COVID-19

Covid-19: সবক’টি পর্বের টিকার আগে সংক্রমিত হলে বিএ.১, বিএ.২ রূপও রোখা যাচ্ছে: গবেষণা

সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পর কোভিড টিকার সবকটি পর্ব নেওয়া থাকলে অ্যান্টিবডি কম করে ২০ থেকে ২২ মাস পর্যন্ত রুখে দিতে পারে কোভিডের ফের সংক্রমণ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২২ ১৩:০৯
Share:

টিকার আগে সংক্রমিত হলে নতুন রূপের মোকাবিলা করা সহজ। -ফাইল ছবি।

করোনাভাইরাসের নতুন নতুন রূপে ফের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা অনেক গুণ কমে যায় সবক’টি পর্বের টিকা নেওয়ার আগে কেউ কোভিডে সংক্রমিত হয়ে থাকলে।

Advertisement

সবক’টি পর্বের টিকা মানব শরীরে করোনাভাইরাসকে রোখার জন্য যে অ্যান্টিবডি তৈরি করে, তা ছয় থেকে বড়জোর আট মাস কার্যকরী হয়। এমনকি, বুস্টার টিকার তৈরি করা অ্যান্টিবডির স্থায়িত্বও খুব বেশি দিনের হয় না। কিন্তু সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পর কেউ যদি কোভিড টিকার সব ক’টি পর্ব এমনকি বুস্টার টিকা নেন, তা হলে তাঁর শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি কম করে ২০ থেকে ২২ মাস পর্যন্ত রুখে দিতে পারে কোভিডের ফের সংক্রমণ। সে ক্ষেত্রে, করোনাভাইরাসের নতুন দু’টি উপরূপ বিএ.১ এবং বিএ.২-এর সংক্রমণও রুখে দেওয়া সম্ভব বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই।

ব্রাজিল ও কাতারে আলাদা আলাদা ভাবে চালানো দু’টি বড় মাপের গবেষণা এই খবর দিয়েছে। ব্রাজিলের ফেডারাল ইউনিভার্সিটি অব মাতো গ্রোসো দো সুল-এর বিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসাবিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘দ্য ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজিজেস’-এ। গত ১ এপ্রিল। কাতারের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের যৌথ গবেষণাপত্রটি এখনও প্রকাশিত হয়নি কোনও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকায়। তবে গত ১ এপ্রিল সেটি অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে বিশেষজ্ঞদের মতামত জানার জন্য।

Advertisement

ল্যানসেট জার্নালে যে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে, সেই গবেষণাটি বেশ বড় মাপের। গবেষণা চালানো হয়েছে ২০২০ এবং ২০২১ সালে দু’লক্ষেরও বেশি মানুষের উপর। আর সেই গবেষণা চালানো হয়েছে ব্রাজিলে, কোভিডে মৃতের সংখ্যায় যে দেশটি তালিকায় দ্বিতীয়।

ব্রাজিলে চালানো এই গবেষণাটি জানিয়েছে, আগে যাঁদের কোভিড হয়েছে, সেরে ওঠার পর তাঁরা ফাইজার ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা-র (ভারতে যা ‘কোভিশিল্ড’ নামে পরিচিত) সবক’টি পর্বের টিকা নিলে ফের সংক্রমণের শিকার তাঁদের সে ভাবে হতে হয়নি। তাঁরা যদি সংক্রমিত হয়েও থাকেন, পরে তা হলেও তাঁদের মৃত্যু তো দূরের কথা, হাসপাতালেও ভর্তি করাতে হয়নি। আগের সংক্রমণ ও পরে ওই দু’টি টিকার সব ক’টি পর্ব মানবশরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে ফের সংক্রমণ রোখার ক্ষেত্রে তা ৯০ শতাংশ সফল হয়েছে। চিনের বানানো ‘করোনাভ্যাক’ টিকার ক্ষেত্রে সেই সাফল্যের হার ৮১ শতাংশ। আর একটি পর্বের জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার ক্ষেত্রে ৫৮ শতাংশ।

গবেষকরা একেই বলছেন ‘হাইব্রিড ইমিউনিটি’। অ্যান্টিবডি প্রাথমিক ভাবে তৈরি হয়েছে আগের সংক্রমণের জন্য। তার পর অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে সব ক’টি পর্বের ওই চারটি টিকা নেওয়ার জন্য।

গবেষকরা দেখেছেন, এই হাইব্রিড ইমিউনিটি-ই করোনাভাইরাসের নতুন নতুন রূপের স‌ংক্রমণ রুখতে সবচেয়ে সেরা উপায়। সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হয়েছে। তা পরবর্তী সংক্রমণ ২০ থেকে ২২ মাস পর্যন্ত রুখে দিতে পারছে আগে কেউ সংক্রমিত হলে। ফের সংক্রমণের আশঙ্কা আরও ৬৬ শতাংশ কমছে সব ক’টি পর্বের টিকা নেওয়া থাকলে। গবেষণাপত্রটির উপর মন্তব্য করতে গিয়ে একই কথা বলেছেন ভারতের ‘ট্রান্সলেশনাল হেল্থ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট’-এর অধ্যাপক প্রমোদকুমার গর্গ।

আর কাতারের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণা জানিয়েছে, এই হাইব্রিড ইমিউনিটি পরে করোনাভাইরাসের দু’টি উপরূপ বিএ.১ এবং বিএ.২-এর সংক্রমণও ৭৭ শতাংশ রুখে দিতে পারছে। শুধু টিকা নিলে যার হার হচ্ছে ৫২ শতাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন