির হার আকাশছোঁয়া। এ আবহে বৈদেশিক বাণিজ্য সচল রাখতে পড়শি দেশগুলির সঙ্গে বিনিময় প্রথা চালু করতে চাইছে পাকিস্তান। অর্থাৎ পণ্যের বিনিময়ে পণ্য। এই হাতিয়ার নিয়ে দেশকে খানিকটা স্বস্তি দিতে চাইছে।

০৭ ১৮

চলতি মাসে বাজেটে পেশ করার সময় পাক অর্থমন্ত্রী ইশাক দারের দাবি, দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধির হার ৩.৫ শতাংশ। তবে বিশ্বব্যাঙ্কের পাল্টা দাবি, এই হার কোনও মতেই ২ শতাংশের বেশি হবে না।

০৮ ১৮

ঋণভারে জর্জরিত হওয়ায় বাজেটের বেশির ভাগ অর্থই ধার মেটাতে ব্যয় হবে বলে দাবি পাক অর্থমন্ত্রীর। পাকিস্তানি মুদ্রায় মোট ১৪.৫ লক্ষ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী দার। তিনি জানিয়েছেন, এর মধ্যে ঋণ মেটাতে ব্যয় করা হবে ৭.৩ লক্ষ কোটি টাকা।

০৯ ১৮

ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের পাশাপাশি সীমান্ত সম্পর্ক উন্নতির দিকেও কি মন দেওয়া উচিত পাকিস্তানের? সংবাদমাধ্যমের এই প্রশ্নের উত্তরেও পাক সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন মন্‌শা।

১০ ১৮

মন্‌‌শার পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘সীমান্ত নিয়ে সমস্যা থাকলেও চিন যদি ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক রাখতে পারে তবে পাকিস্তান কেন তা পারে না?’’ ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য এবং সীমান্ত সম্পর্কের উন্নতির জন্যও পাক সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

১১ ১৮

মন্‌শার এ হেন উক্তির পর তাঁকে নিয়ে নতুন করে কৌতূহল বেড়েছে। এ দেশের সঙ্গে তাঁর একটি সম্পর্ক অবশ্য রয়েছে। তাঁর পূর্বপুরুষেরা বসবাস করতেন কলকাতায়। তবে তিরিশের দশকে কলকাতা থেকে পঞ্জাবে পাড়ি দেন তাঁরা।

১২ ১৮

১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে পাক পঞ্জাবে জন্ম হয়েছিল মন্‌শার। বিভাজনের পর দাঙ্গাবিদীর্ণ কালে নিশান্ত মিলসের হাত ধরে কাপড়ের কারখানা গড়ে তুলেছিলেন তাঁর বাবা-কাকারা। মন্‌শার আমলে সে ব্যবসা আড়েবহরে বেড়েছে। ধীরে ধীরে ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য গড়েছেন তিনি।

১৩ ১৮

আমেরিকার একটি পত্রিকা জানিয়েছে, মন্‌শাই পাকিস্তানের প্রথম ধনকুবের। বাবা-কাকার ব্যবসা ভাগ হলেও কাজে এসেছিল বিদেশি মাটিতে বিজ়নেস ম্যানেজ়মেন্টের শিক্ষা।

১৪ ১৮

ব্রিটেন থেকে স্নাতকের ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন মন্‌শা। এর পর পারিবারিক ব্যবসার হাল ধরেন। নিজের হাতে গড়ে তোলেন নিশান্ত গোষ্ঠী।

১৫ ১৮

পারিবারিক কাপড়ের ব্যবসা থেকে রিটেল ব্যাঙ্কিং, সিমেন্ট, বিদ্যুৎশক্তি, রিয়েল এস্টেট— নানা ক্ষেত্রে পা রেখেছিলেন মন্‌শা। সংবাদমাধ্যমের দাবি, মন্‌শার নিট সম্পত্তির পরিমাণ ৫০০ কোটি ডলারের বেশি।

১৬ ১৮

এমসিবি ব্যাঙ্কের হাত ধরে তাঁর ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যে বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তান ছাড়া, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, বাহরাইন এবং শ্রীলঙ্কা মিলিয়ে ১,৪০০টি শাখা এবং প্রায় দেড় হাজার এটিএম রয়েছে এই ব্যাঙ্কের।

১৭ ১৮

ভারতেও এমসিবি ব্যাঙ্কের শাখা খোলায় আগ্রহী ছিলেন মন্‌শা। ২০১২ সালে ‘দি ইকনমিক টাইমস’-কে তেমনই জানিয়েছিলেন তিনি। সে সময় বলেছিলেন, দিল্লি, মুম্বই এবং অমৃতসরে এমসিবি ব্যাঙ্কের অন্তত ৩টি শাখা খোলা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখছে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তান। যদিও মন্‌শার সে আশা এখনও অপূর্ণ।

১৮ ১৮

তবে কি এ দেশে ব্যবসায়িক প্রসার ঘটাতেই ভারতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন এই ক্ষুরধার ব্যবসায়ী? কারণ ভারত-পাকিস্তানের পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতি হলে আখেরে দু’দেশের ব্যবসায়ীরাও যে লাভবান হবেন!

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement