Women News

কৈশোরে ধর্ষণ, পাচার হয়ে যাওয়ার পরও জীবন থেকে পালাননি নীলু

সোশ্যাল মিডিয়া মানে কি শুধুই সেলফি, ফোটোগ্রাফি কম্পিটিশন আর পারসোনাল ব্লগ?

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৭ ১৩:৫৩
Share:

সোশ্যাল মিডিয়া মানে কি শুধুই সেলফি, ফোটোগ্রাফি কম্পিটিশন আর পারসোনাল ব্লগ?

Advertisement

তাদেরও তো কিছু বলার থাকে যারা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে অনেক যোজন দূরে! তেমনই এক জনের গল্প সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে আনল ‘দ্য হিউম্যানস অব বম্বে’।

নীলু। ছোটবেলায় বাপ-মা মরা অভাগী এই মেয়ে বড় হয়েছে নেপালের এক মন্দিরে। সময়ের নিয়মেই এক সময় বয়ঃসন্ধি এসেছে জীবনে। এবং স্বাভাবিক ভাবেই সমাজের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি সে।

Advertisement

১৫ বছর বয়সে মা হয় ধর্ষিতা নীলু। নিজেকে সামলে নেওয়ার আগেই বারে বারে বদলে গিয়েছে জীবন। কিন্তু, শেষ হয়নি সমস্যা। ভাগ্যের পরিহাস আর লড়াইকেই যখন জীবন ভেবে নিয়েছিল নীলু সেই সময়ই নেমে আসে কালো ছায়া। তার নিজের কথায়, ‘‘এক দিন আমি রান্না করছিলাম। সেই সময় হঠাত্ই ‘সে’ এসে আমাকে বলে আমি যদি তার সঙ্গে যাই তা হলে ভারতে তার বোনের বাড়িতে কাজ দেবে। টাকা পয়সার কোনও চিন্তা থাকবে না। তাকে বিশ্বাস করে পুনে পৌঁছনোর পরই বুঝতে পারি আমি কারও বাড়িতে কাজ করতে আসিনি। যেই বোনের বাড়ির কথা সে বলেছিল তিনি আসলে একটি গণিকালয় চালাতেন। সেখানেই একদিন ১ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়ে যাই আমি। এর পর থেকে শুরু হয়ে যায় ছকে বাঁধা সেই জীবন। রাজি না হলেই জুটত লাঠি দিয়ে মার, চ়়ড়, থাপ্পড়। মুম্বই আসার পর থেকে বুঝে গিয়েছিলাম মেয়েকে বড় করে তুলতে গেলে এই কাজই আমাকে করতে হবে। তাই যেই কাজকে এক সময় ঘেন্না করতাম সেটাকেই সম্মান দিতে শুরু করলাম। কাজের সময় মেয়েকে দেখভালের জন্য এক মহিলাকে মাসে ৪০০০ টাকা দিতাম। কিন্তু আমার অজান্তেই এই সময়ের মধ্যে শরীরে বাসা বেঁধেছিল যক্ষ্মা ও এইচআইভি।’’

আরও পড়ুন: ৭০তম জন্মদিন পালন, ৭ দিনে ৭টি মহাদেশের ৭টি ম্যারাথনে দৌড়লেন ইনি!

টানা ৯ বছর যৌনকর্মীর পেশা, অ্যালকোহলের নেশা, এইচআইভি সংক্রমণে জর্জরিত নীলু যখন বাঁচার শেষ রসদটুকুর আশায় অন্ধকারে হাতড়াচ্ছেন, সেই সময়ই তার পাশে এসে দাঁড়ায় হিউম্যানস অব বম্বে ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পূর্ণতা। নীলুর মতো মেয়েদের জীবনের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনাই লক্ষ্য পূর্ণতার। তাদের হাত ধরেই জীবনের মূলস্রোতে ফিরেছেন নীলুও। কোথায় পেলেন লড়াই করার এই অদম্য শক্তি? ‘‘আমি একজন মা…শুধু এই সত্যিটাই বোধহয় আমাকে এতগুলো বছর ধরে লড়াই করার শক্তি জুগিয়েছে… না হলে অনেক আগেই হয়তো হাল ছেড়ে দিতাম। কিন্তু আমি হার মানবো না… যে লোকগুলো রাতের পর রাত আমাকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে তাদেরকে কিছুতেই জিততে দেবো না… আমি লড়বই…’’ গলা ভিজে এলেও বলে চলেন নীলু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন