অবশেষে ডুলুং ও সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে দলমার হাতির পাল ওড়িশার অভিমুখে রওনা দিল। সঙ্গে গোটা পনেরো শাবক থাকায় খুবই ধীর গতিতে হাটছে হাতির পালটি। বন দফতর সূত্রের খবর, বুধবার সন্ধ্যায় প্রায় ১০০ হাতির দলটি পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রাম ব্লকের কাশিয়ার জঙ্গল হয়ে চিরাচরিত বনপথ ধরে ওড়িশা সীমান্তের দিকে এগিয়ে চলেছে।
দিন সাতেক আগে মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়ায় কংসাবতী নদী পেরিয়ে দু’টি দলে ভাগ হয়ে একশোটি হাতি খড়্গপুর বন বিভাগের অন্তর্গত ঝাড়গ্রামের শঙ্করবনি জঙ্গলে এসে ঘাঁটি গেড়েছিল। সন্ধ্যে হলেই হাতিরা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে একাধিক দলে ভাগ হয়ে আশেপাশের লোকালয়ে হানা দিচ্ছিল।
অবশেষে মঙ্গলবার রাতে হাতির দলটি শঙ্করবনির জঙ্গল থেকে বেরিয়ে সাঁকরাইল ব্লকের হাঁড়িভাঙা, ডাহিচক, রোহিণী এলাকা হয়ে ডুলুং নদী পেরিয়ে গড়ধরা এলাকায় এসে পৌঁছয়। এরপর গড়ধরা ঘাটে ধীরেসুস্থে সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে নয়াগ্রাম ব্লকের চাঁদাবিলার জঙ্গলে ঢুকে পড়ে হাতিগুলি। বুধবার দিনভর হাতিগুলি চাঁদাবিলা ও পাতিনার জঙ্গলে ছিল। বুধবার সন্ধ্যে হতেই হাতিরা পাঁচটি দলে ভাগ হয়ে কাশিয়া ও কাদোকোঠার জঙ্গল হয়ে ওড়িশা সীমান্তের দিকে এগোচ্ছে বলে বন দফতর সূত্রের খবর।
গত বছর ওড়িশার বন দফতর দলমার হাতির পালকে এলাকায় ঢুকতে না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হাতিরা নয়াগ্রামে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি চালিয়েছিল। হাতির হামলায় গত বছর নয়াগ্রামে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সমস্যা মেটাতে গত মে মাসে কেন্দ্রীয় বন মন্ত্রকের হস্তক্ষেপে ওড়িশায় দুই রাজ্যের শীর্ষ বনকর্তাদের বৈঠক হওয়ার পরে সিদ্ধান্ত হয়, হাতির স্বাভাবিক গতিপথে বাধা দেওয়া হবে না। কিন্তু এবারও হাতির পালটি ওড়িশায় যেতে বাধা গিয়ে বাধা পেলে নয়াগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় ফসল ও সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। সব মিলিয়ে ভীষণই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন নয়াগ্রাম ব্লকের বাসিন্দারা।
খড়্গপুরের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “দলমার পরিযায়ী হাতির পালটি চিরাচরিত চেনা পথে ওড়িশার দিকে যেতে চাইছে। ওদের স্বাভাবিক গতি পথে বাধা দিলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ওড়িশা-নয়াগ্রাম সীমান্তে হাতিদের যাত্রাপথে যাতে বাধা দেওয়া না হয়, সেজন্য আমরা ওড়িশা বন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।”