sleep

ধীরে ধীরে নয়, ঘুম আসে অকস্মাৎ! তখন কী করে মস্তিষ্ক, পরীক্ষা করে জানালেন বিজ্ঞানীরা

মস্তিষ্ক নিষ্ক্রিয় হতে থাকলেই কিন্তু ঘুম চলে আসে না। এর নেপথ্যে রয়েছে কিছু নিউরোন, যাকে নিউক্লেই বলা হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:০০
Share:

কী ভাবে, কখন নেমে আসে ঘুম, গবেষণা করে দেখলেন বিজ্ঞানীরা। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

ধীরে ধীরে নয় ঘুমের দেশে প্রবেশ নাকি আচম্বিতে! ঠিক কখন ঘুমিয়ে পড়ে আমাদের মস্তিষ্ক? কখন কাজ করা বন্ধ করে দেয় সে? সেই নির্দিষ্ট মুহূর্তটার সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। মনে করা হচ্ছে, ঘুম নিয়ে যাঁরা সমস্যায় ভোগেন, এ বার চিকিৎসায় তাঁদের সুরাহা মিলতে পারে। গাড়ি চালানোর সময় চালক আচমকাই ঘুমিয়ে পড়েন। তার কারণে দুর্ঘটনা হয়েছে, এমন বহু ঘটনার কথা শোনা যায়। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, সেই বিষয়েও নতুন তথ্য দিতে পারবে নতুন গবেষণা।

Advertisement

চলতি ধারণা ছিল, মানুষ ধীরে ধীরে ঘুমিয়ে পড়ে। ধীর গতিতে হয় সেই ‘রূপান্তর’। স্নায়ুবিজ্ঞানী নির গ্রসম্যান বলছেন, মানুষ ঘুমিয়ে পড়ে আচমকাই। জাগ্রত অবস্থা থেকে ঘুমের দেশে প্রবেশ করে এক মুহূর্তে। অনেকটা প্রাচীর থেকে পড়ে যাওয়ার মতো। বিজ্ঞানীরা এই ঘুমের মুহূর্তটা ধরার জন্য ইইজি পর্যবেক্ষণের সাহায্য নিয়েছেন। তাঁরা দেখেছেন, একটা বিন্দুতে পৌঁছে মস্তিষ্কের সক্রিয়তা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। তার পরেই ঘুমিয়ে পড়েন মানুষ।

বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, ঘুমের ঘোর ধীরে ধীরেই ঘনিয়ে আসে। মস্তিষ্কের সক্রিয়তা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। তার পরেই মানুষ ঢলে পড়ে ঘুমে। কিন্তু গ্রসম্যান এবং তাঁর সহকারীরা দেখেছেন, এই ঘুমে ঢলে পড়ার মুহূর্তটি বেশ ‘নাটকীয়’। তাঁরা যে ইইজি করিয়েছিলেন, তার তথ্য বলছে, মস্তিষ্ক হঠাৎই কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তার পরের মূহূর্তেই ঘুমিয়ে পড়ে মানুষ। ‘নেচার নিউরোসায়েন্স’ পত্রিকায় বিজ্ঞানীদের সেই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। তাতে গ্রসম্যান বলেন, ‘‘সুস্থিত জাগ্রত অবস্থা থেকে সুস্থিত ঘুম— এই বিশেষ অবস্থাতে সূচিত করে শুধু একটি বিন্দু।’’

Advertisement

কাজের চাপে বা অবসাদের কারণে অনেকেরই ঘুম আসে না। ঘুমের সমস্যা হয়। এর প্রভাব পড়ে মানুষের শরীরে। ঠিক কোন মুহূর্তে মানুষ ঘুমিয়ে পড়ে, এখন তা জেনেছেন বিজ্ঞানীরা। মনে করা হচ্ছে, এর ফলে যাঁদের ঘুম আসে না, নিয়মিত ওষুধ খেয়ে ঘুমাতে হয়, তাঁদের চিকিৎসা সম্ভব হবে। কাজের মাঝে অনেকে আবার ঘুমিয়ে পড়েন আচমকা। এ বার সেই কাজ যদি জাতীয় সড়কে গাড়ি চালানো বা কোনও যন্ত্র চালানো হয়, তা হলে ঝুঁকি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। নতুন এই গবেষণায় সেই সমস্যারও সমাধান হতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীদের একাংশ।

মস্তিষ্ক নিষ্ক্রিয় হতে থাকলেই কিন্তু ঘুম চলে আসে না। এর নেপথ্যে রয়েছে কিছু নিউরোন, যাকে নিউক্লেই বলা হয়। কিছু নিউক্লেই জাগিয়ে রাখে। কিছু আবার ঘুম পাড়াতে সাহায্য করে। মস্তিষ্ক যখন জাগ্রত অবস্থা থেকে ঘুমের মধ্যে প্রবেশ করে, তখন কিছু নিউক্লেই বন্ধ হয়ে যায়। আর সে কারণেই কাজ বন্ধ করে দেয় মস্তিষ্ক।

বিজ্ঞানীরা আরও একটি বিষয় দেখেছেন। মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল কর্টেক্স আগে ঘুমের দেশে প্রবেশ করে। এই ফ্রন্টাল কর্টেক্স ভাবনাচিন্তা, স্মরণ করা, আবেগ তৈরির জন্য দায়ী। মস্তিষ্কের অসিপিটাল কর্টেক্স তার পরে ঘুমের দেশে প্রবেশ করে। এই অসিপিটাল কর্টেক্স চাক্ষুষ বিষয়ে তথ্য দেয় মস্তিষ্ককে। বিজ্ঞানীরা এর থেকেই ধারণা পেয়েছেন, কেন কিছু মানুষের চোখে ঘুম আসতে বেশি সময় লাগে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement